Featured Post

I SAID NO TO QUANTUM METHOD

পূর্বে পোস্ট আকারে প্রকাশিত। কারও সাথে ঝগড়া করার জন্য এটা দেইনি। নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করলাম। কেউ মানতে না পারলে আমার কিছু করার নেই।  আ...

Sunday, April 14, 2019

কি করব, কি না করব ...

কয়েকবছর আগে কৌতূহলবশত মসজিদের লাইব্রেরী থেকে "নাস্তিকের যুক্তি খণ্ডন" নামক একটি বই এনেছিলাম। কয়েকদিন সময় লাগিয়ে কয়েক পৃষ্ঠা পড়ার পর সসম্মানে বইটা ফেরত দিয়ে এসেছিলাম। বুঝতে পেরেছিলাম মাথামোটাদের জন্য এই বই না। আসলে মাথামোটাদের জন্য অনেক টপিকই না। সেসব টপিকে যখন কোন লেখা সামনে আসে তখন আস্তে করে চুপ মরে যাই। দুই একটা কমেন্ট দেখি। মন চাইলে কমেন্ট করি, "জ্বি ভাই", "অনেক ভাল হয়েছে ভাই" -ইত্যাদি। অথচ পোস্টই পড়ি নাই, ভাল-খারাপের সিদ্ধান্ত অনেক দূরে।

দুর্ভাগ্যজনকভাবে, মাঝে মাঝে এমন কিছু পরিস্থিতি তৈরি হয় যখন আর এড়িয়ে যাবার সুযোগ থাকে না। মাথামোটাদেরও চিকন কথা নিয়ে মাথা ঘামাতে হয়।

তাবলীগওয়ালাদের কথা চিন্তা করা যাক। তাবলীগওয়ালাদের অনেক দোষ আছে। যেমন, তারা মনে করে (কেউ কেউ) যারা তাবলীগ করে শুধু তারাই আল্লাহর রাস্তায় মেহনত করে। সোজা কথায় তাবলীগই আল্লাহর রাস্তা। অন্য রাস্তা আছে কিনা সেটা তাদের জ্ঞানে নাই, থাকলেও আলোচনায় ইচ্ছুক না।

এর ভাল-মন্দ দুই দিকই আছে। কারও কাছে মনে হতে পারে, ধূর এরাতো শুধু "লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ" আর "নামাযের" কথা বলে। ইসলাম কি এই দু'য়েই সীমাবদ্ধ অন্য কিছু নেই? এভাবে নিজেরাই একধরনের ভুল মেসেজ নিয়ে বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়ে। কত লাখো লাখো মুসলিম এর দ্বারা উপকৃত হয়ে সেটা তাদের বোঝানো যায় না, গেলেও একটা কিন্তু তাদের মনের ভিতরে ঢুকেই থাকে...

তাবলীগের প্রতিটা কাজের সিস্টেমটা দেখেন। যাই করুক, একজন আমীর থাকেন যিনি কাজটাতে নেতৃত্ব দেন। এমনকি যে দুইজন বা তিনজনকে রান্না-বান্নার দায়িত্ব (খেদমতের) দেয়া হয় সেখানেও একজনকে আমীর ঠিক করে দেয়া হয়। এতে কাজের গতি বাড়ে, দীর্ঘসূত্রিতা দূর হয়। অন্যরা যারা থাকেন তারা আমীরের অনুগত হন, ধৈর্য্য ধরেন। কথায় কথায় আমীরের ভুল ধরলে যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে এটা বুঝতে মহাকাশ বিজ্ঞানী হওয়া লাগে না।

জীবনের প্রতিটা ক্ষেত্রে যদি আমরা যদি এই সিস্টেম ফলো করতাম তাহলে আমাদের জীবনও গতিময় হত। বলা হয়, মাশোয়ারার (আলোচনার) মাধ্যমে আমীর সাহেব যে সিদ্ধান্ত দেন সেটা আমীর সাহেবের সিদ্ধান্ত নয়, বরং সেটা আল্লাহর সিদ্ধান্ত। সেই সিদ্ধান্ত যদি আমরা মেনে নেই তাহলে কি হবে? "খায়েরে বরকত, ক্ষতি থেকে হেফাজত, হতে হয় না বেইজ্জত"

আমীরের কিছু বৈশিষ্ট্য লাগে। যেমন, পুরষ হতে হবে, বালেগ হতে হবে, সুস্থ মস্তিষ্কের অধিকারী হতে হবে (পাগল না) ইত্যাদি। মিনিমাম এসব কোয়ালিটি থাকলে তাকে আমীরের জন্য বিবেচনা করা যেতে পারে। আর ম্যাক্সিমামের তো শেষই নেই। আমীরের আরও অনেক দায়িত্ব রয়েছে। আমীরের কারনে কাজে যেমন গতি আসে, তেমনি স্থবিরতাও তৈরি হয়।

বলা হয়, কেউ কোন কাজের যোগ্য না হলে আল্লাহ তায়ালা তাকে সে কাজের ভার দান করেন না। সহজ কথায় যিনি আমীর হবে আল্লাহ তায়ালা তাকে তেমন যোগ্যভাবেই গড়ে তুলবেন, সে যোগ্যতা দিয়ে দিবেন।

ইখলাস, ইছলাহ, আমলের কমতি, গুনাহের কারনে অথবা একান্ত আল্লাহর পরীক্ষা, আমীর সাহেব ১০০ টার মধ্যে ১০০ টাই সঠিক সিদ্ধান্ত দিতে পারেন না। ভুল সিদ্ধান্তও ইখলাস, আমল ও ধৈর্য্যের কারনে ফলপ্রসু হয়। এগুলোর অভাবে সঠিক সিদ্ধান্তও ভূলুন্ঠিত হতে পারে। একমাত্র আল্লাহই জানেন কোনটা চুড়ান্ত সঠিক আর কোনটা চূড়ান্ত ভুল। আপাতদৃষ্টিতে যদি আমীরের কোন সিদ্ধান্ত ভুল বলে কোন মামুরের (আমীর ছাড়া অন্যান্য সাথী) ভুল মনে হয় তাহলে তার করনীয় কি?

১। ধৈর্য্য ধরবে, দোয়া করবে, মেহনত আগের মতই চালিয়ে যাবে
২। মেহনত ছেড়ে দিবে। যুক্তি এটাই যে, ভুল পদ্ধতির কাজের সাথে কোন সম্পর্ক রেখে দ্বীন দুনিয়ার ক্ষতিগ্রস্থদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হতে চাই না।

তো এখানে মাথামোটাদের জন্য জটিল চিন্তাটা কোথায়? জটিল চিন্তাটা হল আমি কোন পথ বেছে নিব? ১? নাকি ২? নাকি নতুন কোন মেহনত শুরু করে দিব?

আমার মত মাথামোটা, গুনাহগারদের পক্ষে নতুন কিছু করা একেবারেই অসম্ভব, একা একা মেহনত করা আরও অসম্ভব। হাদীসের ভাষ্য হল, "দলছুট বকরীকে বাঘে খেয়ে ফেলে, আর মানুষের বাঘ হল শয়তান"। সেক্ষেত্রে ১ নং পদ্ধতিই সঠিকের অধিক নিকটবর্তী বলে মনে করি। হক্বের সন্ধান পাওয়ার পরেও যদি আমি হক্বের সাথে থাকতে না পারি তাহলে সেটা আমার ব্যর্থতা। হক্ব থেকে দূরে সরিয়ে দিতে শয়তান চাইবেই। বোঝা যাবে আমি শয়তানের ফাঁদে পা দিয়েছি। মেহনত থেকে দূরে সরে যেয়ে নিজের উপর যুলুম করেছি।

No comments: