এক
কাস্টমার কেয়ারে ফোন করছি, কোন মেয়ে ধরছে আর আমার সমস্যার সমাধান হইছে এমন ঘটনা বোধকরি ঘটে নাই। মাঝে মাঝে ভাবি, এরা চাকরী করতে আসছে কি জন্য? পেটের ধান্ধায় আসছে বলেতো মনে হয় না। অন্যের ভাত মারতে আসছে।
এরা কমবয়সী এবং দেখতে সুন্দরী। আমার ধারনা এসি রুমে বসে বয়ফ্রেন্ডের সাথে আলাপ করার জন্যই এরা চাকরী নেয়। মাঝে মাঝে বয়ফ্রেন্ডকে গিফট করার জন্য টেকা দরকার আর নিজের জন্য আজাইরা ফেন্সী গুডসতো আছেই। বয়ফ্রেন্ডের সাথে গুজুর গুজুর, ফুসুর ফুসুর করার সময় কোন কাস্টমার ফোন দিলে বিরক্ত হওয়াটাই স্বাভাবিক। তখন ভাল কথাও তাদের ভাল লাগার কথা না। উপরন্তু এর শাস্তি স্বরূপ হুদাই তারে ওয়েটিং এ রাখে আর উলটাপালটা তথ্য দিয়া বিভ্রান্ত করে- যেন ইহ জিন্দেগীতে আর কেহ তার রসালাপে বিঘ্ন ঘটাতে না পারে।
#১ রবির একটা সিম নিছিলাম এক বড় ভাইয়ের কাছ থেকে। রিচার্জ করে চালু করার পর দেখি প্রতিদিন সকালে মেসেজ আসে আর ২.৩০ টাকা নাই হইয়া যায়। রবিতে ফোন করলে এক পোলা ধইরা কইল এইটাতো স্যার থার্ড পার্টি সার্ভিস, আপনে অমুক নাম্বারে করেন। করলাম। ধরল এক মাইয়া। মাইয়ার কথা বার্তার ভাব শুইন্যা মেজাজ ঠান্ডা রাখা কঠিন। কইল, বন্ধ করার জন্য ২৪ ঘন্টা লাগব। আপনে অমুক নাম্বারে মেসেজ পাঠান। বললাম, নাম্বারটা আবার বলেন। বলল, এই লিখে এই নাম্বারে মেসেজ পাঠান, বন্ধ হয়ে যাবে। বুঝতেছিনা আবার বলেন। মাইয়া গেল গরম হইয়া। কয় এতক্ষনতো বুঝছেন, আসল কথা বলার পরে বুঝলেন না কেন? কইলাম নেটওয়ার্ক ডিস্টার্ব করতেছেন। হে গরম হইয়া আবার কইল। আমি লিখ্যা লইলাম। ৩৬ ঘণ্টাও যখন কাজ হইল না আবার ফোন দিলাম। মাইয়া গেল গরম হইয়া। কয়, আপ্নেইতো এই সার্ভিস চালু করছেন। আরো হেনতেন ইত্যাদি ইত্যাদি!! পরে আবার রবিতে ফোন কইরা এক পোলারে দিয়া অভিযাগ নামা লিখাইয়া ঐটা বন্ধ করা লাগছে।
#২ পুরান একটা একটেল সিম ছিল। হারাইয়া গেছিল। তখন কোন রেজিস্ট্রেশন করা লাগত না। মেলাদিন পরে তুলতে গেলাম। ফাটা কপাল!! পড়লাম এক মহিলার কাছে। ঐ মহিলা আমার নাম্বার চেক কইরা কইল বহুদিন থেকে নাম্বার ইনেকটিভ। আপনার কাছে কাগজপাটিও কিছু নাই।ক্যামনে দেই আপ্নেরে?? কইলাম ঐটার এফেনেফ নাম্বার হইল এই আর আমার এখনকার ভোটার আইডি দেখেন।ঐ সিমতো রেজিস্টার্ড না কারো নামে কাজেই দিতে সমস্যা কি? মহিলা আমার কোন কথাই শুনল না। দিল না। পরে অফিসে আইসা এক কলিগরে ঘটনা বললাম। ওনার আবার একসময় ফ্লেক্সির বিজনেস ছিল। উনি আমার কাছে থেকে ১০০ টাকা নিলেন আর নাম্বারটা লিখে নিলেন। পরের দিন আমি আমার সিম পেয়ে গেলাম।
