** সাপে কামড় দিলে কি করব?
সাপে কামড় দিলে প্রথম করনীয় হল বিষাক্ত সাপ কামড়েছে নাকি অবিষাক্ত সাপ কামড়েছে তা নির্ধারন করা। যদি কামড়ের স্থানে দুই দাতের চিহ্ন পাওয়া যায় তাহলে বিষাক্ত সাপে কামড়েছে। আর যদি আচরের মত চিহ্ন হয় তাহলে অবিষাক্ত সাপে কামড়েছে।
বিষাক্ত সাপে কামড়ালে কামড়ের স্থানের উপরে ও নিচে হালকা করে বেধে দিতে হবে। টাইট করে বাধলে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যেয়ে পচন ধরতে পারে। এরপর দ্রুত সরকারী হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। কারন সরকারী হাসপাতালে ছাড়া বিষক্রিয়ার আক্রান্ত রোগীকে ভর্তি করবে না।
লক্ষ্য রাখতে হবে রোগী যেন ঘুমিয়ে না পড়ে।
লক্ষ রাখতে হবে সাপে কাটা রোগীকে ফেলে যেন কোথাও না যাই।
১। হিমোটক্সিন- রক্ত জমাট বাধিয়ে ফেলে। চিকিৎসায় দেরি হলে রক্ত জমাট বেধে রোগী মারা যেতে পারে। কাজেই আক্রান্ত স্থানের উপরে ও নিচে হালকাভাবে বাধন দিয়ে সরকারী মেডিকেলে নিয়ে যেতে হবে, কিন্তু আক্রান্ত স্থান বেশি নড়াচড়া করা যাবে না। নড়াচড়ার মাধ্যমে রক্তের মাধ্যমে বিষ ছড়িয়ে যেতে পারে। সঠিক ফার্স্ট এইড দেয়া সম্ভব হলে এসব ক্ষেত্রে ৬ থেকে ৭ ঘন্টা সময় হাতে পাওয়া যায়।
২। নিউরোটক্সিন- নার্ভ সিস্টেমে আঘাত করে। ১০ সেকেন্ডে সাধারনত মারা যায় আক্রান্ত ব্যক্তি। তেমন কিছু করার থাকে না। দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে।
আশার কথা হল, আমাদের আশেপাশে যেসকল সাপ থেকে তার সিংহভাগই বিষাক্ত নয় এবং আক্রান্ত না হলে কামড় দিবে না। বাংলাদেশে ৭৯ প্রজাতির সাপ রয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ২৭ প্রজাতির সাপ বিষাক্ত। সাধারনত গভীর জঙ্গলে এদের বসবাস।
সাপে কাটলে সম্ভব হলে সাপটাকে মেরে রোগীর সাথে হাসপাতালে নিয়ে যাব। তবে সাপ মারতে যেয়ে রোগীকে ফেলে কোথাও যাওয়া যাবে না এবং রোগীকে হাসপাতালে নিতে দেরি করা যাবে না।
সাপের কামড়ে যারা মারা যায় তাদের মধ্যে ৮৫ ভাগ মারা যায় ভয়ে/শকে। ১০ ভাগ মারা যায় ভুল চিকিৎসায় আর ৫ ভাগ মারা যায় চিকিৎসা বিলম্ব হবার কারনে।
কাজেই একটু সচেতন হলে আমরা সাপেকাটা রোগীকে বাঁচাতে পারি।
[গুরুত্বপূর্ণঃ ঘরে সাপ দেখলেই মেরে ফেলার অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। প্রথমে তিনবার বলতে হবে, "তুই আল্লাহর বান্দা হলে চলে যা। যদি না যাস তাহলে তোকে মেরে ফেলব।" এরপরও যদি না যায় তাহলে মারতে পারব। এভাবে অনেক ধরনের প্যারানরমাল জটিলতা এড়ানো সম্ভব। ]
আগামীপর্বে ইনশাআল্লাহ কুকুরের কামড় ও অন্যান্য পতঙ্গের কামড়ের ব্যাপারে আলোচনা করা হবে।
ভূমিকাঃ কাফকো কর্তৃক আয়োজিত বাংলাদেশের রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির যুব রেড ক্রিসেন্ট চট্টগ্রামের সহায়তায় তিনদিনব্যাপী Certified First Aid ট্রেনিং প্রোগ্রামে অংশগ্রহন করে Self Assessment শীটে লিখেছি যে, First Aid সম্পর্কে ফেসবুকে লিখব, FnF এর মধ্যে ছড়িয়ে দিব। সেজন্যই আমার এই প্রচেষ্টা। সবকিছু লিখে প্রকাশ করা যায় না। যেগুলো যায় সেসব বিষয় নিয়েই লিখব। এই পোস্ট শেয়ারে কোন বাধা নেই। যেকেউ সংরক্ষন করে রাখতে পারবেন। একে একে গৃহস্থালীর টুকিটাকি এক্সিডেন্ট সহ অন্যান্য বিষয় আলোচনা করা হবে ইনশাআল্লাহ।
যেকোন সংশোধনী গ্রহণযোগ্য।
No comments:
Post a Comment