দুঃখজনক
হলেও সত্যি ইসলামের অন্যতম প্রধান বিধান সালাতের ওয়াক্ত নিয়ে পানি ঘোলা
করার এক হীন প্রচেষ্টা আমার চারপাশে চলছে। এতে অনেকে বর্তমান সময়সূচি নিয়ে
বিভ্রান্ত হয়ে যাচ্ছেন। আজকে আমি প্রসিদ্ধ হাদীসগ্রন্থসমূহ থেকে সালাতের
ওয়াক্ত যেসব হাদীস আছে সেগুলো এবং যেগুলোর ব্যাখ্যা আছে সেগুলো ব্যাখ্যাসহ
তুলে ধরব। আশাকরি আমাদের সকলের ভাল লাগবে। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সিরাতুল
মুস্তাকিমে চলার তৌফিক দান করুন। আমীণ।
৫ ওয়াক্ত সালাত নিয়ে
হাদিসগ্রন্থ সমূহে আসা হাদিসসমূহ একসাথে লিখে পোস্ট দেয়া কষ্টসাধ্য। তাই
আজকে কেবল ফজরের সালাতের ওয়াক্ত নিয়ে আসা হাদিস সমূহ তুলে ধরব। মুসলিম শরীফ
হাতের কাছে নেই। থাকলে মুসলিম শরীফে থাকা হাদীসসমূহও দিতাম। আর হ্যা,
তৃতীয় বন্ধনীর ভিতরে যা লেখা হয়েছে সেগুলো আমার কথা।
ফজরের ওয়াক্ত
১. বুখারী শরীফ, দ্বিতীয় খন্ড, ইমাম মুহাম্মদ ইব্ন ইসমাঈল বুখারী (রঃ), ইসলামী ফাউন্ডেশন , পৃষ্ঠাঃ ২৭,২৮
৫৪৮. আম্র ইব্ন আসিম (রঃ).....যায়িদ ইব্ন সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন, তাঁরা নবী (সাঃ) এর সঙ্গে সাহরী খেয়েছেন, তারপর ফজরের সালাতে
দাড়িয়েছেন। আনাস (রাঃ) বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করলাম, এ দু'য়ের মাঝে কতটুকু
সময়ের ব্যবধান ছিল? তিনি বললেন, পঞ্চাশ বা ষাট আয়াত তিলাওয়াত করা যায়, এরূপ
সময়ের ব্যবধান ছিল।
৫৪৯. হাসান ইব্ন সাব্বাহ (রঃ)......আনাস ইবনে
মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর নবী (সাঃ) ও যায়িদ ইব্ন সাবিত (রাঃ)
একসাথে সাহরী খাচ্ছিলেন, যখন তাদের খাওয়া হয়ে গেল-আল্লাহর নবী (সাঃ)
(ফজরের) সালাতে দাঁড়িয়ে গেলেন এবং সালাত আদায় করলেন। কাতাদা (রঃ) বলেন,
আমরা আনাস (রাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, তাদের সাহরী খাওয়া থেকে অবসর হয়ে সালাত
শুরু করার মধ্যে কতটুকু সময়ের ব্যবধান ছিল? তিনি বললেন, একজন লোক পঞ্চাশ
আয়াত তিলাওয়াত করতে পারে এতটুকু সময়।
৫৫০. ইসমায়ীল ইব্ন আবূ
উওয়াইস(রঃ)....সাহ্ল ইব্ন সা'দ (রাঃ) থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, আমি আমার
পরিবার-পরিজনের সাথে সাহরী খেতাম। খাওয়ার পর রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর সঙ্গে
ফজরের সালাত পাওয়ার জন্য আমাকে খুব তাড়াহুড়া করতে হত।
৫৫১.
ইয়াহ্ইয়া ইব্ন বুকাইর (রঃ)....আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
মুসলিম মহিলাগন সবাঙ্গ চাদরে ঢেকে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর সঙ্গে ফজরের
জামা'আতে হাযির হতেন। তারপর সালাত আদায় করে তারা যার যার ঘরে ফিরে যেতেন।
আবছা আঁধারে কেউ তাঁদের চিনতে পারত না।
২. মুয়াত্তা ,প্রথম পর্ব, পৃষ্ঠাঃ ৫৮~৬২ ইমাম মালিক (রঃ), ইসলামি ক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ।
রেওয়ায়ত ৩
আতা ইব্ন ইয়াসার (রঃ) বলেনঃ এক ব্যাক্তি রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর নিকট আসিল
এবং ফজর নামাযের সময় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করিল। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) সেই লোকের
প্রশ্নের উত্তরদানে বিরত রহিলেন। দ্বিতীয় দিন ফজর (সুবহ্-এ সাদিক) হইলে পড়
তিনি ফজরের নামায পড়িলেন। তারপরের দিন ফজর পড়িলেন (ভোরের আলো) পূর্ণাঙ্গ
প্রকাশিত হওয়ার পর। অতঃপর তিনি বলিলেনঃ নামাযের সময় সম্পর্কে প্রশ্নকারী
কোথায়? (সেইলোক) বলিলঃ আমিই সেই ব্যাক্তি ইয়া রাসূলুল্লাহ। তিনি বলিলেনঃ
এতদুভয়ের মধ্যবর্তী মুহূর্তগুলিই ফজর নামাযের সময়।
রেওয়ায়েত ৪
নবী করীম (সাঃ) এর সহধর্মিণী আয়েশা (রাঃ) বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) যখন ফজর
পড়িতেন তখন মেয়েলোকেরা নামায আদায়ের পর তাহাদের চাদর মুড়ি দিয়া (ঘরের
দিকে) ফিরিতেন, অন্ধকারের জন্য তাঁহাদিগকে চেনা যাইত না।
রেওয়ায়েত ৬
নাফি' (রঃ) হইতে বর্ণিত- উমর ইব্ন খাত্তাব (রাঃ) তাঁহার (অধীনস্থ)
কর্মকর্তাদের নিকট লিখিয়াছিলেনঃ “ আর ফজর (পড়িও) যখন নক্ষত্রসমূহ
পরিষ্কারভাবে প্রকাশিত হয় এবং পরস্পর খাপিয়া যায়।” [চিঠির অংশবিশেষ]
রেওয়ায়েত ৭
মালিক ইব্ন আসবাহী (রাঃ) হইতে বর্ণিত-উমর ইব্ন খাত্তাব (রাঃ) আবু মূসা
আশ'আরী (রাঃ)-এর নিকট (পত্র) লিখিয়াছেনঃ “আর নক্ষত্রসমূহ যখন (ফজরের আলোতে)
উদ্ভাসিত হয় এবং একে অপরের সহিত খাপিয়া যায় তখন ফজর পড়। আর ফজর নামাযে
মুফাছ্ছল হইতে দুইটি দীর্ঘ সুরা পাঠ কর। [পত্রাংশ]
রেওয়ায়েত ৯
আবদুল্লাহ্ ইব্ন রাফি' (রঃ) আবু হুরায়রা (রাঃ)-এর নিকট নামাযের সময়
সম্পর্কে প্রশ্ন করিলেন। উত্তরে আবু হুরায়রা (রাঃ) বলিলেনঃ “আর ফজর পড় গাবস
অর্থাৎ গলসে-রাত্রির অন্ধকার কিছুটা অবশিষ্ট থাকিতে।” [অংশবিশেষ]
৩. তিরমিযী শরীফ , প্রথম খন্ড , পৃষ্ঠাঃ ১৫০,১৫১ ইমাম আবূ ঈসা আত তিরমিযী (রঃ), ইসলামিক ফাউন্ডেশন।
১৫৩. কুতায়বা ও আল-আনসারী (রঃ)...আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূল
(সাঃ) ফজরের সালাত আদায় করতেন, পরে মহিলারা চাদর লেপটে ঘরে ফিরে যেত কিন্তু
আঁধারের কারনে তাদের চেনা যেত না।
এই বিষয়ে ইব্ন উমর, আনাস, কায়লা বিন্ত মাখারাম (রাঃ) থেকেও হাদীস বর্ণিত রয়েছে। ইমাম আবূ ঈসা তিরমিযী (রঃ) বলেন, আইশা (রাঃ) বর্ণিত এই হাদীসটি হাসান ও সহীহ। যহরী ও উরওয়া (রঃ)-আইশা (রাঃ) সূত্রে এই হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।
আবু বকর, উমর (রাঃ)-এর মত একাধিক ফকীহ সাহাবী ও পরবর্তী যুগের তাবিঈগন এই হাদীসটির মর্মানুসার সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।
ইমাম শাফিঈ, আহমদ ও ইসহাকও (রঃ) এই অভিমত ব্যাক্ত করেছে। গালাস বা আঁধারের
রেশ থাকতেই ফজরের সালাত আদায় করা মুস্তাহাব বলে তাঁরা অভিমত পোষন করেন।
১৫৪. হান্নাদ (রঃ)......রাফি ইব্ন খাদীজ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, আমি
রাসূল (সাঃ) কে বলতে শুনেছিঃ তোমরা ইসফার অর্থাৎ চতুর্দিক ফর্সা হয়ে এলে
ফজরের সালাত আদায় করবে। কেননা এতে রয়েছে বিরাট ছাওয়াব।
মুহাম্মাদ
ইব্ন ইসহাক (রঃ)--এর সূত্রে শু'বা এবং ছাওরী (রঃ)ও এই হাদীসটি রিওয়ায়াত
করেছেন। আসিম ইব্ন উমর ইব্ন কাতাদা থেকে মুহাম্মদ ইব্ন আজলানও এটির
রিওয়ায়াত করেছেন।
এই বিষয়ে আবূ বারযা আসলামী, জাবির ও বিলাল (রাঃ) থেকেও হাদীস বর্ণিত আছে।
ইমাম আবু ঈসা তিরমিযী (রঃ) বলেন, রাফি ইব্নে খাদীজ (রাঃ) বর্ণিত হাদীসটি হাসান ও সহীহ।
সাহাবী ও তাবিঈগনের অনেকেই চতুর্দিক ফর্সা হয়ে এলে ফজরের সালাত আদায় করার
মত গ্রহন করেছেন। (ইমাম আবু হানীফা) সুফইয়ান ছাওরীরও অভিমত এ-ই।
ইমাম শাফিঈ, আহমদ ও ইসহাক (রঃ) বলেনঃ ইসফার অর্থ হল সন্দেহাতীতভাবে ফজরের উন্মেষ ঘটা। সালাত বিলম্বে আদায় করা এর মর্ম নয়।
৪.আবু দাউদ শরীফ, প্রথম খন্ড, পৃষ্ঠাঃ২৩৫~২৩৬, ইমাম আবূ দাঊদ সুলায়মান
ইবনুল আশ'আস আস্-সিজিস্তানী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ ।
৪২৩.
আল-কানাবী......আয়েশা (রাঃ) হতে বর্নিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ)
এমন সময় ফজরের নামায পড়তেন যে, মহিলারা চাদর গায়ে দিয়ে প্রত্যাবর্তন করত
এবং অন্ধকারে কারনে তাদের চেনা যেত না। - {বুখারী, মুসলীম , ইব্ন
মাজা , নাসাঈ , তিরমিযী }
৪২৪. ইসহাক …...... রাফে ইব্ন খাদীজ
(রাঃ) হতে বর্ণিত । তিনি বলেন , রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন : তোমরা পূর্ব
দিগন্ত পরিষ্কার হবার পর ফজরের নামায আদায় করবে ; কেননা এর মধ্যে
তোমাদের জন্য উত্তম বিনিময় রয়েছে - {নাসাঈ , ইব্ন মাজা , তিরমিযী )।
৫. সুনানু নাসাঈ শরীফ, প্রথম খন্ড, পৃষ্ঠা-২৫৮~২৫৯, ইমাম আবু আবদির
রাহমান আহ্মদ ইব্ন শু'আয়ব আন্-নাসাঈ (রঃ), ইসলামিক ফাউন্ডেশন
বাংলাদেশ।
৫৪৬. কুতায়বা (রঃ)...আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি
বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এমন সময়ে ফজরের সালাত আদায় করতেন যে, মহিলাগন চাদর
আবৃত অবস্থায় বাড়ি ফিরে যেতেন অথচ অন্ধকারের কারনে তাদের চেনা যেত না।
৫৪৭. ইসহাক ইব্ন ইবরাহীম (রঃ).....আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেনঃ
মহিলাগন রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর সঙ্গে চাদর পরিহিত অবস্থায় ফজরের সালাত আদায়
করে বাড়ি ফিরতেন আর অন্ধকারের কারনে তাঁদের কেউ চিনতে পারত না।
৫৪৯.
উবাদুল্লাহ ইব্ন সাঈদ (রঃ)...রাফি ইব্ন খাদীজ (রাঃ) সূত্রে নবী (সাঃ)
হতে বর্নিত। তিনি বলেনঃ তোমরা ফজরের সালাত ফর্সা হলে পড়বে।
৫৫০.
ইবরাহীম ইব্ন ইয়াকুব (রঃ)...মাহমূদ ইব্ন লবীদ (রঃ)-এর মাধ্যমে তাঁর আনসার
সম্প্রদায়ের কতিপয় ব্যক্তি হতে বর্নিত। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ ফজরের
সালাত যতই ফর্সা হওয়ার পর আদায় করবে, ততই তোমাদের অধিক সওয়াবের কারণ হবে।১
১. হাদীসে ফজরের সালাত অন্ধকারে এবং ফর্সা হওয়ার পর আদায় করা সম্পর্কে
উল্লেখ রয়েছে। ইমাম তাহবী (রঃ) এ ধরনের হাদীসের মধ্যে এভাবে সমন্বয় করেন
যে, অন্ধকারে ফজরের সালাত শুরু করবে এবং শেষ করবে ভোর ফর্সা হলে। ইমাম
বায়হাকী (রঃ) হযরত মুআয (রাঃ) সূত্রে বর্ণনা করেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তাঁকে
ফজরের সালাত শীতকালে সকালে এবং গ্রীষ্মকালে বিলম্বে পড়তে বলেছিলেন। এ
হাদীসের অনুসরণ করা হলে সমস্ত হাদীসের একটা মীমাংসা হয়ে যায়।
৫৫৩.
ইসমাঈল ইব্ন মাসঊদ ও মুহাম্মদ ইব্ন আবদুল আ'লা (রঃ)...আনাস ইব্ন মালিক
(রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ)... আর যখন দৃষ্টি বিস্তৃত
হতো (অর্থাৎ ফর্সা হওয়ার কারনে দূর পর্যন্ত দেখা যেত) তখন ফজরের সালাত
আদায় করতেন। [হাদীসের অংশবিশেষ]
৬. মেশকাত শরীফ, দ্বিতীয় জিলদ, পৃষ্ঠাঃ ১৬৭~১৭৩, মাওলানা নূর মোহাম্মদ আ'জমী (রঃ), এমদাদিয়া পুস্তকালয়।
৫৩৪----(১) হযরত আবুদুল্লাহিবনে আমর (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ)
বলিয়াছেনঃ ….. এবং ফজরের সময় ঊষার উদয় হইতে যে পর্যন্ত না সূর্যোদয় আরম্ভ
হয়। [হাদীসের অংশবিশেষ]
৫৩৫---(২) হযরত বুরায়দা (রাঃ বলেন, এক
ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) কে নামাযের সময় সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করিল। তিনি
বলিলেনঃ আমাদের সহিত এই দুই দিন নামায পড়। (প্রথম দিন--) অতঃপর তাঁহাকে
[বেলাল (রাঃ) কে) হুকুম করিলেন, তিনি ফজরের এক্বামত বলিলেন—যখন ঊষা (সুবহে
সাদেক) উদয় হইল। [২য়দিন] তৎপর ফজর পড়িলেন এবং উহা ঊষা খুব পরিষ্কার হওয়ার
পর পড়িলেন। অতঃপর হুযূর বলিলেন, নামাযের সময় সম্পর্কে জিজ্ঞাসাকারী
ব্যাক্তিটি কোথায়? সে বলিল, ইয়া রাসূলুল্লাহ্! এই যে আমি। তিনি বলিলেন,
তোমাদের নামাযের সময় তোমরা যাহা (যে দুই সীমা) প্রত্যক্ষ করিলে তাহার
মধ্যে।-মুসলিম। [হাদীসের অংশবিশেষ]
৫৩৬---(৩) হযরত ইবনে আব্বাস
(রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলিয়াছেনঃ হযরত জিবরীল (আঃ) খানায়ে কা'বার
নিকট দুইবার আমার ইমামতি করিয়াছেন। (প্রথমবারে)....আর ফজর পড়াইলেন যখন
রোজাদারের খানাপিনা হারাম হয় (অর্থাৎ, উষা আরম্ভ হয়)। যখন দ্বিতীয় দিন
আসিল......অবশেষে ফজর পড়াইলেন এবং খুব ফর্সা উষায় পড়াইলেন। অতঃপর আমার
প্রতি লক্ষ্য করিলেন এবং বলিলেন, হে মুহাম্মদ! ইহা আপনার পূর্বেকার নবীগনের
(নামাযের) সময়। নামাযের সময় এই দুই সময়ের মধ্যে।--আবু দাঊদ ও তিরমিযী
[হাদীসের অংশবিশেষ]
৩৫৮---(৩) হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) হইতে
বর্ণিত আছে, তিনি নিজ প্রশাসকদের নিকট লিখিলেন, “এবং ফজর পড়িবে যখন
তারকারাজি পরিষ্কার হয় এবং চমকে!”-মালেক। [হাদীসের অংশবিশেষ]
কোরআনে
রহিয়াছে, নেক কাজের দিকে ধাবিত হও! এই আয়াত এবং কতিপয় হাদীস হইতে বুঝা যায়
যে, প্রত্যেক ওয়াক্তের নামাযই সকাল সকাল বা প্রথম ওয়াক্তে পড়া উত্তম। ইমাম
শাফেয়ী প্রভৃতি ইমামগন ইহারই অনুসরন করেন। পক্ষান্তরে অপর কতক হাদীসের
হইতে প্রমানিত হয় যে, গরমের দিনে যোহরের নামায কিছু ঠান্ডা পড়িলে পড়া,
আছরের নামায সকল সময় প্রথম ওয়াক্ত হইতে কিছু গৌনে পড়া, এশার নামাযও বিলম্বে
এবং ফজরের নামায বরাবরই উষা ফর্সা হইয়া গেলে পড়াই উত্তম। ইমাম আবু হানীফা
(রঃ) ইহারই অনুসরণ করেন। তাঁহাদের মত মোস্তাহাব ওয়াক্তের প্রথম পড়া হইলেই
সকাল সকাল পড়া হইল।--অনুবাদক। [অন্যান্য নামাযের ওয়াক্তের বর্নণা যথাসময়ে
আসবে---রবীন]
৫৪০---(১) হযরত সাইয়্যার ইবনে সালামা (রাঃ) বলেন, আমি ও
আমার পিতা (সাহাবী) হযরত আবু বারযা আসলামীর নিকট গেলাম। আমার পিতা তাঁহাকে
জিজ্ঞাসা করিলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ফরয নামায কিরূপে পড়িতেন? তিনি
বলিলেন, ….......... তিনি ফজরের নামায হইতে অবসর গ্রহন করিতেন যখন কেহ আপন
সঙ্গে বসা ব্যক্তিকে চিনিতে পারিত এবং (উহাতে) ষাট হইতে একশত আয়াত পর্যন্ত
পড়িতেন। [হাদীসের অংশবিশেষ]
৫৪১---(২) হযরত মুহাম্মদ ইবনে আমর ইবনে
হাসান ইবনে আলী (রাঃ) বলেন, আমরা সাহাবী হযরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ্কে নবী
করীম (সাঃ)এর নামায সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করিলাম। তিনি বলিলেন, …...........
এবং ফজর পড়িতেন অন্ধকারে।—মোত্তাঃ
ব্যাখ্যাঃ “ফজর পড়িতেন
অন্ধকারে”-- সাহবীগন এবাদতে রাত্রী জাগরণ করিতেন। অতএব, ফজর নামায সকালে
পড়াই তাঁহাদের পক্ষে সুবিধাজনক ছিল। অন্যথায় হুজুর (সাঃ) ফজরের নামা ঊষা
উত্তমরুমে পরিষ্কার হলেই পড়িতে বলিয়াছেন।
[আগামীতে যুহরের ওয়াক্ত সম্পর্কে লেখা হবে ইনশা আল্লাহ! সময় করে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।]
No comments:
Post a Comment