AB,
এই চিঠি তোর চোখে পড়ার কোন সম্ভবনা নেই। তাই লিখছি। পড়লে কষ্ট পেতি। কি দরকার শুধু শুধু কষ্ট দিয়ে তোকে?
আমার যখন প্রচন্ড কষ্ট হয় তখন কেমন জানি একটা চাপ অনুভব করি বুকে। আমি সাধারনত আমার কথা কারো সাথে শেয়ার করি না। আমার যন্ত্রণা, সমস্যা নিজের মাঝেই চেপে রাখি। তুই হয়ত বলবি এর পিছনে তোর যুক্তিটা কি? কেন এমন করিস?
আসলে যুক্তিটা খুবই সিম্পল। ধর আমার আম খেতে ইচ্ছে করল। এখন যার আমগাছের মালিকানা নেই তাকে আমার আম খাবার ইচ্ছের কথা বলে লাভ কি? যার দ্বার আমার কোন একটা সমস্যা সমাধান হবে না তাকে আমার সমস্যার কথা বলে লাভ কি? আমি কোন লাভ দেখি না।
দ্বীতিয়ত, এমনিতে সবার জীবনে প্রচুর ঝামেলা। চোখের সামনে দেখতে পাই তোরা তোদের জীবনের ঝামেলাগুলো সামলাতে কতই না হিমসিম খাচ্ছিস! আমার কাছে তোদের প্রবলেমগুলো রিয়েলিস্টিক মনে হয়। আর আমারটা মনে হয় ইমাজিনারী। শুধু শুধু ইমাজিনারী কষ্ট বাটার দরকার কি?
তারপরও যে গুটি কয়েক মানুষকে আমি আমার জীবনে উচ্চতর স্থান দেই, বন্ধু বলে স্বীকৃতি দেই, বা এর উপরের স্তরে রাখি তাদের মধ্যে তুই একজন। তোদের কাছে কোন কিছু বলতে কখনই লাভ ক্ষতির হিসেবে করি নি। কারন তোদের মাঝে নিজের প্রতিফলন দেখতে পাই। যদিও একেক সময় একেকজনের সাথে শেয়ার করার বিষয়টা মনে আসে। আসলে আমি ফোন দেই। যখন নিজে নিজে সামলাতে পারি না ফোন দেই। সময়ে-অসময়ে ফোন দেই।
কিন্তু জানিস, আমার ভাগ্য না আমাকে ফেবার করে না। যখন যাকে ফোন দেই, তার সময় হয় না। সে হয়ত এমন কোন পরিস্থিতির মধ্যে থাকে ফোন রিসিভ করতে পারে না বা অন্য কিছু। আমি বুঝি প্রতিটাই জেনুইন কেস। বানোয়াট না। আমাদের সম্পর্কের মধ্যে "বানোয়াট" কোন কিছুরই অস্তিত্ব নেই।
হয়ত এরপর "মিসড কল" দেখে কেউ কেউ ফোন ব্যাক করে। কেউ আবার করেও না। কি কারনে করে না-সেটাও জেনুইন কেস। ফেলে দেবার উপায় নেই।
যদি কেউ করে ততক্ষনে আমার আর শেয়ার করার ইচ্ছে থাকে না। মরে যায়। কিছুক্ষন হাই-হ্যালো করে রেখে দেই।
জীবন যত কেটে যাচ্ছে ততই কমপ্লিক্যাটেড হয়ে যাচ্ছে। তোরটাও হচ্ছে, আমারটাও হচ্ছে। আমি চেয়ে চেয়ে দেখি আর দুঃখে হাসি, কিভাবে আমি-তুই, আমাদের জীবনটাকে কমপ্লিক্যাটেড করে ফেলছি!
জানি না, আমার সাথে একমত হবি কিনা। কারো ভালবাসার ক্ষমতা যত অধিক, তার কষ্ট দেবার ক্ষমতাই তাই। কারো কোন কথায়, আচরনে যদি আমি কষ্ট পাই তবে বুঝতে হবে তার প্রতি আমি কতটা প্রতিক্রিয়াশীল। তার প্রতি আমার টান কত! মায়া কত!
তাই না? নাকি? সত্যি করে বল! আমাকে স্বান্তনা দেবার জন্য না।
জানিস, আমি না আগে আরো প্রতিক্রিয়াশীল ছিলাম! কেউ যখন বলত "রাত ১০ টায় ফোন দিব বা ২০ তারিখ আসতেছি" তখন আমি প্রস্তুতি নিতাম যেন কোন ধরনের ইন্টারাপ্ট না হয় বা আসলে তার যেন কোন অসুবিধা না হয়।
কতবার আমার প্রস্তুতি বিফলে গেছে! গুনে শেষ করা যাবে না।
এখন আর প্রস্তুতি নেই না। বরং ৯ টার ফোন ৯ টায় আসলেই অবাক হই। ইনফ্যাক্ট ফোন আসলেই অবাক হই!
কি? আমার কথা শুনে মনে হচ্ছে আমি পাগল হয়ে যাচ্ছি?
হতেও পারে। কোনকিছুই অসম্ভব না।
AR
No comments:
Post a Comment