Featured Post

I SAID NO TO QUANTUM METHOD

পূর্বে পোস্ট আকারে প্রকাশিত। কারও সাথে ঝগড়া করার জন্য এটা দেইনি। নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করলাম। কেউ মানতে না পারলে আমার কিছু করার নেই।  আ...

Monday, July 27, 2015

মুক্ততদন্ত-২

ধর্মদ্রোহী বলে থাকে,
“ইতিহাস থেকে জানা যায় মুহাম্মদ সা: ধর্মগুরু ছিলেন ওয়ারাকা বিন-নোফেল, যে কিনা ছিলেন ইহুদি- খ্রিস্টানদের ধর্মপুস্তক তাওরাত, জবুর ও ইনজিল কেতাবে বিশেষজ্ঞ । কোরানে তাওরাত, জবুর ও ইনজিলের সাথে অনেক মিল থাকার এটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় কারণ”
এই প্রসঙ্গে আমি কিছু বলব না। ইতিহাস ও প্রামাণ্যগ্রন্থগুলো কি বলে সেটাই আগে দেখে নেই। ক্যারেন আর্মস্ট্রং তার গ্রন্থে লিখেন,
“মুহাম্মদ (সঃ) তাঁর কাজ নিতে (খাদিজা রাঃ এর ব্যবসার কাজ-লেখক) সম্মত হন এবং দুঃসাহসী অভিযাত্রায় পথে নামেন। সফরসঙ্গী জনৈক মায়সারা অসংখ্য অদ্ভূত ব্যাপার লক্ষ্য করেছিল, যথাযথভাবে তা খাদিজাকে অবহিত করেছে সে। এক মংক, দাবী করেছিল সে, তাকে এক পাশে ডেকে নিয়ে বলেছে মুহাম্মদ (সঃ) সেই পয়গম্বর আরব বিশ্ব যাঁর পথ চেয়ে আছে। পরে সবিস্ময়ে জানিয়েছিল সে, দুজন ফেরেশতা তাকে প্রখর সূর্য্যের রশ্মি থেক মুহাম্মদ (সঃ) ছায়া দিতে দেখার কথা। এসব ঘটনা শোনার পর খাদিজা সরাসরি চাচাত ভাই ওয়ারাকা ইবন নওফল, অর্থাৎ হানিফের সঙ্গে পরামর্শ করতে যান। নওফল খৃস্টধর্মে দীক্ষা নিয়েছিলেন এবং অন্যান্য ঐশীগ্রন্থ পাঠ করেছিলেন। ওয়ারাকাও আরব বিশ্বের পয়গম্বরের জন্য অধীর অপেক্ষায় ছিলেন, খাদিজার কাছে খবর পেয়ে চিৎকার করে ওঠেন তিনিঃ ‘একথা যদি সত্যি হয়, খাদিজা, মুহাম্মদই নিঃসন্দেহে আমাদের জাতির পয়গম্বর’”
[অনুবাদ, মুহাম্মদ : মহানবীর (সঃ) জীবনী, লেখকঃ ক্যারেন আর্মস্ট্রং, পৃষ্ঠাঃ ৯০- ৯১]
প্রথমবার রসূলুল্লাহ (সাঃ) এর নিকট ওহী আসার পর তিনি যখন খাদিজা (রাঃ)র কাছে ছুটে যান ভীত অবস্থায় তখন
“দ্রুত তাঁকে আশ্বস্ত করেছেন খাদিজা। ঈশ্বর এত নিষ্ঠুর আর খেয়ালী আচরণ করেন না। ঈশ্বর যেভাবে চান ঠিক সেভাবে জীবন যাপনের প্রয়াস পেয়েছেন মুহাম্মদ (সঃ) এবং প্রতিদানে ঈশ্বর কখনও তাঁকে হতাশ হতে দেবেন না”
“স্বামীকে আরও আশ্বাস দেয়ার জন্য খাদিজা তার চাচাত ভাই ওয়ারাকার সঙ্গে পরামর্শ করার প্রস্তাব দেন। ঐশী গ্রন্থ সম্পর্কে জ্ঞান ছিল ওয়ারাকার, অভিজ্ঞ মতামত দিতে পারবেন তিনি। ওয়ারাকার অবশ্য কোন সংশয়ই ছিল না। ‘সুসংবাদ!’ চট করে বলে উঠেছেন তিনিঃ ‘তুমি যদি আমাকে সত্যি বলে থাক, হে খাদিজা, ওর কাছে সর্বশ্রেষ্ঠ নামুসের আগমন ঘটেছে, বহু আগে মোজেসের কাছে যার আবির্ভাব ঘটেছিল, আর হ্যাঁ, তিনি তার জাতির পয়গম্বর। পরে, কা’বায় মুহাম্মদের (সঃ) সঙ্গে সাক্ষাৎ হলে এই ক্রিশ্চান পণ্ডিত একমাত্র ইশ্বরের নতুন পয়গম্বরের কাছে ছুটে গিয়ে তাঁর কপালে চুমু খেয়েছিলেন”
[অনুবাদ, মুহাম্মদ : মহানবীর (সঃ) জীবনী, লেখকঃ ক্যারেন আর্মস্ট্রং, পৃষ্ঠাঃ ৯৭]
বুখারী শরীফ পর্যালোচনা করলে আমরা এইসকল ঘটনার বিস্তারিত জানতে পারি। সংক্ষিপ্ত হোক বা বিস্তারিত মূল কথা এটাই যে, দুইবারই রসূলুল্লাহ (সাঃ) কে তার স্ত্রী খাদিজা (রাঃ) ওয়ারাকার সাথে পরামর্শ করতে নিয়ে যান। ওয়ারাকার যদি নবী (সাঃ)এর ধর্মগুরু হতেন তাহলে স্বাভাবিক যুক্তি বলে তিনি নিজেই ওয়ারাকার কাছে ছুটে যেতেন। তাছাড়া ওয়ারাকার ছিলেন খাদিজার (রাঃ) চাচাতো ভাই, রসূল (সাঃ) এর নয়। কাজেই ধর্মগুরু হবার দাবির অসাড়তা আরো গভীর ভাবে প্রমাণিত হয়। আর ওয়ারাকা বিন নওফল রসূলুল্লাহ (সাঃ) কে জাতির পয়গম্বর বলে উল্লেখ্য করেছেন। কাজেই তিনি অন্যের কাছে ধর্মশিক্ষা নেবেন না, বরং অন্যরাই তার কাছ থেকে ধর্মশিক্ষা নিবে। স্বাভাবিক যুক্তি এটাই বলে।
এই প্রসংগে আরো কিছু কথার অবতারনা করা যাক।
“খাদীজা (রাঃ) এইরূপে সান্ত্বনা দিয়া হযরতকে লইয়া বংশের বৃদ্ধ মুরব্বী চাচাত ভাই অরাকা ইবনে নওফেলের নিকট গেলেন। অরাকা সত্যান্বেষী সুজ্ঞানী লোক ছিলেন, অতি বৃদ্ধ হওয়ায় অন্ধ হইয়া গিয়াছিলেন। জাহেলিয়াতের যমানাতেই তিনি সত্য ধর্মের তালাশে সিরিয়া দেশে যাইয়া ঈসায়ী ধর্মীয় এক খাঁটি আলামের নিকট হইতে খাঁটি ঈসায়ী ধর্ম গ্রহন করিয়াছিলেন। তিনি এবরানী ভাষা লিখিতেন এবং এবরানী হইতে ইঞ্জিল কিতাবের আরবী তরজমাও করিতেন। তাহাতে পূর্বের আসমানী কিতাবসমূহে তাঁহার দক্ষতা ও পারদর্শিতা ছিল। তিনি নবীগনের প্রতি অহী ও অহীবাহক ফেরেশতা জিব্রিলের বিষয় জানিতেন”
[বোখারী শরীফ, পৃষ্ঠা-১০, ১ম খন্ড, হামিদিয়া লাইব্রেরী]
লক্ষ করার বিষয় এই যে, উপরোক্ত বিবরনীর মাধ্যমে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে অরাকা বিন নওফেল ভালভাবেই পড়তে-লিখতে জানতেন। এমনকি তিনি ভিন্ন ভাষা হতে আরবী ভাষায় ইঞ্জিলের তরজমা করেছেন। অথচ রসূলুল্লাহ (সাঃ) লেখাপড়া জানতেন না। এই প্রসঙ্গে ক্যারেন আর্মস্ট্রং তার গ্রন্থে লিখেন,
“মুহাম্মদ (সঃ)-এর লেখা-পড়া সম্পর্কে প্রাথমিক সূত্রে কোন উল্লেখ মেলে না। চিঠি লেখার প্রয়োজন হলে তিনি তা শ্রুতিলিখন করাতেন এবং আলীর মত সাক্ষর কেউ তা লিপিবদ্ধ করতেন। পড়া শোনা জানার ক্ষমতা সারাজীবন গোপন রাখতে এক বিরাট প্রতারণার প্রয়োজন হত। এটা তাঁর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের পরিপন্থী; তাছাড়া, এরকম একটা ব্যাপার চালিয়ে যাওয়া কঠিন ছিল, কেননা আপন গোত্রের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জীবন যাপন করেছেন তিনি”
[অনুবাদ, মুহাম্মদ : মহানবীর (সঃ) জীবনী, লেখকঃ ক্যারেন আর্মস্ট্রং, পৃষ্ঠাঃ ১০০]
আর কিছু বলার প্রয়োজন আছে বলে মনে করিনা। গুরু হলেন একাধিক ভাষায় পারদর্শী; অথচ তার শিষ্য একেবারেই নিরক্ষর!
যুক্তির কি ছিরি!

1 comment:

Unknown said...

ইসলাম বিদ্ধেষী অমুসলিমদের ইতিহাস থেকে তুমি আমাদের বাল শিখাইলা। তোমার আম্মার শত্রু তোমার আম্মাকে বেশ্যা বানাবে মিথ্যা বলে এটাই স্বাভাবিক। এই বিষয়টা বুঝছিস? এইবার দেখ ইসলাম সত্য ধর্মঃ https://youtu.be/ahc6UFX-J9A