[মূল কথায় যাবার আগে ভূমিকাস্বরুপ কিছু কথা বলা দরকার। কিছুদিন আগে মাহমুদ গানিয়ূন হাসান রেজার একটি পোস্ট পড়ে আমার মনে হল আমাদের মধ্যে বিয়ে সংক্রান্ত আলোচনা কম। যেটুকু আলোচনা হয় সেটুকু শুধু দাম্পত্য আচার আচরনের মধ্যে সীমাবদ্ধ। কিন্তু বিয়ে কি? কারা বিয়ে করবে? কারা করবে না? কাদের করবে? কাদের করা নিষেধ? কিভাবে করবে? মেয়ে কিভাবে দেখবে? কারা দেখবে? পাত্র-পাত্রী নির্বাচনে কি কি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে?- এমন অনেক প্রশ্নের উত্তর আমার জানা নেই। কাজেই ভাবলাম, দেখি একটু ঘেটে। পাওয়া যায় কিনা। যেটুকু পেয়েছি, তাই ধীরে ধীরে স্টেপ বাই স্টেপ শেয়ার করা হবে।
এই আলোচনা আমার ফ্রেন্ডলিস্টের যারা বিয়ে করেনি এখনো তাদের কাজে লাগবে বলে মনে করি। যারা করেছে তাদেরও কাজে লাগাবে আশা করি। অন্যকে জানানো যাবে। সতর্ক করা যাবে।
প্রশ্ন উঠতে পারে, ভাই হঠাৎ করে বিয়ে নিয়ে ঘাটাঘাটি করছেন কেন? কাহিনী কি?
এখানে কাহিনীর কিছু নেই। আজ হোক, কাল হোক বিয়েতো করতেই হবে। কাজেই এসব বিষয় জানা দরকার। বিয়ের ব্যাপারটা ইসলামী অন্যান্য হুকুম থেকে অনেক আলাদা। ধরেন, আপনি নামাজ পড়লেন। নামাজের পর আপনার খেয়াল হল বা আপনি জানলেন, কোন কারনে আপনার নামাজে ভুল হয়েছে বা নামাজ হয়নি; তাহলে আপনি পুনরায় নামাজ আদায় করলেন। কিন্তু বিয়ের ব্যাপারটাতো এমন না। সাধারনত এই কাজ জীবনে একবারই করা হয়। কাজেই কোন কারনে ভুল হয়ে গেলে, শোধরানোর সুযোগ নেই। আর মুসলিমের সব কাজই যেহেতু এবাদত, কাজেই একটু সাবধান হলে যদি এত গুরুত্বপূর্ণ একটা ইবাদত নির্ভুলভাবে করা যায় তাহলেতো খুবই ভাল।
আর ফেসবুকে দেবার উদ্দেশ্য হল, বয়ে বেড়াবার ঝামেলা নেই। যখন যেখান থেকে খুশি ঢুকে দেখতে পারব। অন্যরাও পারবে।
এখানে সূক্ষাতিসূক্ষ্ণ বিষয়গুলো আলোচনা করা হবে না। আমার কাছে যেগুলো গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে সে পয়েন্টগুলোই নিয়েই আলোচনা হবে। আমার ফ্রেন্ডলিস্টে যারা এই ব্যাপারগুলোতে অভিজ্ঞ বা মাদ্রাসায় পড়েছেন তাদের মতামত আশা করছি।
যেসব অমূল্য বইয়ের সাহায্য নিয়েছি সেগুলো লিস্ট হিসেবে দিলামঃ
১. তফসীরে মা'আরেফুল কোরআন----মুফতী মুহাম্মদ শফী (রঃ)---ইসলামিক ফাউন্ডেশন।
২. সহীহ মুসলিম----ইমাম আবুল হুসাইন মুসলিম ইবনুল হাজ্জাজ (রঃ)---বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার।
৩. সুনানু নাসাঈ শরীফ--ইমাম আবূ আবদির রাহ্মান আহমাদ ইবন্ শু'আয়ব আন-নাসাঈ (রঃ)---ইসলামিক ফাউন্ডেশন।
৪. আশরাফুল হিদায়া (বাংলা)--এমদাদিয়া লাইব্রেরী।
৫. আদর্শ বিবাহ ও দাম্পত্য---আব্দুল হামীদ মাদানী।
লিস্ট আগেই দেবার কারন হচ্ছে রেফারেন্স দিতে যেন সুবিধা হয়। যদি লিখি "রেফারেন্সঃ ১-২-২৫৯" তবে বুঝতে হবে উপরের লিস্টের ১ নম্বর কিতাবের ২ খন্ডের ২৫৯ পৃষ্ঠা।
ইয়া আল্লোহ! আমাকে নিয়তের শুদ্ধতা দান করো। আমার আমলকে কবুল করো। আমীন!]
"নিকাহ" এর আভিধানিক অর্থ হল "মিলানো।" শরীয়তের পরিভাষায়, "নারী-পুরুষের মধ্যে শরিয়তসম্মত এমন চুক্তি যা তারা নিজেদের যৌন চাহিদা পূরণ এবং সতিত্ব ও সম্মান রক্ষার উদ্দেশ্যে সংঘটন করে।"
::::::::::::::কেন বিয়ে করবে/দিবে?::::::::::::::
আল্লোহ তায়ালা বলেন, "তোমাদের মধ্যে যারা বিবাহহীন, তাদের বিবাহ সম্পাদন করে দাও এবং তোমাদের দাস ও দাসীদের মধ্যে যারা সৎকর্মপরায়ন, তাদেরও। তারা যদি নিঃস্ব হয়, তবে আল্লোহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে স্বচ্ছল করে দেবেন। আল্লোহ প্রাচুর্য্যময়, সর্বজ্ঞ। যারা বিবাহে সমর্থ নয়, তারা যেন সংযম অবলম্বন করে যে পর্যন্ত না আল্লোহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে অভাবমুক্ত করে দেন।" [সূরা আন-নূরঃ ৩২,৩৩]
রাসূলুল্লোহ (সাঃ) এরশাদ করেন, "বিবাহ আমার আদর্শ। যে তা থেকে মুখ ফিরায় সে আমার দলভুক্ত নয়।" [রেফারেন্সঃ ৪-০-৮]
আমর ইবন্ যুরারা (রঃ) ......আলকামা (রঃ) বলেন, আমি ইবন্ মাসঊদ (রাঃ) এর নিকট ছিলাম এবং তখন তিনি উসমান (রাঃ) নিকট ছিলেন। তখন ঊসমান (রাঃ) বললেন, রাসূলুল্লোহ (সাঃ) একদিন বের হলেন --অর্থাৎ কয়েকজন যুবকদের নিকট। আবূ আবদূর রহমান বলেন, *** শব্দ দ্বারা কাদের বোঝানো হয়েছে, আমি তা উত্তমরূপে বুঝতে পারিনি। রসূলুল্লোহ (সাঃ) বলেনঃ তোমাদের মধ্যে যে ব্যাক্তি ধনবান (মোহরানা ও স্ত্রী খোরপোষ বহনে সমর্থ) হয়, সে যেন বিবাহ করে। কেননা তা দৃষ্টি সংযত করে এবং লজ্জাস্থানের অধিক হিফাজত করে। আর যে ব্যাক্তি ধনবান (সমর্থ) না হয়, সিয়াম পালন তার জন্য কামভাবের নিয়ন্ত্রক। [রেফারেন্সঃ ৩-৩-৩৩৬]
সূরা আন্-নূরের উপরোক্ত আয়াত সমূহের তফসীরে বলা হয়েছে, প্রত্যেকটি এমন নর ও নারী, যার বিবাহ বর্তমান নেই; আসলেই বিবাহ না করার কারণে হোক কিংবা বিবাহের পর স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে একজনের মৃত্যু অথবা তালাকের কারনে হোক। এমন নর ও নারীদের বিবাহ সম্পাদনের জন্য তাদের অভিভাবকদেরকে আদেশ করা হয়েছে।
আলোচ্য আয়াতের বর্ণনাভঙ্গি থেকে একথা প্রমাণিত হয় এবং এ ব্যাপারে ঈমামগণও একমত যে, নিজের বিবাহ নিজেই সম্পাদন করার জন্য কোন পুরুষ ও নারীর প্রত্যক্ষ পদক্ষেপ নেওয়ার পরিবর্তে অভিভাবকদের মাধ্যমে এ কাজ সম্পাদন করাই বিবাহের মসনূন ও উত্তম পন্থা। এতে অনেক ধর্মীয় ও পার্থিব উপকারিতা আছে। বিশেষত মেয়েদের বিবাহ তারা নিজেরাই সম্পন্ন করবে, এটা যেমন একটা নির্লজ্জ কাজ, তেমনি এতে অশ্লীলতার পথ খুলে যাওয়ারও সমূহ সম্ভবনা থাকে। এ কারনেই কোন কোন হাদীসে নারীদেরকে অভিভাবকদের মাধ্যম ছাড়া নিজেদের বিবাহ নিজেরা সম্পাদন করা থেকে বাধাও দেয়া হয়েছে। ইমাম আযম আবূ হানীফা (রঃ) ও অন্য কয়েকজন ইমামের মতে এই বিধানটি একটি বিশেষ সুন্নত ও শরীয়তগত নির্দেশের মর্যাদা রাখে। যদি কোন প্রাপ্তবয়স্কা বালিকা নিজের বিবাহ অভিভাবকের অনুমতি ব্যতীত 'কুফু' তথা সমতুল্য লোকের সাথে সম্পাদন করে, তবে বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যাবে। তবে সুন্নতের বিরোধীতার কারনে বালিকাটি তিরস্কারের যোগ্য যদি সে কোনরূপ বাধ্যবাধকতার পরিপ্রেক্ষিতে এই পদক্ষেপ না নিয়ে থাকে।
ঈমাম শাফেঈ (রঃ) ও অন্যান্য কয়েকজন ইমামের মতে অভিভাবকের মাধ্যমে না হলে প্রাপ্তবয়স্কা বালিকার বিবাহই বাতিল ও না হওয়ার শামিল বলে গন্য হবে। এটা বিরোধ-পূর্ণ মাসয়ালাসমূহের আলোচনা ও উভয়পক্ষের প্রমানাদি বর্ণনা করার স্থান নয়। কিত্নু এটা সুস্পষ্ট যে, আলোচ্য আয়াত থেকে অধিকতর একথাই প্রমানিত হয় যে, বিবাহ অভিভাবকদের মধ্যস্থতা বাঞ্ছনীয়। এখন কেউ যদি অভিভাবকদের মধ্যস্থতা ছাড়াই বিবাহ করে, তবে তা শুদ্ধ হবে কিনা আয়াত এ ব্যাপারে নিশ্চুপ। বিশেষত এ কারণেও যে, "বিবাহহীন লোক" শব্দের মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ ও নারী উভয়ই অন্তর্ভুক্ত। প্রাপ্তবয়স্ক বালকদের বিবাহ অভিভাবকদের মধ্যস্থতা ছাড়া সবার মতেই শুদ্ধ-কেউ একে বাতিল বলে না। এমনিভাবে বাহ্যত বোঝা যায় যে, প্রাপ্তবয়স্কা বালিকা নিজের বিবাহ নিজেই সম্পাদন করলে তাও শুদ্ধ হয়ে যাবে। তবে সুন্নতবিরোধী কাজ করার কারণে বালক-বালিকা উভয়কে তিরস্কার করা হবে।
[রেফারেন্সঃ ১-৬-৪৪২]
____________________________________________________________________________________
[রেফারেন্সঃ ১-৬-৪৪২]
____________________________________________________________________________________
::::::::বিবাহ কি ফরয? নাকি সুন্নত নাকি ওয়াজিব?:::::::::::
শরয়ী বিবাহ তিন প্রকার।
১. সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ্ ২. ওয়াজিব ৩. মাকরূহ [রেফারেন্সঃ ৪-০-৮]
১. সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ্ ২. ওয়াজিব ৩. মাকরূহ [রেফারেন্সঃ ৪-০-৮]
মুজতাহিদ ইমামগণ প্রায় সবাই এই বিষয়ে একমত যে, যে ব্যক্তি সম্পর্কে প্রবল ধারনা এই যে, সে বিবাহ না করলে শরীয়তের সীমার ভিতর থাকতে পারবে না, গোনাহে লিপ্ত হয়ে পড়বে এবং বিবাহ করার শক্তি সামর্থ্যও রাখে, এরুপ ব্যাক্তির জন্য বিবাহ করা ফরজ অথবা ওয়াজিব। সে যতদিন বিবাহ করবে না, ততদিন গোনাহ্গার থাকবে। [১-৬-৪৪৩]
স্ত্রীলোকের প্রতি অধিক আসক্তির সময় বিবাহ করা ওয়াজিব [৪-০-৮]
এক্ষেত্রে যদি উপযুক্ত নারী পাওয়া না যায় বা বিবাহের মোহরানা আদায়ের সামর্থ না থাকে তবে তা সংগ্রহ করার জন্য চেষ্টা করতে হবে এবং যতদিন পর্যন্ত ব্যবস্থা না হবে ততদিন পর্যন্ত রোজা রেখে নিজেকে শান্ত রাখতে হবে। রোজার দ্বারা শান্ত রাখা সহজ হয়।
মসনদে আহমদে বর্ণিত আছে--রসূলুল্লোহ্ (সাঃ) হযরত ওকাফ (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করলেনঃ তোমার স্ত্রী আছে কি? উত্তর হলঃ না। আবার জিজ্ঞেস করলেনঃ কোন শরীয়ত সম্মত বাদী আছে কি? উত্তর হলঃ না। প্রশ্ন হলঃ তুমি কি আর্থিক নির্বাহের সামর্থ্য রাখ? তিনি উত্তরে হ্যা বললে রসূলুল্লাহ (সাঃ) বললেনঃ তাহলে তো তুমি শয়তানের ভাই। তিনি আরও বললেনঃ বিবাহ আমাদের সুন্নত। তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি নিকৃষ্টতম, যে বিবাহহীন এবং তোমাদের মৃতদের মধ্যে সে সর্বাধিক নীচ, যে বিবাহ না করে মারা গেছে।--মাযহারী।
ওকাফ (রাঃ) কথা সম্ভবত রসূলুল্লাহ (সাঃ) এর জানা ছিল যে, তিনি সবর করতে পারেন না। সেজন্যে তাকে ওমন হুশিয়ারী দিয়েছিলেন।
অপরদিকে এই ব্যাপারেও ফিকহবিদগন একমত যে, কোন ব্যাক্তির যদি প্রবল ধারনা হয় যে, সে বিবাহ করলে গোনাহে লিপ্ত হয়ে যাবে, উদাহরণত সে দাম্পত্য জীবনের হক আদায় করার শক্তি রাখে না, স্ত্রীর ওপর জুলুম করবে কিংবা অন্য কোন গোনাহ্ নিশ্চিত হয়ে যাবে, তবে এরূপ ব্যাক্তির জন্য বিবাহ করা হারাম অথবা মাকরূহ্।
[সংক্ষেপিত, ১-৬-৪৪৩]
যে সময় জুলুম-অত্যাচারের প্রবল সম্ভবনা হবে এবং ফরজ ও সুন্নত বর্জনের আশংকা হবে এ সকল সুরতে বিবাহ মাকরূহ। [৪-০-৮]
মহর, ব্যয়ভার এবং সঙ্গমের উপর সামর্থ্যের সুরতে বিবাহ সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ্। [৪-০-৮]
যে ব্যাক্তির বিবাহ না করলে গোনাহের সম্ভবনা প্রবল নয় এবং বিবাহ করলেও কোন গোনাহের আশংকা জোরদার নয়, তার সম্পর্কে মতভেদ রয়েছে। ইমাম আবূ হানীফার মতে, নফল ইবাদতে মশগুল হবার চেয়ে বিবাহ করা উত্তম। ইমাম শাফেঈ ইবাদতের উদ্দেশ্যে একান্তবাসকে বিবাহের চাইতে উত্তম বলেন। তবে সহীহ্ হাদীস সমূহে বিবাহকে পয়গম্বদের ও স্বয়ং রসূলুল্লোহ (সাঃ)-র সুন্নত আখ্যা দিয়ে এর উপর যথেষ্ট জোড় দেয়া হয়েছে। [সংক্ষেপিত, ১-৬-৪৪৩,৪৪৪]
:::::::::::::::::: বিবাহ না করা :::::::::::::::::::::
ইসলাম ধর্মে সামর্থ্যবানদের চিরকুমার থাকার কোন সুযোগ নেই।
মুহাম্মদ ইব্ন উবায়দ (রঃ)----সা'দ ইব্ন আবী ওয়াক্কাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লোহ (সাঃ) উসমান ইব্নে মায্উনকে চির-কুমার থাকতে (অর্থাৎ বিবাহ না করে ও সংসার জীবন বর্জন করে সব ইবাদতে মগ্ন থাকতে) নিষেধ করেছেন, তিনি যদি তাকে অনুমতি দিতেন, তাহলে আমরা 'খাসি' হওয়া গ্রহন করতাম।
ইসমাঈল ইব্ন মাসউদ (রঃ)----আয়েশা (রাঃ) বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃ) বিবাহ না করে সংসার বিরাগী জীবন যাপন (চির কৌমার্য) হতে নিষেধ করেছেন। [৩-৩-৩৩৮]
বৈরাগ্যবাদের মূলউৎপাটন করে মহানবী (সাঃ) বলেন, "বিবাহ আমার আদর্শ। যে তা থেকে মুখ ফিরায় সে আমার দলভুক্ত নয়।" [৪-০-৮]
::::::::::::: বিবাহে ইচ্ছুক অথচ দরিদ্রের প্রতি সুসংবাদ:::::::::::::::
হযরত ইবনে আব্বাস বলেন, [সূরা আন-নূরের ৩২ আয়াতের অংশবিশেষ যা উপরে লেখা হয়েছে-লেখক] আয়াতে আল্লাহ তা'আলা মুক্ত ও ক্রীতদাস নির্বিশেষে সব মুসলমানকে বিবাহ করার উৎসাহ দিয়েছেন এবং বিবাহের কারনে তাদেরকে আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্য দান করার ওয়াদা করেছেন।--(ইবনে কাসীর) ইবনে আবী হাতেম বর্ণনা করেন, হযরত আবূ বক সিদ্দীক (রাঃ) একবার মুসলমানদেরকে সম্বোধন করে বললেনঃ তোমরা বিবাহের ব্যাপারে আল্লাহর আদেশ পালন কর। তিনি যে ধনাঢ্যতা দান করার ব্যাপারে ওয়াদা করেছেন, তা পূর্ণ করবেন। অতঃপর তিনি এই আয়াত পাঠ করলেনঃ
[আলোচ্য আয়াতের অংশ বিশেষ]
[আলোচ্য আয়াতের অংশ বিশেষ]
হযরত ইবনে মাসউদ বলেনঃ তোমরা যদি ধনী হতে চাও, তবে বিবাহ কর। কেননা, আল্লোহ তা'আলা বলেছেনঃ [উক্ত আয়াত]--ইবনে কাসীর।
[১-৬-৪৪৬]
ইয়াহ্ইয়া ইব্ন মূসা (রঃ)----আবূ সালামা (রাঃ) হতে বর্ণিত, আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেছেন, আমি বললামঃ ইয়া রসূলুল্লোহ্! আমি একজন যুবক ব্যক্তি। আমি নিজের ব্যাপারে ব্যভিচারের ভয় করি, অথচ বিবাহের খরচ বহনের সামর্থ্যও আমার নেই। আমি কি 'খাসি' হওয়া গ্রহণ করব?(একথা শুনে) তিনি রসূলুল্লোহ (সাঃ) তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। তিনবার এমন বলার পর নবী (সাঃ) বললেনঃ হে আবূ হুরায়রা! তুমি কী (পরিস্থিতির) সম্মুখীন হবে তা (তোমার ভবিষ্যৎ কর্ম সম্বন্ধে) লিখিত হয়ে গেছে, এখন তুমি ইচ্ছা হয়, খাসি হতে পার বা তা পরিত্যাগ করতে পার। [৩-৩-৩৩৯]
হুশিয়ারীঃ তফসীরে মাযহারীতে বলা হয়েছে, স্মর্তব্য যে, বিবাহ করার কারণে আল্লোহ তা'আলার পক্ষ থেকে ধনাঢ্যতা দান করার ওয়াদা তখন, যখন পবিত্রতা সংরক্ষন ও সুন্নত পালনের নিয়তে বিবাহ করা হয়, অতঃপর আল্লোহর ওপর তাওয়াক্কুল ও ভরসা করা হয়। এর প্রমাণ পরবর্তী আয়াতঃ
"যারা অর্থসম্পদের দিক দিয়ে বিবাহের সামর্থ্য রাখে না এবং বিবাহ করলে আশংকা আছে যে, স্ত্রীর অধিকার আদায় না করার কারনে গোনাহ্গার হয়ে যাবে, তারা যেন পবিত্রতা ও ধৈর্য্য সহাকার অপেক্ষা করে, যে পর্যন্ত না আল্লোহ্ তা'আলা স্বীয় অনুগ্রহে তাদেরকে মালদার করে দেন। এই ধৈর্য্যের জন্য হাদীসে একটি কৌশলও বলে দেওয়া হয়েছে যে, তারা বেশি পরিমাণে রোযা রাখবে। তারা এরূপ করলে আল্লোহ্ তা'আলা স্বীয় অনুগ্রহে তাদেরকে বিবাহের সামর্থ্য পরিমাণে অর্থসম্পদ দান করবেন। [১-৬৪৪৬]
বর্তমানে প্রায়ই বলতে শুনি, "বিয়ে করব না" বা "বিয়ে করার ইচ্ছা নেই।" বেশিরভাগই হৃদয়ঘটিত ব্যাপারে এই ধরনের কথাবার্তা শোনা যায়। একেতো "প্রেম/ভালবাসা"র নাম দিয়ে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ি, তারপর সেই কাজে ব্যর্থ হলে আল্লোহর আরেকটি হুকুমকে বয়কট করতে চাই। অভিভাবকদের উদাসীনতার ফলে তাদের ছেলেমেয়েদের বেপরোয়া জীবন যাপনের কৌফিয়ত অভিভাবকদের অবশ্যই দিতে হবে। আল্লোহ তা'আলার পাকড়াও থেকে কারো রেহাই নেই। [মন্তব্য, লেখক]
---------------------------------------------------------------------------------------------
::::::::::::::কাদের বিয়ে করা যাবে?:::::::::::::::::::::
কাদের বিয়ে করা যাবে সেটা আলোচনা করার চেয়ে কাদের করা যাবে না-সেটা আলোচনা করা সহজ। কাজেই সেদিকে যাই।
সূরা আল-বাকারাহ্ এর ২২১ নম্বর আয়াতে আল্লোহ তা'আলা বলেন,
"আর তোমাদের মুশরিক নারীদেরকে বিয়ে করো না যতক্ষন না তারা ঈমান গ্রহন করে। অবশ্য মুসলমান ক্রীতদাসী মুশরিক নারী অপেক্ষা উত্তম; যদিও তাদেরকে তোমাদের কাছে ভাল লাগে এবং তোমরা (নারীরা) কোন মুশরিকের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ো না, যে পর্যন্ত সে ঈমান না আনে। একজন মুসলমান ক্রীতদাসও একজন মুশরিকের তুলনায় অনেক ভাল, যদিও তোমরা তাদের দেখে মোহিত হও। তারা দোযখের দিকে আহবান করে; আর আল্লোহ্ নিজের হুকুমের মাধ্যমে আহবান করেন জান্নাত ও ক্ষমার প্রতি। আর তিনি মানুষকে নিজের নির্দেশ বাতলে দেন, যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে।"
"আর তোমাদের মুশরিক নারীদেরকে বিয়ে করো না যতক্ষন না তারা ঈমান গ্রহন করে। অবশ্য মুসলমান ক্রীতদাসী মুশরিক নারী অপেক্ষা উত্তম; যদিও তাদেরকে তোমাদের কাছে ভাল লাগে এবং তোমরা (নারীরা) কোন মুশরিকের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ো না, যে পর্যন্ত সে ঈমান না আনে। একজন মুসলমান ক্রীতদাসও একজন মুশরিকের তুলনায় অনেক ভাল, যদিও তোমরা তাদের দেখে মোহিত হও। তারা দোযখের দিকে আহবান করে; আর আল্লোহ্ নিজের হুকুমের মাধ্যমে আহবান করেন জান্নাত ও ক্ষমার প্রতি। আর তিনি মানুষকে নিজের নির্দেশ বাতলে দেন, যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে।"
[এই আয়াত এখানে আলোচনা করার কারন হল, বর্তমান পরিস্থিতি। বর্তমানে মুশরিকদের সাথে মুসলিমদের (অন্তত নামে মুসলিম) বিয়ে আশংকাজনক হারে বাড়ছে যেখানে এই আয়াতের উল্লেখ্যিত "শর্ত" পালিত হচ্ছে না।]
আলোচ্য আয়াতে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাস'আলা বর্ণনা করা হয়েছে যে, মুসলমান পুরুষের বিয়ে কাফির নারীর সাথে এবং কাফির পুরুষদের সাথে মুসলমান নারীর বিয়ে হতে পারে না। কারণ, কাফির স্ত্রী পুরুষ মানুষকে জাহান্নামের দিকে নিয়ে যায়। কেননা বৈবাহিক সম্পর্ক পরস্পরের ভালোবাসা, নির্ভরশীলতার এবং একাত্মতায় পরস্পরকে আকর্ষণ করে। তা ব্যতীত এ সম্পর্কের প্রকৃত উদ্দেশ্য সাধিত হয় না। আর মুশরিকদের সাথে এ জাতীয় সম্পর্কের ফলে ভালবসা ও নির্ভরশীলতার অপরিহার্য পরিণাম এই দাঁড়ায় যে, তাদের অন্তরে কুফর ও শিরকের প্রতি আকর্ষণ সৃষ্টি হয় অথবা কমপক্ষে কুফর ও শিরকের প্রতি ঘৃণা তাদের অন্তর থেকে উঠে যায়। এর পরিনামে শেষ পর্যন্ত সেও কুফর ও শিরকে জড়িয়ে পড়ে, যার পরনতি জাহান্নাম। এই জন্যই বলা হয়েছে যে, এসব লোক জাহান্নামের দিকে আহবান করে। আল্লোহ্ তা'আলা জান্নাত ও মাগফেরাতের দিকে আহবান করেন এবং পরিষ্কারভাবে নিজের আদেশ বর্ণনা করেন, যাতে মানুষ উপদেশ মত চলে।
[ রেফারেন্সঃ ১-১-৫১০। এরপর বিস্তর আলোচনার পরে এই সিদ্ধান্তে দেয়া হয়েছে যে, "আহলে কিতাব" ইদের সাথেও মুসলিম নরনারী বিবাহ ইসলামী শরীয়াহ্ পছন্দ করে না। আহ্লে কিতাব-ই হল তারা যাদের উপর পূর্ববর্তী আসমানী গ্রন্থসমূহ অবতীর্ন হয়েছে, যারা আল্লোহর সাথে শির্ক করে না এবং রিসালাত ব্যতীত অন্যদুটি ইসলামী মৌলিক আক্বীদার (তাওহীদ ও আখিরাত) সাথে একমত। সবশেষে একটি ঘটনার বর্ণনা করা হয়েছে যেখানে, উমর ফারূক (রাঃ) ইরাক ও শাম দেশের মুসলমানদের এমন স্ত্রী গ্রহন না করার ব্যাপারে আদেশ জারি করলেন। এটি একটি মতভেদপূর্ণ মাসয়ালা।-লেখক]
[ রেফারেন্সঃ ১-১-৫১০। এরপর বিস্তর আলোচনার পরে এই সিদ্ধান্তে দেয়া হয়েছে যে, "আহলে কিতাব" ইদের সাথেও মুসলিম নরনারী বিবাহ ইসলামী শরীয়াহ্ পছন্দ করে না। আহ্লে কিতাব-ই হল তারা যাদের উপর পূর্ববর্তী আসমানী গ্রন্থসমূহ অবতীর্ন হয়েছে, যারা আল্লোহর সাথে শির্ক করে না এবং রিসালাত ব্যতীত অন্যদুটি ইসলামী মৌলিক আক্বীদার (তাওহীদ ও আখিরাত) সাথে একমত। সবশেষে একটি ঘটনার বর্ণনা করা হয়েছে যেখানে, উমর ফারূক (রাঃ) ইরাক ও শাম দেশের মুসলমানদের এমন স্ত্রী গ্রহন না করার ব্যাপারে আদেশ জারি করলেন। এটি একটি মতভেদপূর্ণ মাসয়ালা।-লেখক]
"যে নারীকে তোমাদের পিতা-পিতামহ বিবাহ করেছে তোমরা তাদের বিবাহ করো না, কিন্তু যা বিগত হয়েছে। এটা অশ্লীল, গযবের কাজ এবং নিকৃষ্ট আচরণ। তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে তোমাদের মাতা, তোমাদের কন্যা, তোমাদের বোন, তোমাদের ফুফু, তোমাদের খালা, ভাতৃকন্যা, ভগিনীকন্যা, তোমাদের সে মাতা, যারা তোমাদেরকে স্তন্যপান করিয়েছে, তোমাদের দুধ-বোন, তোমাদের স্ত্রীদের মাতা, তোমরা যাদের সাথে সহবাস করেছ সে স্ত্রীদের কন্যা--যারা তোমাদের লালন-পালনে আছে। যদি তাদের সাথে সহবাস না করে থাকে, তবে এ বিবাহে তোমাদের কোন গোনাহ্ নেই। তোমাদের ঔরসজাত পুত্রদের স্ত্রী এবং দুই বোনকে একত্রে বিবাহ করা তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ করা হলো; কিন্তু যা অতীত হয়ে গেছে। নিশ্চয় আল্লোহ্ ক্ষমাকারী, দয়ালু। এবং নারীদের মধ্যে তাদের ছাড়া সকল সধবা স্ত্রীলোক তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ; তোমাদের দক্ষিন হস্ত যাদের মালিক হয়ে যায়--এটা তোমাদের জন্য আল্লোহর হুকুম। এদেরকে ছাড়া তোমাদের জন্য সব নারী হালাল করা হয়েছে, শর্ত এই যে, তোমরা তাদেরকে স্বীয় অর্থের বিনিময়ে তলব করবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করার জন্য--ব্যভিচারের জন্য নয়। অনন্তর তাদের মধ্যে যাকে তোমরা ভোগ করবে, তাকে তার নির্ধারিত হক দান কর। তোমাদের কোন গোনাহ হবে না যদি নির্ধারণের পর তোমরা পরস্পরে সম্মত হও। নিশ্চয় আল্লোহ্ সুবিজ্ঞ, রহস্যবিদ।"
[সূরা আন্-নিসাঃ ২২-২৪]
যে সকল স্ত্রীলোকদের বিবাহ করা হারাম, তারা দু'ধরনের।
১. যাদের কখনো বিবাহ করা জায়েজ নেই; বরং সর্বদার জন্য হারাম। যেমন- মা, বোন ইত্যাদি।
১. যাদের কখনো বিবাহ করা জায়েজ নেই; বরং সর্বদার জন্য হারাম। যেমন- মা, বোন ইত্যাদি।
২. যারা অস্থায়ীভাবে হারাম, তবে কখনো হালালও হয়ে যায়। যেমন- অন্যের বিবাহিতা স্ত্রী বা ইদ্দত পালনকারী নারী।
হারাম হবার সাতটি সবব বা কারন রয়েছে-
১. বিশেষ আত্মীয় স্বজন ২. বিবাহসূত্রে আত্মীয়স্বজন ৩. দুধপান ৪. একত্রিকরন ৫. মালিক হওয়া ৬. কুফর ৭. স্বাধীন নারীর সাথে দাসীকে বিবাহ করা। [৪-০-১৮]
১. বিশেষ আত্মীয় স্বজন ২. বিবাহসূত্রে আত্মীয়স্বজন ৩. দুধপান ৪. একত্রিকরন ৫. মালিক হওয়া ৬. কুফর ৭. স্বাধীন নারীর সাথে দাসীকে বিবাহ করা। [৪-০-১৮]
যাদের স্থায়ীভাবে বিয়ে করা হারাম তাদেরকে আবার তিনভাগে ভাগ করা যায়ঃ
ক) বংশগত হারাম নারী খ) দুধপানের কারনে হারাম নারী গ) শ্বশুর সম্পর্কের কারনে হারাম নারী।
**যদি পিতা কোন স্ত্রীলোকের সাথে ব্যভিচার করে, তবুও তাকে বিয়ে করা পুত্রের পক্ষে হালাল নয়। "আপন জননীদের বিয়ে করা তোমাদের উপর হারাম করা হয়েছে।" আয়াতের ব্যপকতায় দাদী, নানী সবই অন্তর্ভূক্ত রয়েছে।
*স্বীয় ঔরসজাত কন্যাকে বিয়ে করা হারাম। কন্যার কন্যাকে এবং পুত্রের কন্যাকেও বিয়ে করা হারাম। [পালিত কন্যার ক্ষেত্রে এই বিধান প্রযোজ্য নয়-লেখক]
*সহোদরা ভগিনীকে বিয়ে করা হারাম। এমনিভাবে বৈমাত্রেয়ী ও বৈপিত্রেয়ী ভগিনীকেও বিয়ে করা হারাম।
*পিতার সহোদরা, বৈমাত্রেয়ী ও বৈপিত্রেয়ী বোনকে বিয়ে করা হারাম। তিন প্রকারে ফুফুকেই বিয়ে করা যায় না।
*আপন জননীর তিন প্রকার বোন, প্রত্যেকের সাথেই বিয়ে করা হারাম।
*ভ্রাতুষ্পুত্রীর সাথেও বিয়ে হারাম, আপন হোক, বৈমাত্রেয় হোক--বিয়ে হালাল নয়।
*বোনের কন্যা অর্থাৎ ভাগ্নীর সাথেও বিয়ে করা হারাম। এখানেও বোনকে ব্যাপক অর্থে বুঝতে হবে।
*বোনের কন্যা অর্থাৎ ভাগ্নীর সাথেও বিয়ে করা হারাম। এখানেও বোনকে ব্যাপক অর্থে বুঝতে হবে।
**যেসব নারীর স্তন্যপান করা হয়, তারা জননী না হলেও বিবাহ হারাম হওয়ার ব্যাপারে জননীর পর্যায়ভুক্ত এবং তাদের সাথে বিয়ে হারাম। বংশগত কারনে যাদের সাথে বিয়ে হারাম, দুধ সম্পর্কের কারনেও তাদের সাথে বিয়ে হারাম।
**স্ত্রীদের মাতাও স্বামীর জন্য হারাম। এখানেও স্ত্রীদের নানী, দাদীঃ বংশগত হোক কিংবা দুধগত--সবাই অন্তর্ভুক্ত।
*শুধু বিবাহ দ্বারাই স্ত্রীর মা হারাম হয়ে যায়। এরজন্য সহবাস ইত্যাদি জরুরী নয়।
* যে মহিলাকে বিয়ে করে সহবাসও করেছে, সেই মহিলার অন্য স্বামীর ঔরসজাত কন্যা, পৌত্রী ও দৌহিত্রী (যদি থাকে) হারাম হয়ে যায়। তাদেরকে বিবাহ করা জায়েজ নয়। কিন্তু যদি শুধু বিয়ে হয়, সহবাস না হয় তবে উল্লেখ্যিত নারীরা হারাম হয় না। বিয়ের পর যদি তাকে কামভাব নিয়ে স্পর্শ করে বা তার গুপ্ত অঙ্গের দিকে কামভাবে সহকার দৃষ্টিপাত করে, তবে এগুলোও সহবাসের পর্যায়ভুক্ত। ফলে স্ত্রীর কন্যা হারাম হয়ে যায়।
**স্ত্রীদের মাতাও স্বামীর জন্য হারাম। এখানেও স্ত্রীদের নানী, দাদীঃ বংশগত হোক কিংবা দুধগত--সবাই অন্তর্ভুক্ত।
*শুধু বিবাহ দ্বারাই স্ত্রীর মা হারাম হয়ে যায়। এরজন্য সহবাস ইত্যাদি জরুরী নয়।
* যে মহিলাকে বিয়ে করে সহবাসও করেছে, সেই মহিলার অন্য স্বামীর ঔরসজাত কন্যা, পৌত্রী ও দৌহিত্রী (যদি থাকে) হারাম হয়ে যায়। তাদেরকে বিবাহ করা জায়েজ নয়। কিন্তু যদি শুধু বিয়ে হয়, সহবাস না হয় তবে উল্লেখ্যিত নারীরা হারাম হয় না। বিয়ের পর যদি তাকে কামভাব নিয়ে স্পর্শ করে বা তার গুপ্ত অঙ্গের দিকে কামভাবে সহকার দৃষ্টিপাত করে, তবে এগুলোও সহবাসের পর্যায়ভুক্ত। ফলে স্ত্রীর কন্যা হারাম হয়ে যায়।
*পুত্রের স্ত্রী হারাম। পৌত্র, দৌহিত্রও পুত্র শব্দের ব্যাপক অর্থের অন্তর্ভুক্ত। কাজেই তাদের স্ত্রীকে বিয়ে করাও জায়েজ হবে না। [পালিত পুত্রের ক্ষেত্রে এই বিধান প্রযোজ্য নয়]
[অন্যান্য আলোচনা থেকে বোঝা যায় বিবাহিত স্ত্রীর ক্ষেত্রে উপরোক্ত যেসব বিধান একই বিধান যার সাথে সন্দেহবশত সহবাস করে কিংবা ব্যভিচার করে কিংবা যাকে কামভাব নিয়ে স্পর্শ করে।-লেখক]
*দুই বোনকে একত্রে বিয়ে করাও হারাম সহোদর বোন হোক কিংবা বৈমাত্রেয়ী কিংবা বৈপিত্রেয়ী হোক, বংশগত দিক দিয়ে হোক, কিংবা দুধপানের দিক দিয়ে--এ বিধান সবার জন্য প্রযোজ্য। তবে এক বোনের তালাক হয়ে যাওয়ার পর ইদ্দত অতিবাহিত হয়ে গেলে কিংবা মৃত্যু হলে অপর বোনকে বিয়ে করা জায়েজ--ইদ্দতের মাঝখানে জায়েজ নয়। এক্ষেত্রে মৌলিক নীতি হল, এমন দুই মহিলা যাদের একজনকে পুরুষ ধরা হলে অপরজনের সাথে বিবাহ জায়েজ হয় না, তারা একজন পুরুষের বিয়েতে একত্রিত হতে পারে না।
[সংক্ষেপিতঃ ১-২-৩২৩,৩২৪,৩২৫,৩২৬]
[৫ নং এবং ৭ নং পয়েন্ট সম্পর্কে আলোচনা করলাম না। আলোচনা জটিল আকার ধারন করছে। যারা আগ্রহী তারা নিজ দায়িত্বে জেনে নেবেন প্লীজ। আর হ্যা, উপরোক্ত আলোচনা পুরুষালী দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আলোচনা করা হয়েছে। নারীরা তাদের মত করে উপযুক্ত ক্ষেতে বিপরীত অর্থ বুঝে নেবেন। যেমন- ছেলের জন্য মা হারাম হলে, মেয়ের জন্য বাবা হারাম ইত্যাদি।-লেখক]
এদের ছাড়া অন্য নারীদের পুরুষদের জন্য বিবাহের ক্ষেত্রে হালাল করা হয়েছে।
--------------------------------------------------------------------------------------------
:::::::::::::::::বিবাহের ক্ষেত্রে বিবেচ্য বিষয়সমূহ::::::::::::::::::::::
কেমন পাত্র/পাত্রী বিয়ে করা উচিত? বিয়ের করার জন্য কি কি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে? এ ধরনের প্রশ্নের প্রতি লক্ষ্য রেখেই আজকের অংশ।
কুফূ
বিবাহের ক্ষেত্রে পাত্র-পাত্রীর কুফূ বিবেচ্য। কুফূ হওয়া এর অর্থ হল সমান০সমান, সমসাময়িক, বরাবর, অনুরূপ, উপযুক্ত। সমান বিবাহের ক্ষেত্রে কুফূ হওয়ার অর্থ হলো, স্বামী-স্ত্রীর বরাবর হওয়া। তবে বংশকুল, জাতিকুল, জাতিধর্ম, বয়স এবং রূপ ইত্যাদির মধ্যে বিবাহের ক্ষেত্রে কুফূর বিবেচনা এজন্য করা হয় যে, যাতে অভিভাবকদের বিবাহ বিলুপ্তির অধিকার খর্ব হয়ে বিবাহ অবধারিত হয়ে যায়। বিবাহের কল্যাঙুলো অর্জন করার জন্য কুফূ হওয়া একান্ত জরুরী। কারণ, অভিজাত পরিবারের কোনো নারী নিম্নশ্রেণীর পরিবারের পুরুষের শয্যাসঙ্গিনী হওয়া পছন্দ করবে না; তাই কুফূ বিবেচনা করা জরুরী, তবে নারীর দিক থেকে কুফূর বিবেচনা করা জরুরী নয়।
নারী যদি নিজেই অসম পাত্রে বিবাহবদ্ধনে আবদ্ধ হয়; তাহলে তার ওলীদের (অভিভাবক) বিবাহ বিলুপ্ত করার অধিকার রয়েছে। যেন নিজেদের উপর থেকে অপমানের ক্ষতি দূর হয়ে যায়। তবে এই বিচ্ছিন্ন করার অধিকার স্ত্রীর সন্তান প্রসবের পূর্ব পর্যন্ত থাকবে। সন্তান প্রসব হওয়ার পর ওলীদের বিবাহ বিচ্ছেদ করার অধিকার থাকবে না।
[৪-০-৭৯]
[৪-০-৭৯]
১. কুফূ বিবেচনা করা হবে বংশের মধ্যে। কেননা, বংশ দ্বার পরস্পর গর্ব হয়ে থাকে।
২. ইমাম মুহাম্মদ (রঃ) বলেন, ধার্মিকতায় অর্থাৎ দীনদারির ব্যাপারেও কুফূ বিবেচনা করা হবে। এটা হলো ইমাম আবূ হানীফা ও ইমাম আবূ ইউসুফ (রঃ) এর মত। এটাই বিশুদ্ধ। কেননা, দীনদারি হলো সর্বোত্তম গর্বের বিষয়। আর স্ত্রীকে স্বামীর বংশ-নীচতার চেয়ে বেশি লজ্জা দেওয়া হয় স্বামীর ফাসেকীর কারণে। ইমাম মুহাম্মদ (রঃ) বলেন, দীনদারি কুফূ হিসেবে বিবেচ্য নয়। কেননা, তা হলো আখিরাতের বিষয়। সুতরাং এর উপর দুনিয়ার হুকুমের ভিত্তি হতে পারে না। তএব অদি বিষয়টি এতদূর গড়ায় যে, মানুষ তাকে চড়-থাপ্পড় লাগায়, উপহাস করে কিংবা মাতাল অবস্থায় রাস্তায় বের হয় আর ছেলে-পেলেরা তাকে নিয়ে কৌতুক করে, তাহলে তা বিবেচ্য হবে। কেননা, এর ফলে তাকে একেবার হীন গণ্য করা হয়। তাহলে এ ধরনের লোক সতী-সাধ্বী নারীর কুফূ (সমকক্ষ) হতে পারে না। কারণ এ লোক সাংঘাতিক ধরনের নিচু।
৩. আর্থিক ব্যাপারেও কুফূ বিবেচনা করা হবে। অর্থাৎ, স্বামীকে মহর আদায় ও ভরণ-পোষণের পরিমান অর্থের মালিক হতে হবে। স্বামী যদি উভয়টির মালিক না হয় কিংবা দুটির একটির মালিক না হয় তাহলে সে কুফূ হতে পারবে না। যদিও নারী দরিদ্রই হোক। তবে পিতার স্বচ্ছলতার কারণে পুত্রকে মোহর আদায়ে সক্ষম গণ্য করা হয়। [সম্পদের ক্ষেত্রে কুফূর ধারনা একটি বিরোধপূর্ণ মাসয়ালা। কারন সম্পদ আজ আছেতো, কাল নেই; আজ নেইতো, কাল হতেও পারে।-লেখক]
৪. পেশাসমূহের মধ্যেও কুফূ বিবেচনা করা হবে। কারন, মানুষ পেশার আভিজাত্য নিয়ে গর্ব করে এবং পেশার নিকৃষ্টতার কারনে লজ্জাবোধ করে। [তবে, যেহেতু পেশাসমূহ নির্দিষ্ট নয় বরং পরিবর্তনশীল যেমন আজকে এক পেশা থেকে কিছুদিন পরেই উচ্চতর পেশায় কাজ করা সম্ভব বলে এই ব্যাপারেও ভিন্নমত আছে-লেখক]
[সারসংক্ষেপ। রেফারেন্সঃ ৪-০-৮০~৮৭]
৪. পেশাসমূহের মধ্যেও কুফূ বিবেচনা করা হবে। কারন, মানুষ পেশার আভিজাত্য নিয়ে গর্ব করে এবং পেশার নিকৃষ্টতার কারনে লজ্জাবোধ করে। [তবে, যেহেতু পেশাসমূহ নির্দিষ্ট নয় বরং পরিবর্তনশীল যেমন আজকে এক পেশা থেকে কিছুদিন পরেই উচ্চতর পেশায় কাজ করা সম্ভব বলে এই ব্যাপারেও ভিন্নমত আছে-লেখক]
[সারসংক্ষেপ। রেফারেন্সঃ ৪-০-৮০~৮৭]
ধর্মপরায়ণা
মুসাদ্দাদ....আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী করীম (সাঃ) ইরশাদ করেছেনঃ (সাধারনত) রমনীদেরকে চারটি গুণের অধিকারিনী দেখে বিবাহ করা হয়। যথাঃ
ক) তার ধন-সম্পদ
খ)তার বংশমর্যাদা
গ)তার সৌন্দর্য্য
ঘ)তার ধর্মপরায়ণতার জন্য।
ঘ)তার ধর্মপরায়ণতার জন্য।
তোমরা ধর্মপরায়ণা নারীকে বিবাহ করে ধন্য হও, অন্যথায় তোমার উভয় হস্ত অবশ্যই ধূলায় ধূসরিত হবে। (অর্থাৎ তুমি লাঞ্ছিত ও অপমানিত হবে। হাদীসে ধর্মপরায়ণা নারীকে প্রাধান্য দিতে বলা হয়েছে।) [আবূ দাঊদ-৩-১২০]
ইসমাঈল ইব্ন মাসঊদ (রঃ)...জাবির (রাঃ) বলেন, তিনি রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর সময় এক নারীকে বিবাহ করলেন। তাঁর সাথে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর সাক্ষাৎ হলে তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ হে জাবির, তুমি কি বিবাহ করেছো? তিনি বলেন, আমি বললামঃ জ্বি, হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ কুমারী, না-পূর্ব-বিবাহিতা? আমি বললামঃ বরং বিবাহিতা। তিনি বললেনঃ কেন একজন কুমারীকে বিবাহ করলে না, সে তোমার সাথে মন মাতানো আচরণ করতো? তিনি বলেন, আমি বললামঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমার কয়েকজন বোন রয়েছে। আমার ভয় হলো, সে আমার এবং তাদের মধ্যে দখলদারী সৃষ্টি করবে। তিনি বললেনঃ তা হলে তাই (ভাল)। নারীদেরকে তাদের ধর্ম, সম্পদ, এবং সৌন্দর্য্যের কারণে বিবাহ করা হয়ে থাকে। অতএব তুমি ধার্মিক মেয়ে বিবাহ করবে। আল্লাহ্ তোমার ভাল করুন। [৩-৩-৩৪৫]
কুমারী
কুমারী
আহ্মাদ ইব্ন হাম্বল...জাবির ইব্ন আবদুল্লাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) আমাকে জিজ্ঞাসা করেন, তুমি কি বিবাহ করেছ? আমি বলি, হাঁ। তিনি পুনরায় জিজ্ঞাসা করেন, সে কি কুমারী, নাকি অকুমারী? আমি বলি, অকুমারী। তিনি বলেন, তুমি কোন কুমারী স্ত্রীলোককে কেন বিবাহ করলে না, যার সাথে তুমি আমোদ-ফুর্তি করতে পারতে এবং সেও তোমার সাথে আমোদ-ফুর্তি করতে পারত? [আবূ দাঊদ-৩-১২০]
বন্ধ্যা না হওয়া
আহ্মাদ ইব্নে ইব্রাহীম ...মা'কাল ইব্নে ইয়াসার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী করীম (সাঃ) এর খিদমতে উপস্থি হয়ে বলে, আমি এক সুন্দরী এবং সদ্বংশীয় রমনীর সন্ধান পেয়েছি। কিন্তু সে কোন সন্তান প্রসব করে না (বন্ধ্যা)। আমি কি তাকে বিবাহ করব? তিনি বলেন, না। অতঃপর সে ব্যক্তি দ্বিতীয়বার এসে জিজ্ঞাসা করলে তিনি তাকে নিষেধ করেন। পরে তৃতীয়বার সে ব্যক্তি এলে তিনি বলেন, তোমরা এমন স্ত্রীলোকদের বিবাহ করবে, যারা স্বামীদের অধিক মহব্বত করে এবং অধিক সন্তান প্রসব করে। কেননা আমি (কিয়ামতের দিন) তোমাদের সংখ্যাধিক্যের কারণে (পূর্ববর্তী উম্মাতদের উপর) গর্ব প্রকাশ করব। [আবূ দাঊদ-৩-১২১]
ব্যভিচারিনী না হওয়া
ইবরাহীম ইব্ন মুহাম্মাদ তায়মী (রঃ) ...আমর ইব্ন শু'আয়ব তাঁর পিতার সূত্রে তাঁর দাদা হতে বর্ণনা করেন, মারছাদ ইব্ন আবূ মারছাদ ইব্ন আবূ মারছাদ গানাবী (রঃ) নামক এক ব্যক্তি ছিল খুব শক্তিশালী। সে মক্কা হতে মদীনায় কয়েদী বহন করতো। তিনি বলেন, আমি এক ব্যক্তিকে বহন করার জন্য আহ্বান করলাম। মক্কায় এক পতিতা ছিল--যার নাম 'আনাক'। সে (পতিতা) ছিল তার (মারছাদের) বান্ধবী। সে বের হয়ে দেওয়ালের ছায়ায় আমার কায়া দেখে বললেনঃ এ ব্যক্তি কে? মারাছাদ নাকি? তোমাকে স্বাগতম। হে মারছাদ! চল আজ রাত আমাদের নিকট (তাবুতে) অতিবাহিত কর। আমি বললামঃ হে আনাক! রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ব্যভিচার হারাম করেছেন। সে বলে উঠলেন; হে তাঁবুবাসীগন। এ দুলদুল (সজারু) যে তোমাদের কয়েদীকে বহন করে মক্কা হতে মদীনায় নিয়ে যায়। এরপর আমি (আত্মরক্ষার জন্য) 'খানদামা' পাহাড়ে আশ্রয় নিলাম। আমাকে আটজন লোক তালাশ করতে এসে আমার মাথার উপর দাঁড়িয়ে পেশা করে দিল। তাদের পেশাব আমার গায়ে পড়লো। কিন্তু আল্লাহ্ তা'আলা তাদেরকে আমাকে দেখা হতে অন্ধ করে দিলেন। আমি আমার সাথীর নিকট এসে তাকে বহন করে যখন 'আরাক' নামক স্থানে পৌঁছালাম, তখন তার শক্ত বেড়ী খুলে দিলাম। এরপর আমি রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ)-এর খিদমতে পৌঁছে আরয করলামঃ আমি কি 'আনাক'-কে বিবাহ করবো? তিনি নিশ্চুপ থাকলেন। তখন নাযিল হলোঃ
(কুরআনের আয়াত)
অর্থঃ ব্যভিচারিনী, তাকে ব্যভিচার অথবা মুশরিক ব্যতীত কেউ বিবাহ করে না। (২৪:৩) তখন রাসূলুল্লাহ আমাকে ডেকে আয়াত শুনিয়ে বললেনঃ তুমি তাকে বিবাহ করো না। [৩-৩-৩৪৭]
(কুরআনের আয়াত)
অর্থঃ ব্যভিচারিনী, তাকে ব্যভিচার অথবা মুশরিক ব্যতীত কেউ বিবাহ করে না। (২৪:৩) তখন রাসূলুল্লাহ আমাকে ডেকে আয়াত শুনিয়ে বললেনঃ তুমি তাকে বিবাহ করো না। [৩-৩-৩৪৭]
অন্যান্য
কুতায়বা (রঃ)...আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ (একদা) রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কে প্রশ্ন করা হল, কোন নারী উত্তম? তিনি বললেনঃ সে (স্বামী) যার প্রতি দৃষ্টিপাত স্বামীকে সন্তুষ্ট করে। সে আদেশ করলে তার আনুগত্য করে, এবং (স্ত্রী) নিজের ব্যাপারে ও তার ধন-সম্পদের ব্যাপারে যা অপছন্দ করে, এমন কাজ করে তার বিরোধীতা করে না। [৩-৩-৩৪৭]
মুহাম্মাদ ইব্ন আবদুল্লাহ্ ইব্ন ইয়াযীদ (রঃ)...আব্দুল্লাহ্ ইব্ন আমর ইব্ন আস (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, সমগ্র পৃথিবী মানুষের ভোগ্য-বস্তু, আর পৃথিবীস্থ ভোগ্য বস্তুসমূহের মধ্যে সর্বোত্তম হলো পূন্যবতী স্ত্রী।
এই হল মোটামুটিভাবে পাত্র-পাত্রী নির্বাচনে উল্লেখ্যযোগ্য বিষয়সমূহ।
এই হল মোটামুটিভাবে পাত্র-পাত্রী নির্বাচনে উল্লেখ্যযোগ্য বিষয়সমূহ।
No comments:
Post a Comment