ডা. জাকির নায়েক কি মাযহাবের বিরোধীতা করেন?
ডা. জাকির নায়েকের যে কয়েকটা লেকচার আমি দেখেছি কোন লেকচারেই "মাযহাবীরা মুশরিক / কাফের" বা মাযহাবের ঈমামগনের বিরুদ্ধে কোন কথা বলতে দেখিনি। যতটুকু দেখেছি তিনি এমনটা বলে থাকেন যে, আমাদের মান্য করা উচিত কুরআন ও সহীহ হাদিস। এই কথা শুধু তিনি নন, সবাই বলেন।
ঢাকাস্থ পিস পাবলিকেশনের জাকির নায়েকের লেকচার সিরিজ-৭ বইটা আমার সংগ্রহে আছে। এই বইয়ের শিরোনাম হল, "ইসলাম সম্পর্কে অমুসলিমদের কিছু সাধারন প্রশ্নের জবাব" । বইটিতে অমুসলিমদের ২০ প্রশ্ন ও তার জবাব সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
তন্মধ্যে একটি প্রশ্ন এরকম আছে যে, "সকল মুসলমান যখন একই আল্লাহর কিতাব 'আল কুরআন' মেনে চলে, তাহলে তাদের মধ্যে এত উপদেশ [আমার ধারনা শব্দটা উপদেশ না হয়ে দল-উপদল অথবা বিভক্তি হবে] কেন? তাদের চিন্তা-চেতনায় এত পার্থক্য কেন?
উত্তরে ডা. জাকির নায়েক প্রথমেই মুসলিমদের ঐক্যবদ্ধ থাকার গুরুত্ব তুলে ধরেন। এ প্রসংগে কুরআন-হাদীস থেকে উদ্ধৃতি দেন। এক পর্যায়ে বলেন,
"আমাদের অবশ্যই ইসলামের সুবিজ্ঞ মহান আলেমদের প্রতি সম্মান জানাতে হবে, যাদের মধ্যে রয়েছে চার ইমামঃ যথা ইমাম আবু হানীফা, ইমাম শাফেয়ী, ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল এবং মালিক (রঃ) আল্লাহ তাঁদের প্রতি অনুগ্রহ বর্ষণ করুন। তাঁরা ছিলেন ইসলামের জ্ঞানে সুবিজ্ঞ ব্যক্তিত্ব। আল্লাহ তাঁদেরকে তাঁদের জ্ঞান-গবেষণার জন্য উত্তম পুরস্কার দান করুন। সর্ব সাধারণ মানুষের মধ্যে কেউ ইমাম চতুদষ্টরের মধ্যে কারো অনুসরণ করলে কোন ক্ষতি নেই; কিন্তু 'তুমি কে?' এই প্রশ্নের উত্তরে তাকে বলতে হবে যে, আমি একজন মুসলিম।"
অন্যত্র তিনি বলেন, "একজন খাঁটি মুসলমানের উচিত হল আল্লাহর কিতাব আল কুরআন এবং তাঁতে রাসূলের সহীহ হাদীসসমূহের নির্দেশ মেনে চলা। সে যে কোন ইসলামি বিশেষজ্ঞের মত অনুসরণ করতে পারে, যদি সে বিশেষজ্ঞ আল কুরআন ও সহীহ হাদীসের অনুসারী হয়ে থাকে। কিন্তু যদি তার মত আল্লাহর কিতাব ও তাঁর রাসূলের সহীহ হাদীসের সাথে সাংঘর্ষিক হয়, তাহলে তার মতের কোন মূল্যই নেই -- এতে সে যত বর বিশেষজ্ঞই হোক না কেন।"
এই কথাগুলোর সাথে কোন মুসলিম দ্বিমত করবেন বলে আমি মনে করি না। কাজেই ডা. জাকির নায়েক প্রচলিত চার মাযহাবের বিরোধীতা করেন নি। ব্যতিক্রম হলে, আপনি প্রমাণ পেশ করুন।
আল্লাহই সর্বজ্ঞ!
No comments:
Post a Comment