[আমার অলস মস্তিষ্কের চিন্তাভাবনা। যারা এখনো স্টুডেন্ট তারা সিরিয়াসলি নেবার আগে নিজের দায়িত্বে নিবেন।]
"কর্মমুখী শিক্ষা" বলে একটা কথা মাঝে মাঝে চোখের সামনে ভাসে। এই জিনিসটা আসলে কি, কেন ব্যবহার করা হয় সেটা আদৌ বুঝতে পারি নি। এখনো বোঝার মত কিছু চোখে পড়ে না। নিজজ্ঞানে যেটা উপলদ্ধি করতে পারি সেটা হল যে শিক্ষার দ্বারা ভবিষ্যতে কর্ম লাভের সুযোগ তৈরি করা যায় তাই মনেহয় কর্মমুখী শিক্ষা।
কাজের কথায় আসি। আমি যখন পড়াশুনা করতাম তখন কর্মক্ষেত্র নিয়ে আমার কোন ধারনাই ছিল না। যেটুকু ছিল সেটা হল যারা চাকুরী করাই বোধহয় আসল কাজ। তাই লেখাপড়া শিখে ভাল একটা চাকুরী জোগাড় করাটাই হল লেখাপড়া শেখার লক্ষ! বর্তমান প্রজন্মের ধারনা কি কে জানে! তবে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় ফ্যাক্টরি বা কোন প্রতিষ্ঠান ভিসিটের কোন ব্যবস্থা নেই বলে ভবিষ্যতে আমাদের জন্য কি রকম চাকুরী অপেক্ষা করছে তার ধারনা না থাকাটাই স্বাভাবিক।
এবার আসি ক্যারিয়ার প্রসঙ্গে। আমার মতে ক্যারিয়ার হল দুই প্রকারঃ
১। স্থায়ী
২। অস্থায়ী
স্থায়ীর উদাহরন দেই। যেমন ডাক্তার। যে ডাক্তার সে সারাজীবনই ডাক্তার। সে কারো উপর নির্ভরশীল না। কোথাও কোন চাকুরী না পেলে নিজে থেকেই প্র্যাকটিস করা যায়। শুরুটা যদিও খুবই কঠিন হবে সেক্ষেত্রে।
শিক্ষকের কথাও একইরকম। এরপর আছে বিভিন্ন ধরনের মেকানিক। হতে পারে রেডিও, টেলিভিশন, মোবাইল, কম্পিউটার, মোটরগাড়ি মেকানিক-ইত্যাদি হরেক রকম পেশা আছে যেগুলো স্থায়ী। সারাজীবনই এ ধরনের পেশায় কাজ করা যায়।
আর যেমন ধরা যাক ব্যাংকার। এদের চাকুরী যতদিন আছে ততদিনই কাজ। চাকুরী শেষ, ব্যাংকারগিরি শেষ। এরপর যারা বিভিন্ন ফ্যাক্টরিতে যারা ননট্যাকনিক্যাল চাকুরী করেন তাদের চাকুরীও নির্দিষ্ট সময় পর আর থাকে না। তখন তাদের অন্যপথ দেখতে হয়।
আমাদের দেশে অবশ্য এই ধরনের মেকানিক কাজকে ভাল চোখে দেখা হয় না। যদিও আমি মনে করি সৎভাবে কাজ করলে এই পেশাগুলোতে চাকুরীর চেয়েও ভাল করা সম্ভব। দেশে প্রতিদিন মোবাইল, কম্পিউটার ব্যবহারকারী বাড়ছে। সেই সাথে বাড়ছে এসব ইলেক্ট্রনিক্স পন্যের মেকানিকের চাহিদা। একটা ফ্রীজে হাত দিলেই ৫০০ টাকা দিতে হয়। টিভির কথাও একই। মোবাইল, কম্পিউটারেরতো আরো বেশি হবার কথা।
এই পেশাগুল হল স্লো স্টার্টিং। ব্যবসার প্রথম দিকে একটু অসুবিধার মধ্যে পড়তে হয়। কিন্তু মনে রাখতে হবে ব্যবসার প্রধান মূলধন হল সততা। সততা বজায় রাখলে যেকোন কিছুতে ভাল অবস্থানে থাকা সম্ভব।
ইন্টারনেট ভিত্তিক আয়ের বিরাট সুযোগ আমাদের সামনে। আউটসোর্সিয়ে ছোট ছোট কাজ করে স্থায়ীভাবে বিদেশী চাকুরী দেশে বসেই করা সম্ভব। আমার এক কলিগ মাইক্রোওয়ার্কাসে বছর খানেক কাজ করার পর বিদেশিনীর কাজে জব অফার পায়। রাতের বেলা কাজ করতে হবে। সপ্তাহে তিন দিন। কিন্তু উনার পক্ষে সপ্তাহে তিনদিন সময় দেয়া প্রতি সপ্তাহে সম্ভব না হওয়াতে উনি জবটা করতে পারেন নি।
যাদের এই ধরনের আউটসোর্সিং করার ইচ্ছা তাদের জন্য ইংরেজী জানাটা আবশ্যক। ওয়েব প্রোগ্রামিং, ওয়েব ডেভলপিং, ডাটাবেস বিল্ডআপ-এইগুলার জন্য টাকা দিয়ে কোন প্রশিক্ষন নেবার প্রয়োজন নেই। ইন্টারনেটের মাধ্যমেই সম্ভব। আর দুই-একটা বই কিনে নিলেই যথেষ্ঠ।
আমাদের অভিভাবকদের আসলে সচেতন হওয়া উচিত। কোথায় যেন পড়লাম, "চাকুরী হল আধুনিক গোলামী" - কথা টা একদম সত্যি। চাকুরী করতে করতে আমাদের মধ্যে একধরনের চাকর চাকর ভাব চলে আসে। আমরা স্বাধীনভাবে ভাবার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলি। আমরা তাই ভাই যা আমাদের হাইয়ার ম্যানেজমেন্ট আমাদের ভাবায়। আমার স্বাধীনস্বত্তার অপমৃত্যু ঘটে।
তাই কেউ যদি সিরিয়াসলি কোন স্বাধীন কাজের দিকে ঝুকে তাহলে আমাদের (ফ্যামিলি মেম্বারদের উচিত) তাকে সাপোর্ট দেয়া। সে যেন ঐ লাইনে পড়তে পারে সে ব্যাপারে সাহায্য করা। কয়েকবছর পর সে হয়ত একটা প্রতিষ্ঠান হয়ে যাবে!
No comments:
Post a Comment