Featured Post

I SAID NO TO QUANTUM METHOD

পূর্বে পোস্ট আকারে প্রকাশিত। কারও সাথে ঝগড়া করার জন্য এটা দেইনি। নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করলাম। কেউ মানতে না পারলে আমার কিছু করার নেই।  আ...

Monday, January 25, 2016

বাচ্চা ভয়ংকর, কাচ্চা ভয়ংকর!


আমার ধারনা বাচ্চাদের যন্ত্রনায় অতিষ্ঠ হয়ে মুজাই অনেকদিন আগেই একটা বই লিখেছিলেন। নাম হল "বাচ্চা ভয়ংকর, কাচ্চা ভয়ংকর" ! '৯৬ এর পরে যখন একুশে টেলিভিশন সম্প্রচারে এল তখন এই বইয়ের কাহিনীর উপর ভিত্তি করে একটা নাটকও দেখিয়েছিল। সেই নাটকে টাইটেল সং টা এখনো একটু খেয়াল আছে...

ভয়ে করে না বুলেট-বোমা, চোর আর হাইজ্যাকার!
রইসউদ্দিন মস্ত মানুষ, বেজায় সাহস তার!
শুধু বাচ্চা দেখলে হাটু কাঁপে, কাঁপে থর থর
বাচ্চা ভয়ংকর! আহা কাচ্চা ভয়ংকর! 

আমার অবস্থা কিছুটা রইসউদ্দিনের মত। হাটু কাঁপাকাঁপি অবস্থা। খুলেই বলি তাহলে। 

১. বিকেলবেলা এক বন্ধুর সাথে রাস্তায় হাটতে হাটতে আড্ডা দিচ্ছি। এই জায়গায় পৌছে দেখলাম দুই পিচ্চি রাস্তায় খেলছে। আমরা আরেকটু এগিয়ে গেলাম। ফেরার জন্য পিছন ঘুড়তেই দেখি এক পিচ্চি আরেক পিচ্চিকে দৌড়ানি দিয়েছে। সামনের পিচ্চিটা দৌড়ে এসে সোজা আমার উরুতে বাড়ি খেল। আমি অস্ফুস্টে "অক" করে উঠলাম। পিচ্চি আমারে ধাক্কা দিয়েই দৌড়। আমার বন্ধু যেন কিছুই বুঝতে না পারে সেজন্য দাত কেলিয়ে কথা শুনছিলাম। আশা করি, যারা এই স্ট্যাটাস পড়ছেন তারাও কিছু বুঝতে পারেন নি!

২. কোন একটা কাজে শহরে যাব। জানতে পেরে আমার এক কলিগ বললেন উনার মোবাইলে কি যেন সমস্যা হয়েছে। ঠিক করিয়ে আনতে পারব কিনা। আমি রাজি হলাম তবে বলে দিলাম যদি সময়ে কুলায় তাহলে নিয়ে আসব। নাহলে কিন্তু পারব না। উনিও আমার কথায় রাজি হলেন। তারপর ছেলে ফোন করে দিলেন সেটটা নিয়ে একটু রাস্তায় আসতে বাসা থেকে। অফিস থেকে ফিরে দু'জনে গাড়ি থেকে নামার পর দেখি উনার ছেলে দাঁড়িয়ে আছে। উনি তার কাছ থেকে সেটটা নিয়ে আমাকে দিয়ে বুঝিয়ে দিলেন কি সমস্যা। আমি সেট হাতে নিয়ে চলে আসছি তখন ঐ বিটলায় তার বাপকে জিজ্ঞেস করল,

"আব্বু, আংকেল কি মোবাইল ঠিক করেন?" 

squint emoticon
 

৩. ট্রেনে করি নরসিংদী যাচ্ছি। সিঙ্গেল কেবিন না পাওয়া ডাবল কেবিনে সিট কাটলাম। ট্রেনে উঠার পর একটা ফ্যামিলি উঠল। তাদের এক ছেলে, এক মেয়ে। নামবে কুমিল্লায়। কিছুক্ষন পর পাশের কামরা থেকে আরো এক পিচ্চি আসল তার বাবার সাথে। এই কামরায় নাকি তাদেরও একটা টিকেট আছে।

কিছুক্ষন ভালই চলল। কিন্তু বাচ্চাদেরতো আর আমাদের মত ইগো নেই। অল্পক্ষনের মধ্যেই তারা নিজেদের বন্ধ হয়ে গেল। এরপর যেন কামড়ায় নরক ভেঙ্গে পড়ল। এই একজন আরেকজনের গায়ে ঢলে পড়ে, এই মোবাইলে গান ছেড়ে দেয়। ফ্যানের সুইচ চাপে, বন্ধ করে। টেবিলের উপর বসে পড়ে। আর সোফার উপর লাফালাফিতো ফ্রী! 

লাফালাফির কারনেই হোক বা যেকোন কারনেই হোক নাকের ভিতর ধূলো ঢুকে চুলকাতে লাগল। 

"হ্যাএএচ্ছোওওওওও..." 

নিমিষে সব ঠান্ডা। আমি প্রথমে কিছুই বুঝতে পারি নাই। হঠাৎ করে সব স্তব্ধ হয়ে গেল কেন। মুখ তুলে দেখি বাচ্চাগুলা ভীত চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। পিচ্চি ছেলেটা সবার আগে সংবিৎ ফিরে পেল। তার সে নিজেই 

"হ্যাএএচ্ছোওওও..." 

আর বাকিগুলা ভয় পাবার ভান করে। তারপর আবার সে "হ্যাচ্ছোওওও" আর বাকিগুলা আঁতকে উঠে। 

মুখে ক্যাবলার মত হাসি নিয়ে বসে থাকলেও মনে মনে ফাজিলের ফাজিলগুলারে থাপ্রাইয়া দাত ফালাইয়া দিছি... 

৪. আমার দু'চোখে তিনটা অঞ্জলী হয়েছে একসাথে। ডানচোখের উপরের পাতায় আর বাঁ চোখের দুই পাতায়। ডাক্তারের কাছে গেলাম। এতগুলো একসাথে দেখে ডাক্তারতো অবাক। ওষূধ দেবার পাশাপাশি বলে দিলেন সানগ্লাস ব্যবহার করতে। অফিস ছাড়া বেশিরভাগ সময় ঘরে বসে থেকে আমি আগে থেকেই বাইরে গেলে রোদ সহ্য করতে পারতাম না। চোখ দিয়ে পানি পড়ত। কিন্তু সানগ্লাস পড়তাম না অফিসে ছাড়া। লজ্জা লাগত। কিন্তু এখনতো পড়তেই হবে। 

আমার একটাই স্পোর্টস সানগ্লাস! ওটাই পড়ে বের হলাম। উদ্দেশ্য অফিসে যাব। নিচে নেমে দেখি রাস্তায় পিচ্চিরা খেলাধূলা করছে। 

তোরা খেলাধূলা করবি কর। আমার দিকে তাকাস কেন? 

দুইটায় দেখি কতক্ষন হাঁ করে রইল। তারপর একজন বলে উঠল, "নায়ক"! তার দেখাদেখি অন্যজন আরেকজনকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠল,

"এই সর, সর। নায়ক আংকেল আইতাছে!" 

upset emoticon
 

এ বাবা, ও বাবা, বাচ্চালোগ মেরা পিছা না ছোড়ে!

No comments: