অনলাইন আমাকে অনেক উপাধি দিয়েছে। তারমধ্যে নতুন হল তার্কিক উপাধী। বিভিন্নজনের বিভিন্ন অসংগতি যখন চোখে পড়ে তখন চুপ থাকতে কষ্ট হয়। প্রশ্ন করি, উত্তর পেয়ে আবারো প্রশ্ন করি। হয়ে যাই তার্কিক, তর্কবাজ!
সবক্ষেত্রে আমিই ঠিক এমনটা নয়। দেখাযায় প্রায়ই ভুল বুঝি। ভুল বুঝে প্রশ্ন করার কারনে সঠিকটা জানতে পারি, শিখতে পারি। দুর্বল যুক্তির বিপরীতে সবল যুক্তি সবাই সমানভাবে গ্রহন করতে পারে না। বড়ভাইদের এসবক্ষেত্রে উদার পেয়েছি, তারা মেনে নেন বা না-ই নেন কখনো বিরূপ আচরন করেছেন বলে মনে পড়ে না। জুনিয়ররা অবশ্য অনেক এগ্রেসিভ। তাই জুনিয়র কারো পোস্টে কমেন্ট করার আগে ভাবি কয়েকবার।
একজনের পোস্ট দেখেছিলাম যে, ২+২ = ৭, ৪+৭ = ১৩ হলে ১১+৮ = কত? জিনিয়াসদের খোজা হচ্ছে এই পোস্টের মাধ্যমে। এবং অসংখ্য জিনিয়াস দেখলাম উত্তর দিচ্ছে মাথা খাটিয়ে। গরুর পালে আমার মত দুই একটা ভেড়া যারা আছেন, তারা কিন্তু পালটা প্রশ্ন করেছেন ২+২ = ৭ কিভাবে হল?
বলাই বাহুল্য, তারা জিনিয়াস খুজছিল, ভেড়া নয়। তাই প্রতিযোগীতা থেকে আমরা ছিটকে পড়লাম।
এক মেয়ে আইডি থেকে মাযহাব বিরোধী পোস্ট পড়াতে যখন ছাই দিয়ে ধরলাম তখন লিস্ট থেকে কিক মারা হল উত্তর না দিয়ে। এরপর ইনবক্সে পায়ে পাড়া দিয়ে ঝগড়া করার চেষ্টা!
এসব ক্ষেত্রে হুমায়ুন আহমেদের একটি ঘটনা আমাকে খুব প্রেরণা যোগায়। এক সাংবাদিক গেল উনার ইন্টারভিউ নিতে। সাংবাদিক দেখেই তিনি বুঝতে পারলেন, এটা ত্যাড়া সাংবাদিক। সাংবাদিক যা বলে উনি তাতেই একমত হয়ে যান। সাংবাদিক প্রশ্ন করেন,
"সমালোচকরা বলেন আপনার লেখাগুলো হালকা টাইপ!"
হুমায়ুন আহমেদের জবাব ছিল, "হালকা টাইপ মানে! এগুলো অবশ্যই হালকা এবং ফালতু লেখা। পড়ার অযোগ্য!"
(হুবহু মনে নেই)
ইন্টারভিউ আর জমে না। আমাদের ইনবক্সও জমে না। মেয়ে বলে,
"কোন পনির? খাওয়ার পনির নাকি?"
"জ্বী, খাওয়ার পনির।"
"সিহাল পনির নাকি শিয়াল পন্ডিত?"
"শিয়াল পন্ডিত।"
"বাস্তবেও শিয়াল পন্ডিত নাকি?"
"জ্বী, বাস্তবেও তাই।"
ঝগড়ার উদ্দেশ্য সফল হয় না। অথচ আমি যদি মাথা গরম করে কথা বলতাম তাহলে হয়ত সে "মাযহাবীদের অবস্থা" শিরোনামে স্ক্রিনশট দিয়ে দিত। (এমন পোস্ট দিত সে)।
অনেক সময় কথা বলি একটা কেউ কেউ বোঝে আরেকটা। বুঝিয়ে বলতে চাইলে বলে, তর্ক করতে চাই না। তখন মেজাজটাই খারাপ হয়। মনেহয় পৃথিবীতে আমারই বাড়তি সময় আছে আর কারো নেই।
এগ্রেসিভ তর্ক আর শিক্ষনীয় তর্কের মধ্যে পার্থক্য আছে। প্রথম শত্রুতা তৈরি করে আর দ্বিতীয়তা বিজ্ঞতা বাড়ায়!
No comments:
Post a Comment