#৩ অনলাইনের একটা সাইটে প্রায় তিন হাজার টাকার বইয়ের অর্ডার করছি। কনফার্মেশনের জন্য এডমিন ফোন করছে। বলেনতো মহিলা না পুরুষ?? ঠিকই ধরছেন!! কইল ১০০০ টাকা আগে বিকাশ করতে হবে তাইলে উনারা বই কিনবে। আমি বললাম, নাম্বারটা বলেন, করে দেই। উনি বললেন আমি মোবাইলে টুকে নিলাম। নিয়ে রিপিট করে বললাম, নাম্বার ঠিক আছে??? কোন উত্তর নাই। আবার বললাম নাম্বার। বলে বললাম, ঠিক আছে?? এই বার বলল, কি ঠিক আছে?? আমি বললাম, আপ্নের নাম্বার রিপিট করতেছি ঠিক আছে কিনা দেখেন। রিপিট করার পর বলল, ঠিক আছ। তারপর বলল, আচ্ছা আপনি যদি নাম্বার না বলেই বলেন ঠিক আছে কিনা তবে আমি কিভাবে বুঝব যে, কি ঠিক আছে??[মাইয়া গরম] আমি কইলাম, দেখেন নেটওয়ার্ক প্রবেবলি ডিস্টার্ব করতেছে। আপনার কথাও মাঝে মাঝে কেটে কেটে আসতেছে। আমি কেন নাম্বার না বলে আপনার সাথে ঠিক আছে ঠিক আছে বলব??[ মাইয়া চুপ]
চাকুরী করার ইচ্ছা থাকলে ভালামত চাকরী করেন আর না থাকলে বাসায় গিয়া ভাতের মাড় গালেন গা। আরেক বেডার ভাত মাইরেন না।
দুই
কাস্টমার কেয়ারে চাকুরী করার জন্য যে ছেলেরাই ফিট তার প্রমাণ আজকে আবারও পেলাম।
অনলাইনে কিছু বই কেনার অর্ডার করেছিলাম কিছুদিন আগে। তখন আমাকে জানানো হল ১০০০টাকা অগ্রিম দিলে তারা বই কিনবেন। আমি তাদের বিকাশ নাম্বার নিলাম। মার্চেন্ট একাউন্ট নাম্বার হওয়াতেই বিপত্তিটা বাধে। এখানে মানি পেমেন্ট করতে হবে পারসোনাল নাম্বার একাউন্ট থেকে। আমার একাউন্ট চেক করে দেখি ইনএকটিভির কারনে ব্লক হয়ে আছে। বাজারে যারা এজেন্ট আছেন তাদের কাছেও পারসোনাল একাউন্টের লিমিট শেষ। এটা দু'দিন আগের ঘটনা। এই দু'দিন অফিসের ব্যস্ততার কারনে আর এদিকে মনোযোগ দিতে পারিনি।
আজকে আবার চেষ্টা করার জন্য বের হব এমন সময় আবার ঐ মেয়েটা ফোন দিল। [আগের স্ট্যাটাসে বিস্তারিত]
+ হ্যালো স্যার। আপনারতো ১০০০ টাকা পাঠানোর কথা ছিল। আপনি টাকা না পাঠালেতো আমরা বইগুলো কিনতে পারছি না।
- জ্বী, কিন্তু আপনাদেরটাতো মার্চেন্ট একাউন্ট, ওটাতে টাকা পাঠাতে হলেতো পারসোনাল একাউন্ট থেকে পাঠাতে হবে। আমারটাতো ব্লক। দোকানে গিয়েছি তাদেরটারও লিমিট শেষ হয়ে গিয়েছে।
+ কি বলেন? বিকাশের এত এজেন্ট আছে......
- আমার এখানে ৪ জন এজেন্ট আছে। সবাই আমাকে একই কথা বলছে। [এই কথাটা আংশিক সত্য। ৪টার মধ্যে দুইটা দোকান বন্ধ ছিল। অন্য ২টা থেকে এই কথা বলছে।]
+স্যার, আমাদের এখানে প্রতিদিন ৪-৫ হাজার টাকার বিকাশ আসে। আপনি যেমন বলছেন তেমনতো হবার কথা না।
-তারমানে আমি মিথ্যা বলছি?
+ আমি কি বলেছি আপনি মিথ্যা বলছেন?
- তাহলে এমন হবার কথা না মানে কি?
+ ওরা অনেক সময় না দিতে পারলে উলটা পালটা বুঝ দিয়ে দেয়।
- না, না, তা হবে কেন...আমি এখন আবার বের হচ্ছি। দেখি দেয়া যায় কিনা।
+ ঠিক আছে স্যার। ওদের সাথে আমাদের একটু কথা বলিয়ে দিয়েন।
-ওকে।
গেলাম বিকাশের দোকানে। ফোন দিলাম কাস্টমার কেয়ারে। কপাল ভাল ছিল। এক ছেলে ধরল।
+ হ্যালো, আমারতো একটা অর্ডার কনফার্মেশনের জন্য ১০০০ টাকা পাঠানোর কথা ছিল। আপনাদেরটাতো মার্চেন্ট একাউন্ট পারসোনাল নাম্বার থেকে করতে হবে। আপনাদের এখান থেকে বলেছিল যে, অনেক সময় না পারলে উলটাপালটা তথ্য দেয় আর কথা বলিয়ে দিতে বলছিল এজেন্টের সাথে।
-ঠিক আছে স্যার, দিন।
[ কথা বলল। আমি দেখলাম যে, এজেন্ট কিছু কোড লিখে নিল। আমার ধারনা চিট কোড টাইপ কিছু একটা হবে। কথা বলার পরে আমি আবার নিলাম]
+ আচ্ছা আপনাদের এখানে থেকে যে মহিলা ফোন দিয়েছিল তিনি কি "*******" মালিক নাকি?
- (হাসি) জ্বী না স্যার।
+ তাহলে কি কর্মচারী?
- জ্বী স্যার। আমি জানি না কি হয়েছে। আপনি কেন এই ধরনের প্রশ্ন করেছেন।
+ না, উনার কথা বার্তার ধরনতো খুবই ভাল। সেজন্য আরকি।
- (হাসি) আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত স্যার। আমি উনাকে বলে দিচ্ছি। আর আপনার এজেন্টকেও আমি বলেদিয়েছি। আমি আবার আপনাকে ফোন করে জেনে নেব একটু পর।
+ ওকে থ্যাঙ্কস।
এজেন্ট ব্যাটা চিটকোড ইউজ করতে রাজি হল না। বলে কিনা এভাবে সে টাকা পাঠাতে পারবে না।
একটু পর আবার ফোন আসল। আমি ঘটনা জানাতেই সে বলল, এই সিস্টেম নাকি বিকাশে নতুন চালু হয়েছে। তাই অনেকে ভয়ে পাঠাতে চায় না। আমি চাইলে সে তার পারসোনাল নাম্বার দিবে। ওটাতে পাঠালে সে ট্রান্সফার করে দেবে। আমি দেখলাম খুবই ভাল প্রস্তাব। রাজি হওয়াতে সে নাম্বার মেসেজ করে দিল। আমি পাঠিয়ে দিলাম। আর সেও আমাকে আবার ফোন দিয়ে কনফার্ম করল, যে টাকা পৌছে গেছে। একটু আগে আবার মেসেজ আসছে আমার অর্ডার এপ্রুভ হয়েছে।
একটু পর আবার ফোন আসল। আমি ঘটনা জানাতেই সে বলল, এই সিস্টেম নাকি বিকাশে নতুন চালু হয়েছে। তাই অনেকে ভয়ে পাঠাতে চায় না। আমি চাইলে সে তার পারসোনাল নাম্বার দিবে। ওটাতে পাঠালে সে ট্রান্সফার করে দেবে। আমি দেখলাম খুবই ভাল প্রস্তাব। রাজি হওয়াতে সে নাম্বার মেসেজ করে দিল। আমি পাঠিয়ে দিলাম। আর সেও আমাকে আবার ফোন দিয়ে কনফার্ম করল, যে টাকা পৌছে গেছে। একটু আগে আবার মেসেজ আসছে আমার অর্ডার এপ্রুভ হয়েছে।
জাতির বিবেকের কাছে আমার প্রশ্ন ঐ মাইয়া থাকলে এই কাজ হত কিনা???
No comments:
Post a Comment