মানুষ আমার কাছে একটি আগ্রহদ্দীপক সৃষ্টি। আরও আগ্রহদ্দীপক হল মানুষের চরিত্রের বিভিন্ন দিক। তবে সবচেয়ে আগ্রহদ্দীপক হল মানুষের দ্বিমুখীতা। উদাহরন দেই।
যখন বাসে থাকি তখন মনে হয়, এই সিএনজিগুলা এত বদমাশ কেন? ফুরুৎ করে ফাঁক দিয়ে ঢুকে যায়। সাইড দিতে চায় না।
আর যখন সিএনজিতে থাকি তখন মনে হয়, আরে বাসের ড্রাইভারগুলোর ধৈর্য্য বলে কিছু নেই। খালি হর্ণ দেয়।
কলিগদের মধ্যে কেউ কেউ নিজেদের প্রমোশন নিয়ে বসদের উপর খুব ক্ষুদ্ধ। তাদের প্রমোশন হচ্ছে না। তারা কি কম যোগ্যতা সম্পন্ন? তারা কি কাজ কম করে?- ইত্যাদি ইত্যাদি।
কিন্তু অধঃস্তনদের প্রতি যখন তাদের আচরন দেখি তখন মনে মনে ভাবি, এদের প্রমোশন হয় না - সেটা একদিক থেকে ভাল। এরা প্রমোশন পেয়ে বস হলে তখন আমাদের যে কি হাল হবে তা আল্লাহই জানে!
নির্বাচনের আগে সমঝোতার আগে "অমুকে" নির্বাচিত হলে কি করবে সেটাতো সবাই জানে। কিছুদিন আগে কি করেছে মনে নাই?
আর সমঝোতা হবার পর, ওমুককে দিয়েই কাজ হবে। যে এত ঘটনা ঘটাতে পেরেছে! সে-ই আমাদের দাবি-দাওয়া এনে দিতে পারবে।
বাসে প্রচন্ড ভীড়। তবুও বাস সাইড করে হেল্পার লোক তুলছে। হেল্পারকে গালি দিয়ে মুখে ফেনা তুলে ফেললাম। আর অন্যদিন ঠেলাঠেলি করে নিজেই লোকভর্তি বাসে উঠে পড়লাম!
বাজে আম্পায়ারিং যখন আমাদের বিপক্ষে যায় তখন আমরা ফুঁসে উঠি। আর যদি পক্ষে যায় তাহলে আমরা খুশি। কেউ কেউ আমার আম্পায়ারদের দেশপ্রেমিক বানাই!
প্রেমে পড়লে বা পটাতে চাইলে যাদের নিয়ে লুতুপুতু বেশি করি ব্যর্থ হলেই বাঁশ দিয়ে তাদের চাঁদে পাঠিয়ে দেই।
তামিমের যখন ফর্ম থাকে না তখন কলাম লেখা হয় তামিমের সমালোচনা করে। আর যখন তামিম রানে ফেরে তখন লেখা হয়, "সমালোচকদের জবাব দিলেন তামিম"
রাস্তা-ঘাটে যখন কোন অঘটন দেখি তখন রিকশার হুড তুলে দেই। সাথের জন যদি প্রতিবাদ করতে নেমে যেতে চায় তখন তাকে আটকাই। বলি, "ছেলেগুলো ভাল না। চলে এসো। যদি কোন ক্ষতি হয়!" , "এগুলো সামলানোর দায়িত্ব পুলিশের। তোমার এত মাথা ব্যথা কেন?" , "বাবা কারো সাথে ঝামেলায় জড়াস না।" - ইত্যাদি ইত্যাদি।
আর যখন নিজের উপর এসে বিপদ পড়ে তখন চিৎকার চেচাঁমেচি করি, "এতগুলো মানুষ চারদিকে, কেউ এগিয়ে এল না। সব কাপূরুষ!"
টিভির ঐ এডটার কথা মনে পড়ে গেল। বল এসে কাঁচে লাগল। গৃহকর্তী বেড়িয়ে এসে বলতে লাগল, "এই কে বল মেরেছে। কাঁচ যদি ভাঙত।" তখন এক পিচ্চি এসে বলল, "আম্মু বলটা দাওতো। আমি মেরেছি।" তখন বলতে লাগলেন, "ওরে আমার বাবুটা। তুমি বল মেরেছো? ভাবি দেখলেন কি চমৎকার টার্গেট?"
বিজ্ঞাপনটা এই টাইপেরই। ডায়লগগুলো হয়ত আমি গুলিয়ে ফেলেছি।
এমন অসংখ্য উদাহরণ দেয়া যাবে।
মিডিয়ার কথা যখন উঠলই তখন একটি সিনেমার কথা বলি। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সিনেমা। বরাবরের মতই নাম মনে নেই, কিন্তু কাহিনী মনে আছে। এক দুঃখী মাকে কেন্দ্র করে সিনেমার কাহিনী আবর্তিত হয়েছে। মায়ের চরিত্রে সম্ভবত সুচরিতা অভিনয় করেছিলেন। দুঃখী মায়ের সংসারে কেবল একটি ছেলে। ছেলেটি বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। জীবিকা অর্জনের পাশাপাশি ছেলের যত্ম নিয়ে মায়ের সারাদিন কেটে যায়। ছেলেটি যখন কিশোর তখন মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়। ঘটনাক্রমে একদিন কিছু মুক্তিযোদ্ধা তার বাড়িতে আশ্রয় নেয়। এদিকে পাক আর্মি খবর পেয়ে তার বাড়ি ঘেরাও করে। তার বুকে রাইফেল ঠেকিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের হদিস জানতে চায়। প্রথমে অস্বীকার করলেও মা পরে বুঝতে পারে উনি যদি কিছু না করেন তবে পাকবাহিনী ঘরে ঢুকে সবাইকে বের করে গুলি করে মারবে। তখন তিনি নিজের বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ছেলে তাদের সামনে এনে হাজি করেন। পাকবাহিনী তার চোখের সামনে তার একমাত্র ছেলেকে গুলি করে মারে।
এমনি হাজারো ত্যাগের মাধ্যমে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ অর্জিত হয়েছে।
যদি ভাল কিছু আমরা চাই তবে আমাদের ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। অন্যেরা ত্যাগ স্বীকার করবে এই আশায় আমি চোখ বন্ধ করে থাকব এমন নয়। আমি যদি চাই যে আমার পরিজন কারো কাছ থেকে কোন ফেবার পাক তাহলে অন্যেরা যেন আমার কাছ থেকে ফেবার পায় সেদিকে মনোযোগী হতে হবে।
আমি এদেশের মা-বাবাকে বলব, আপনার সন্তানকে পিছন থেকে টেনে না ধরে সামনের দিকে এগিয়ে দিন এবং সে যদি বিপদগ্রস্থ হয় তবে ধৈর্য্যধারন করুন। আর কখনো যদি সে কারো বিপদে এগিয়ে যায় এবং ক্ষতিগ্রস্থ হয় তবে তাকে তিরস্কার না করে উৎসাহ দিন। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করুন যে, আল্লাহ এরকম সাহসী সন্তান আপনাকে দিয়েছেন।
ধৈর্য্য ধরে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
যখন বাসে থাকি তখন মনে হয়, এই সিএনজিগুলা এত বদমাশ কেন? ফুরুৎ করে ফাঁক দিয়ে ঢুকে যায়। সাইড দিতে চায় না।
আর যখন সিএনজিতে থাকি তখন মনে হয়, আরে বাসের ড্রাইভারগুলোর ধৈর্য্য বলে কিছু নেই। খালি হর্ণ দেয়।
কলিগদের মধ্যে কেউ কেউ নিজেদের প্রমোশন নিয়ে বসদের উপর খুব ক্ষুদ্ধ। তাদের প্রমোশন হচ্ছে না। তারা কি কম যোগ্যতা সম্পন্ন? তারা কি কাজ কম করে?- ইত্যাদি ইত্যাদি।
কিন্তু অধঃস্তনদের প্রতি যখন তাদের আচরন দেখি তখন মনে মনে ভাবি, এদের প্রমোশন হয় না - সেটা একদিক থেকে ভাল। এরা প্রমোশন পেয়ে বস হলে তখন আমাদের যে কি হাল হবে তা আল্লাহই জানে!
নির্বাচনের আগে সমঝোতার আগে "অমুকে" নির্বাচিত হলে কি করবে সেটাতো সবাই জানে। কিছুদিন আগে কি করেছে মনে নাই?
আর সমঝোতা হবার পর, ওমুককে দিয়েই কাজ হবে। যে এত ঘটনা ঘটাতে পেরেছে! সে-ই আমাদের দাবি-দাওয়া এনে দিতে পারবে।
বাসে প্রচন্ড ভীড়। তবুও বাস সাইড করে হেল্পার লোক তুলছে। হেল্পারকে গালি দিয়ে মুখে ফেনা তুলে ফেললাম। আর অন্যদিন ঠেলাঠেলি করে নিজেই লোকভর্তি বাসে উঠে পড়লাম!
বাজে আম্পায়ারিং যখন আমাদের বিপক্ষে যায় তখন আমরা ফুঁসে উঠি। আর যদি পক্ষে যায় তাহলে আমরা খুশি। কেউ কেউ আমার আম্পায়ারদের দেশপ্রেমিক বানাই!
প্রেমে পড়লে বা পটাতে চাইলে যাদের নিয়ে লুতুপুতু বেশি করি ব্যর্থ হলেই বাঁশ দিয়ে তাদের চাঁদে পাঠিয়ে দেই।
তামিমের যখন ফর্ম থাকে না তখন কলাম লেখা হয় তামিমের সমালোচনা করে। আর যখন তামিম রানে ফেরে তখন লেখা হয়, "সমালোচকদের জবাব দিলেন তামিম"
রাস্তা-ঘাটে যখন কোন অঘটন দেখি তখন রিকশার হুড তুলে দেই। সাথের জন যদি প্রতিবাদ করতে নেমে যেতে চায় তখন তাকে আটকাই। বলি, "ছেলেগুলো ভাল না। চলে এসো। যদি কোন ক্ষতি হয়!" , "এগুলো সামলানোর দায়িত্ব পুলিশের। তোমার এত মাথা ব্যথা কেন?" , "বাবা কারো সাথে ঝামেলায় জড়াস না।" - ইত্যাদি ইত্যাদি।
আর যখন নিজের উপর এসে বিপদ পড়ে তখন চিৎকার চেচাঁমেচি করি, "এতগুলো মানুষ চারদিকে, কেউ এগিয়ে এল না। সব কাপূরুষ!"
টিভির ঐ এডটার কথা মনে পড়ে গেল। বল এসে কাঁচে লাগল। গৃহকর্তী বেড়িয়ে এসে বলতে লাগল, "এই কে বল মেরেছে। কাঁচ যদি ভাঙত।" তখন এক পিচ্চি এসে বলল, "আম্মু বলটা দাওতো। আমি মেরেছি।" তখন বলতে লাগলেন, "ওরে আমার বাবুটা। তুমি বল মেরেছো? ভাবি দেখলেন কি চমৎকার টার্গেট?"
বিজ্ঞাপনটা এই টাইপেরই। ডায়লগগুলো হয়ত আমি গুলিয়ে ফেলেছি।
এমন অসংখ্য উদাহরণ দেয়া যাবে।
মিডিয়ার কথা যখন উঠলই তখন একটি সিনেমার কথা বলি। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সিনেমা। বরাবরের মতই নাম মনে নেই, কিন্তু কাহিনী মনে আছে। এক দুঃখী মাকে কেন্দ্র করে সিনেমার কাহিনী আবর্তিত হয়েছে। মায়ের চরিত্রে সম্ভবত সুচরিতা অভিনয় করেছিলেন। দুঃখী মায়ের সংসারে কেবল একটি ছেলে। ছেলেটি বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। জীবিকা অর্জনের পাশাপাশি ছেলের যত্ম নিয়ে মায়ের সারাদিন কেটে যায়। ছেলেটি যখন কিশোর তখন মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়। ঘটনাক্রমে একদিন কিছু মুক্তিযোদ্ধা তার বাড়িতে আশ্রয় নেয়। এদিকে পাক আর্মি খবর পেয়ে তার বাড়ি ঘেরাও করে। তার বুকে রাইফেল ঠেকিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের হদিস জানতে চায়। প্রথমে অস্বীকার করলেও মা পরে বুঝতে পারে উনি যদি কিছু না করেন তবে পাকবাহিনী ঘরে ঢুকে সবাইকে বের করে গুলি করে মারবে। তখন তিনি নিজের বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ছেলে তাদের সামনে এনে হাজি করেন। পাকবাহিনী তার চোখের সামনে তার একমাত্র ছেলেকে গুলি করে মারে।
এমনি হাজারো ত্যাগের মাধ্যমে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ অর্জিত হয়েছে।
যদি ভাল কিছু আমরা চাই তবে আমাদের ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। অন্যেরা ত্যাগ স্বীকার করবে এই আশায় আমি চোখ বন্ধ করে থাকব এমন নয়। আমি যদি চাই যে আমার পরিজন কারো কাছ থেকে কোন ফেবার পাক তাহলে অন্যেরা যেন আমার কাছ থেকে ফেবার পায় সেদিকে মনোযোগী হতে হবে।
আমি এদেশের মা-বাবাকে বলব, আপনার সন্তানকে পিছন থেকে টেনে না ধরে সামনের দিকে এগিয়ে দিন এবং সে যদি বিপদগ্রস্থ হয় তবে ধৈর্য্যধারন করুন। আর কখনো যদি সে কারো বিপদে এগিয়ে যায় এবং ক্ষতিগ্রস্থ হয় তবে তাকে তিরস্কার না করে উৎসাহ দিন। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করুন যে, আল্লাহ এরকম সাহসী সন্তান আপনাকে দিয়েছেন।
ধৈর্য্য ধরে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
No comments:
Post a Comment