Featured Post

I SAID NO TO QUANTUM METHOD

পূর্বে পোস্ট আকারে প্রকাশিত। কারও সাথে ঝগড়া করার জন্য এটা দেইনি। নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করলাম। কেউ মানতে না পারলে আমার কিছু করার নেই।  আ...

Saturday, July 11, 2015

মেয়ে




আপনারা যারা সায়েন্স ফিকশন পড়েন তারা নিশ্চয়ই জানেন যে, কোন কোন লেখক তার লেখায় ভবিষ্যতের এমন এক পৃথিবীর ধারনা দেন যেখানে কোন ছেলে নেই। মেয়েদের পৃথিবী। পৃথিবীর সমস্ত অপরাধের জন্য এককভাবে ছেলেদের দায়ী করে মূলত পৃথিবীর বিজ্ঞানীরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন, যে পুরুষ প্রজাতি বিলুপ্ত করা হলেই পৃথিবীতে শান্তি বজায় থাকবে।

কোন মানুষের লিংগ কি হবে সেটা একজোড়া ক্রোমোজমের উপর নির্ভর করে। XY ক্রোমজোম থাকলে ছেলে হয় আর XX ক্রোমজোম থাকলে হয় মেয়ে। ভবিষ্যতের পৃথিবী যেহেতু ছেলেমুক্ত হবে সেহেতু Y ক্রোমজোমের দরকার নেই। নতুন মেয়েবাচ্চার জন্য X ক্রোমজোমের জোড়াই যথেষ্ঠ। তাই শুধু মেয়ে দিয়েই বংশবৃদ্ধি করা সম্ভব এবং পৃথিবীতে শান্তি শৃংখলা রক্ষাও সম্ভব। এ সংক্রান্ত টানাপোড়ণ নিয়ে এগিয়ে যায় সায়েন্স ফিকশনের কাহিনী।

আমরা বিভিন্ন নাটক, সিনেমা, বইতে অসম প্রেমের কাহিনী দেখি। রাজপুত্র পছন্দ করে সাপুড়ের মেয়েকে, লাটসাহেবের মেয়ে পছন্দ করে ঠেলাওয়ালার ছেলেকে, ভবঘুরে ছেলেটাকে পছন্দ করে ক্লাশের সবচাইতে সুন্দরী মেয়েটা! দেখে আবেগে আপ্লুত হই। আহারে! কি গভীর ভালবাসা! ইসস! এমন যদি আমার জীবনেও হত!

বাঙ্গালীর জাত! অল্পেই আপ্লুত হয়।

কিন্ত বাস্তবতা এত সহজ নয়। বাস্তবের কঠিন চপোটাঘাতে যখন জীবনের সামনে দাড়াই তখন আর আবেগ থাকে না। হৃদয় কঠিন হয়ে যায়।

জীবনটা সিনেমা নয়। সিনেমায় যেমন দেখা যায় যে, নায়ক নায়িকার জন্য কত কিছু করছে। এক ঘুষিতে একশ' লোক ঘায়েল হয়ে যাচ্ছে, ছিনতাইকারীরা নায়কের পেটে ছুড়ি দিয়ে ঘাই না মেরে হাতে এক পোচ দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যাচ্ছে---আজব আজব কত কিছু!

বাস্তবে কি এত ডেসপারেট হওয়া সম্ভব? নিজের ভালবাসার জন্য? নিজের ভাললাগার জন্য? জানি না......

কে যেন (মনেহয় কাজী নজরুল ইসলাম) ভুল করে লিখে ফেলেছিলেন,

"এই পৃথিবীর যা কিছু মহান, চিরকল্যাণকর
অর্ধেক তাহার গড়িয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর"

এখানে কবিতায় কবি নারীদের ক্রেডিট দিয়েছেন, ডিসক্রেডিট দেন নি দুর্ভাগ্যজনকভাবে। চুশীল সমাজ নারীদের পক্ষে কথা বলতে গিয়ে প্রায়ই এই দু-লাইনের উদ্ধৃতি দিয়ে থাকেন। কিন্তু যা কিছু ধ্বংসাত্মক তার জন্য নারীকে অর্ধেক ক্রেডিট দিতে কবি ভুলে গেছেন। এখানে নারীকে বঞ্চিত করা হয়েছে মনে করি।

মেয়েদের প্রধান শত্রু মেয়েরাই। মেয়েরাই মেয়েদের ভাল দেখতে পারে না। নিজেদের প্রতি অন্তরে বিষ রেখে চলাফেরা করে।

আমার একফ্রেন্ড এক মেয়েকে পছন্দ করত। মেয়েটা উচ্চশিক্ষিত, পারবারিক অবস্থা ভাল। তার ত্রুটি একটাই। গায়ের রঙ কালো। ফ্রেন্ড যখন তার ফ্যামিলিকে ঐ মেয়ের কথা জানায় তখন প্রথম ও প্রধান ভেটো কার তরফ থেকে আসে বলেন তো? হ্যা, ঠিকই ধরেছেন। ছেলের মায়ের তরফ থেকে। তিনি তার রাজপুত্রের বিয়ে কোন কালোমেয়ের সাথে দিতে চান না। আসমানের কোন হুরপরীর সাথে ছেলের বিয়ে দেবেন বলে!

একমেয়ে একটা ছেলেকে ভালবাসত। ছেলেটা উচ্চশিক্ষিত, বড়লোক ফ্যামিলির। ছেলের আগের বিয়েটা টিকেনি। এছাড়াও ছেলে কোন দুরারোগ্য রোগে চিকিৎসাধীন ও ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছে। মেয়ে যখন বাসায় বলে তখন মেয়ের মা রাজি নন। রোগাক্রান্ত, ডিভোর্সী ছেলের সাথে মেয়ের বিয়ে দেবেন না।

কোন অবিবাহিত ছেলে যদি কোন ডিভোর্সী মেয়েকে বিয়ে করতে চায় ভালবেসে- সেখানেও একই প্রবলেম। ছেলের মা বিয়ে করাবেন না। মেয়ে যদি ছেলের চেয়ে বয়সে বড় হয় তবুও একই প্রবলেম। মেয়ের হাজারটা গুন থাকলেও তার কোন মূল্য মায়েদের কাছে থাকে না। তারা তাদের ছেলের বউ হিসেবে এমন মেয়েকে মেনে নেন না।

আচ্ছা মায়েদের মধ্যে এমন গোপন প্রতিযোগতী থাকে নাকি যে, আমার ছেলের বউ আপনার ছেলের বউয়ের চেয়ে সুন্দর? বা পারস্পারিক তুলনা থাকে? ছেলের শ্বশুড়বাড়ী থেকে এটা দিয়েছে, ওটা দিয়েছে? আপনারা কি পেয়েছেন?

এইগুলো নিয়ে খোটা দেবার প্রবণতা তো আছেই। "ভাবী, আপনার ছেলের জন্য তো আমার বোনঝি কে আনলেন না। এখন? আপনার ছেলেতো কালো মেয়ে বিয়ে করল!"

এমন বিষবাষ্প ছড়ানোর মহিলাও আশেপাশেই মজুত আছে।

এই পৃথিবীতে শান্তি বজায় রাখতে ছেলেমুক্ত হবার প্রয়োজন নেই। পুরুষ প্রজাতি থাকলে পৃথিবী যদি আগামী ৩০০ বছরের মধ্যে ধ্বংস হয় তবে শুধু মেয়েরা থাকলে আগামী ১০০ বছরের মধ্যেই মানব সভ্যতার মৃত্যু সুনিশ্চিত। কেয়ামত লাগবে না, পৃথিবী এমনিতেই ধ্বংস হয়ে যাবে।

No comments: