>হ্যালো...
>> কি করো?
> এইতো অফিসের কাজ করি।
>>কি কাজ করো?
> তুমি ওসব বুঝবে না। ফোন করেছ...সব ঠিক আছেতো?
>> কেন? আমি ফোন করাতে তোমার কি খুব ডিস্টার্ব হয়েছে?
> ডিস্টার্ব হবে কেন?
>> তাহলে বললে যে? নাকি তোমার সুন্দরী সেক্রেটারী সাথে প্রেমের ব্যঘ্যাত ঘটালাম?
> কি বলছ তুমি এসব!!
>> ঠিকই বলছি। আমি সব বুঝি। এখন আমাকে আর তোমার ভাল লাগে না। তাইনা?
> দেখো তুমি ভুল বলছ। বাসায় এসে তোমার সাথে এ ব্যাপারে কথা বলব। ঠিক আছে?
>> কথা বলতে হবে না। তুমি থাক তোমার অফিস নিয়ে...
খট করে ফোন কেটে দিল। মনটাই খারাপ হয়ে গেল। এমনিতেই কোম্পানির অবস্থা ভাল না। মনদিয়ে সবকিছু দেখাশোনা করা দরকার। পারি না। হয় না। একটার পর একটা পারিবারিক ঝামেলা এমনভাবে ঝেকে বসছে যে, অফিসের কাজ মনযোগ দেয়াই মুশকিল।
"ঠক, ঠিক"
"ইয়েস, কাম ইন।"
"স্যার, করমা প্লাস্টিকের এর মালিকের সাথে আপনি যোগাযোগ করতে বলেছিলেন। উনার সেক্রেটারির সাথে কথা বলেছি। উনি আজকে ফ্রি নেই। কাল সকালে সিঙ্গাপুর যাবেন, ফিরতে রাত হবে। আগামী পরশু সকাল এগারোটায় এপয়েন্টমেন্ট করেছি।"
"গুড। আর কিছু?"
"জ্বী না স্যার।"
"ঠিক আছে যাও।"
ইমা দরজার কাছে যেয়েই আবার ফিরে তাকাল।
"স্যার, আজকে আপনাকে একটু বিমর্ষ মনে হল। শরীর খারাপ?"
কড়া কথা বলতে যেয়েও সামলে নিলাম। মেয়েটা এমনিতে কাজকর্মে পটু। অফিসের সবাই ওকে পছন্দ করে। কারো সাথে হাসিমুখে ছাড়া কথা বলে না।
"না, শরীর ঠিকই আছে। তুমি যাও।"
ইমা বেড়িয়ে গেল। আমি চেয়ারে হেলান দিয়ে ভবিষ্যত নিয়ে ভাবতে লাগলাম। রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হবার পর অনেক কিছু হাতের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। মোটা অংকের টাকা আটকে গেছে। আদৌ পাওয়া যায় কিনা সন্দেহ। নতুন কাজও পাওয়া যাচ্ছে না। টেন্ডার ড্রপ করতে গেলেই নানামুখী বাধার শিকার হতে হচ্ছে।
কম্প্রোমাইজ করে চলতে পারলে ভাল হত। কিন্তু সবার জন্য কম্প্রোমাইজ করা সহজ নয়। দরকার হলে কোম্পানি বন্ধ করে দেব তারপরও কম্প্রোমাইজ নয়।
"ঠক ঠক।"
"ইয়েস।"
"স্যার, আপনার একজন গেস্ট এসেছেন।" বলেই ইমা মুচকি হাসল।
"আমার গেস্ট?!!" কিছুটা অবাকই হলাম। এই সময় আবার কে আসবে?
"জ্বী স্যার।"
"বসতে বল। আমি আসছি।"
"ওকে স্যার।"
কে হতে পারে? দেশের বাড়ী থেকে কেউ? কিন্তু তারাতো আমার অফিসের ঠিকানা জানে না। দেশের বাড়ী থেকে আসলে বাসায় আসবে।
ভাবতে ভাবতে আমি লবিতে ঢুকেই থমকে গেলাম।
"নিশা তুমি?!!"
"কেন আমি এসে কি তোমার প্রেমে বিঘ্ন ঘটালাম?"
আমি হতাশ বোধ করলাম। আর কিছু জিজ্ঞেস করলাম না। নিশার চোখদুটো লাল হয়ে আছে। কেঁদেছে বোধহয়।
"তুমি এসেছো আমি খুব খুশি হয়েছি। এসো রুমে এসো।"
ও আগে কখনো আমার অফিসে আসে নি। ঘাড় ঘুড়িয়ে এদিক সেদিক দেখছে। অফিসের সবাইও ওকে দেখছে।
আমার ডেস্কে এসে আমি আর ও মুখোমুখি বসলাম।
"কিছু খাবে?"
"চা খেতে পারি।"
আমি বেল চাপতেই বাদশাহ মিয়া হাজির হয়ে গেল। আমি দু'কাপ চায়ের কথা বলতেই মাথা ঝাকিয়ে নিঃশব্দে চলে গেল।
"তোমার অফিসটাতো খুব সুন্দর।"
"তাই? তোমার ভাল লেগেছে?"
"হুম্ম...শুধু একটা জিনিস ভাল না।"
"কি জিনিস?"
"তোমার সেক্রেটারী!"
"মানে?"
"মানে কিছু না। ওকে বিদেয় কর।"
"কেন? ও কি তোমার সাথে খারাপ ব্যবহার করেছে।"
"এত কিছু জানি না আমি। আমি বলেছি বিদায় করতে, বিদায় করতে হবে।"
এই সময় চা নিয়ে বাদশাহ্ মিয়া প্রবেশ করাতে আমি হাপ ছেড়ে বাচলাম। বাদশাহ্ মিয়ার চা সচরাচর ভাল না লাগলেও আজকে বেশ ভাল লাগল। আমরা চুপচাপ চা পান করতে লাগলাম।
"তুমি আজকে প্রথম আমার অফিসে এলে। চল সবকিছু তোমাকে ঘুরিয়ে দেখাই। সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেই।"
"আচ্ছা।"
চা শেষ করে আমরা উঠলাম। একে একে নিশার সাথে সবার পরিচয় করিয়ে দিলাম। ও সবার সাথেই হাসিমুখে কথা বলল। এটা ওটা জিজ্ঞেস করল।
শুধু ইমার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার সময় ওর মুখ কঠিন হয়ে গেল। বিষদৃষ্টিতে ইমাকে দেখতে লাগল। ইমা অসহায়ভাবে আমার দিকে তাকাল। আমি বিষয়টা বুঝতে পেরে তাড়াতাড়ি নিশার হাত ধরে টেনে অন্যদিকে নিয়ে এলাম।
আজকে আমার আর অফিস করা হবে না। মন বসবে না। বিষয়টা নিশাকে বলতেই ও আনন্দে ঝলমল করে উঠল।
"চল বাসায় চলে যাই।"
"আচ্ছা। তুমি একটু বস। আমি ম্যানেজারের সাথে কথা বলে আসছি।"
আমি ম্যানেজারের সাথে দু'মিনিট কথা বলে আজকের দিনের কিছু টুকিটাকি কাজ করে ফেলতে বললাম। তারপর নিশাকে নিয়ে বাইরে বেরিয়ে এলাম। আসার সময় ভুলেও ইমার দিকে তাকাইনি।
গাড়িতে উঠে বসলাম। আমি ওর হাতটা ধরলাম। ও আমার কাধে মাথাটা হেলান দিল। একটু পরে অবাক হয়ে খেয়াল করলাম নিশা ঘুমিয়ে পড়েছে। আমি আলতো করে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিলাম।
নিশা আগে এমন ছিল না। আর দশটা স্বাভাবিক মেয়ের মতই ছিল। হাসিখুশি-উচ্ছল। কি সোনালী দিন ছিল ঐগুলো। আমাকে একটুও সন্দেহ করত না। যেমনটা এখন করে।
সুহান এসেই ওর জীবনটা এলোমেলো করে দিল। আসলে বলা উচিত সুহানে চলে যাওয়াতেই ও এমন হয়ে গেল।
আমাদের ছেলে। একমাত্র ছেলে। আচ্ছা ওকে কি ছেলে বলা যাবে? সুহানতো কোনদিন আমাদের মুখে এতটুকু হাসি ফোটাতে পারে নি। আমাদের জীবনে অপরিসীম, দুর্বোধ্য কষ্ট নিয়ে এসেছে। আমাদের কাঁদিয়ে গিয়েছে। আমাদের বুক ভেঙে হারিয়ে গিয়েছে।
হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের বাইরে আমার অস্থির পদচারনা অন্যান্যদেরকেও ছুয়ে যাচ্ছিল। কেউ কেউ এসে আমাকে শান্ত হতে বলছিলেন। আমি শান্ত হবার যথাসাধ্য চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছিলাম। অজানা আশংকা, উৎকন্ঠা আমাকে শান্ত হতে বাধা দিচ্ছিল। পরিশেষে একজন নার্স এসে আমাকে ভিতরে ঢুকতে ইঙ্গিত করতেই আমি ভিতরে ঢুকে গেলাম।
ভিতরে ঢুকে দেখি ও ঘুমিয়ে আছে। হাসপাতালের সাদা চাদরে ওর শরীর ঢাকা। ওর কপালে, গলার খাজের বিন্দু বিন্দু ঘাম আমার নজর এড়াল না। আমি নার্সের দিকে সপ্রশ্ন দৃষ্টিতে তাকাতেই নার্স বলে উঠল,
"আপনার স্ত্রী সুস্থ আছেন।"
"আমার ছেলে কোথায়?"
নার্স এবার আমাকে টেনে বেডের অপর পাশে নিয়ে গেল। মেঝের দিকে চোখ পড়তেই আমি বরফ হয়ে গেলাম। মেঝেতে তোয়ালের উপর একটি ছেলে শিশু ঘুমিয়ে আছে। একেবারে ওর মার মত। নিথর, একটুও নড়ছে না। হঠাৎ খেয়াল হল আমার দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসছে। চোখ পিটপিট করে দৃষ্টি পরিষ্কার করতে চাইলাম। হল না, আরো ঘোলা হয়ে উঠল সবকিছু।
আমার কাধে কারো হাত পড়ল।
"মিঃ খান! আপনি ঠিক আছেন তো?"
আমি ঘাড় ঘুরিয়ে তাকালাম। দায়িত্বপ্রাপ্ত ডাক্তার আমার পাশে এসে দাড়িয়েছেন।
"আই এম সরি মিঃ খান। আমাদের কিছুই করার ছিল না।"
আমি মাথা ঝাকিয়ে স্থানুর মত দাড়িয়ে রইলাম। কি বলব, কি করব-কিছুই বুঝতে পারছিলাম না।
"নার্স ওকে নিয়ে যাও।"-ডাক্তারের কথা শুনে নার্স বাচ্চাটাকে তোয়ালে জড়িয়ে বেরিয়ে গেল।
জ্ঞান ফিরলে কাজলকে সামলানো কঠিন হয়ে উঠল। চিৎকার করে হাত-পা ছুড়াছুড়ি করতে লাগল। কর্তব্যরত নার্সরা ওকে ধরে রাখতে পারছিল না। কয়েকজন ওর চড়, ঘুসিতে বিপর্যস্থ হয়ে গেল। শেষ পর্যন্ত আমি ওকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম। এই ফাঁকে দু'জন নার্স ওর বাহুতে ঘুমের ইঞ্জেকশন দিলে আস্তে আস্তে কাজল আমরা বাহুর মধ্যে নিস্তেজ হয়ে গেল।
কাজল আর আমার মধ্যে বয়সের পার্থক্যটা কিছুটা বেশি। আমি দীর্ঘকাল বিদেশে ছিলাম। সময়মত বিয়ে করতে পারি নি। তবে এত কমবয়সী কোন মেয়েকে বিয়ে করার ইচ্ছে ছিল না। কিন্তু কাজলকে দেখার পর কেমন জানি সবকিছু এলোমেলো হয়ে গেল। ও যে খুব সুন্দরী এমন নয়। হালকা গড়ন, চেহাড়াটা শ্যামলা। শ্যামলা হলেও ওর চেহাড়া থেকে কেমন যেন একটা আভা বের হচ্ছিল। জীবনে বহু জায়গায় গিয়েছি। নানান ধরনের ছেলেমেয়েদের সাথে মিশেছি। কিন্তু এমন কখনো দেখিনি। অবাক করা এক মুগ্ধতা আমার মধ্যে কাজ করছিল। হয়ত এমন একটা মেয়েই মনে মনে খুজছিলাম তাই অন্যকোন মেয়েকে হৃদয়ে স্থান দিতে পারিনি।
বিয়ের পর আমার বিদেশ যাওয়া হয়নি। বিদেশ যাবার কথা শুনলেই কাজল ছলছল চোখে তাকাত। ওর এই দৃষ্টি উপেক্ষা করা আমার জন্য অসম্ভব হয়ে উঠে। বহুকাল বিদেশ ছিলাম। আর যেতে ইচ্ছে করল না। দেশেই কিছু একটা করার চেষ্টা করলাম। বাবা-মার সাথে আলোচনা করাতে তারাও তেমন একটা জোর করলেন না। বরং মনে হল খুশিই হলেন।
বিয়ের পাঁচ মাসের মাথায় আমি আমাদের ঘরে নতুন অতিথি আসার কথা শুনি মার কাছে। আমার যে কেমন লাগছিল কিভাবে বোঝাব? সারা শরীরে এক অদ্ভূত শিহরন জাগছিল। আমি বয়সের কথা ভুলে একদৌড়ে কাজলের কাছে চলে এলাম। আমাকে দেখে কাজল লজ্জায় মুখ লুকিয়ে মুচকি মুচকি হাসতে লাগল। আমি দৌড়ে গিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরলাম।
ধীরে ধীরে সুহান ওর মার জঠরে বড় হতে লাগল। সাথে সাথে বড় হতে লাগল আমাদের স্বপ্ন। আমি টুকটাক খেলনা কিনতে লাগলাম। মা ছোট ছোট কাঁথা সেলাই করতে লাগলেন। বাবা প্রতি ওয়াক্তে দু'রাকাত নফল নামায পড়তে লাগলেন। মাঝে মাঝে আমরা রাতে শুয়ে শুয়ে নাম নিয়ে ঝগড়া লেগে যেতাম। কি নাম রাখব? আমি যদিও জানতাম যে, কাজল যেটা রাখবে সেটাই হবে তবুও ওকে খোঁচানোর জন্য আলতু ফালতু নাম বলতাম। আর ও রেগে কাই হয়ে যেত। শেষপর্যন্ত ঠিক হল ছেলে হলে নাম রাখা হবে সুহান আর মেয়ে হলে মাহি।
এসময় আমাদের বাসায় আত্নীয় স্বজনদের আনাগোনা চলতে থাকে। সবাই কাজলের জন্য অনেক অনেক দোয়া করে যান। আমি হাতে টাকাপয়সা জমাতে শুরু করলাম। কখন কি লাগে! অফিসে শেষ অযথা এদিক-সেদিক ঘুরোঘুরি, আড্ডাবাজি বন্ধ করে বাসায় চলে আসতাম। প্রায়ই চেষ্টা করতাম সব কাজ শেষ করে আগেই বেরিয়ে যেতে। আগে তেমন একটা ছুটি নিতাম না। এখন একটা-দুটো করে ছুটি কাটাতে শুরু করলাম। অফিসের কাজের গতি বাড়াতে, ছুটি নিয়ে বস ঝামেলা করতেন না।
আটমাসের সময় আল্ট্রাসনোগ্রাম করার পরে বোঝা গেল ছেলে সন্তানই। সবাই খুব খুশি। কাজলের কষ্ট দিন দিন বাড়তে লাগল। খাওয়ায় রুচি নেই। প্রায়ই শরীর জ্বালাপোড়া করে।রাতে ঘুমুতে পারে না। আমিও জেগে থাকি সারারাত। আর অফিসে বসে দিনে ঝিমাই। একটু থেকে একটু কিছু হলেই আমি ডাক্তারকে ফোন করে জানাই। উনি আমার ফোনে বিরক্ত হন না। হাসিমুখে জানান এসময় এগুলো হতেই পারে। আমরা ধৈর্য্য ধরে থাকি। আর কয়েকটাদিনইতো।
অপারেশন থিয়েটারে প্রবেশকরানোর সময় কাজল আমার হাতটা শক্ত করে ধরে রেখেছিল। নার্স জোর করে হাত ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। কাজলের কান্নাভেজা যন্ত্রণাকাতর মুখখানা আমি এক পলকের জন্য দেখতে পেলাম। ভাবছিলাম সন্তানের মুখ দেখে তার সব যন্তণার অবসান ঘটবে। মুখে হাসি ফুটবে।
এখন আমি কাজলকে কি স্বান্তনা দেব? কিভাবে তার মুখে হাসি ফুটবে? কাজলকে জড়িয়ে ধরে ভাবছি আর কাঁদছি। আমার বুকটা ভেঙে যাচ্ছে।
মৃত সন্তান প্রসবের ব্যাপারতা কাজল স্বাভাবিকভাবে নিতে পারল না। দুনিয়ার কোন মা মেনে পারত কিনা জানি না। ওর দুনিয়া উলট পালট হয়ে গেল। সারাদিন চুপ চাপ ঘরেই বসে থাকত। আমার সাথে ছাড়া কারো সাথে তেমন একটা কথা বলত না। আমার সঙ্গ একমুহূর্তের জন্যও ছাড়তে চাই না। গভীর রাতে ঘুমে ভেঙে গেলে দেখতাম বারান্দায় বসে একটা বালিশকে জড়িয়ে রেখেছে। সন্তানকে মা যেভাবে বুকের সাথে জড়িয়ে রাখে। আর বিড়বিড় করে কি যেন বলে।
ভাবতাম কয়েকদিন পরে ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু দু'মাস পরেও যখন ওর মধ্যে কোন পরিবর্তন দেখতে পেলাম না তখন আমি ভয় পেয়ে গেলাম। আমি কোথাও থেকে ঘুরে আসতে চাইলাম। রাজি হল না।
আমি একদিন ওকে শপিংয়ের কথা বলে আমার সাইক্রিয়াটিস্ট বন্ধুর কাছে নিয়ে গেলাম। আমরা একসাথে একটা রেস্টুরেন্টে লাঞ্চ করলাম। লাঞ্চের ফাঁকে ফাঁকে আমার বন্ধু কাজলের সাথে টুকটাক কথা চালিয়ে যেতে লাগল। আমিও মাঝে মাঝে দু'একটা কথা বললাম। তারপর অল্পকিছু শপিং করে ফিরে এলাম।
বন্ধু আমাকে ফোন দিয়ে পরে বলে দিল কাজলকে কোনভাবেই একা একা রাখা যাবে না। সবসময় কেউ না কেউ যেন তার আশেপাশে থাকে। আর হালকা ডোজের ঘুমের ট্যাবলেট দিল। রাতের ঘুম যেন ঠিকমত হয়ে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে বলল। ১৫ দিন পর কি হয় আবার জানাতে বলল। এও বলল, ওর এখন সন্তান দরকার। আর একটা সন্তান হলে ও পুরোপুরি ঠিক হয়ে যাবে। আর সেজন্য তাকে মানসিকভাবে আবারো সন্তানধারনের জন্য উজ্জীবিত করতে হবে। এখন যে অবস্থা তাতে সে চেষ্টা না করাই ভাল। স্বাস্থ্যও ভেঙে পড়েছে। ঠিকঠাক মত খাওয়া দাওয়া করাতে বলল। একটু সামলে উঠলে তারপর আবারো সন্তান নিতে পরামর্শ দিল।
No comments:
Post a Comment