Featured Post

I SAID NO TO QUANTUM METHOD

পূর্বে পোস্ট আকারে প্রকাশিত। কারও সাথে ঝগড়া করার জন্য এটা দেইনি। নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করলাম। কেউ মানতে না পারলে আমার কিছু করার নেই।  আ...

Monday, January 25, 2016

অহেতুক মিথ্যে


সম্ভবত গত রমজানের ঘটনা। কোন এক জুমাবার কোন একভাইয়ের পোস্টে কোন এক প্রসঙ্গে কমেন্ট করেছিলাম অনেকটা এমন, আমাদের এখানেতো সাড়ে বারোটা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত জুমার জামাত হয়। ভাই আমার কথাটা আমলে নেন নি। অনলাইনে কেউ কারো কথা সহজে বিশ্বাস করতে চায় না। হেসে উড়িয়ে দেয় বা পালটা হাজারো প্রশ্ন করে। 

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, শুধু শুধু মিথ্যে কথা বলে কারো লাভটা কি? 

মানুষের অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যে একটি হল সে তার নিজস্ব গন্ডির বাইরে চিন্তা করতে পারে না। ছোটবেলা থেকে সেসব ঘটনা আমরা আমাদের জীবনে দেখে আসছি প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা না হলে সেগুলোর ব্যতিক্রম আমরা মেনে নিতে পারি না।

চাকুরীতে ঢোকার আগে চাকুরী সম্পর্কে আমার ধারনা যেটুকু ছিল সেটা বিটিভিতে নাটক দেখেই হয়েছিল। চাকুরী মানেই একটা টেবিল থাকবে, এক পাশে একটা পার্সোনাল কম্পিউটার, টেবিলের এক পাশে কিছু ফাইল, একটা রিভলভিং চেয়ার - এইগুলোই মনে হত। 

চাকুরী পাবার পর আমার ধারনা পরিবর্তন হল। শুধু ডেস্ক জব হয় এমনটা নয়, প্রচুর জব আছে ফিল্ড রিলেটেড। বাবুর্চির অফিস হল রান্নাঘর, দাড়োয়ানের অফিস সদর দরজার পাশে, ট্রাফিক পুলিশ অফিস করেন রাস্তায় রাস্তায়, গাড়িচালকের অফিস তার গাড়ি, মুদি দোকানদারের অফিস তার দোকান ......... 

একেকজনের অফিস যেমন একেক রকম তেমনি একেক জনের অফিসের সময় একেক। সাধারন একটা ধারনা অফিস হল ৯টা-৫টা। দেশের অনেক মানুষের জন্য এটা সত্য হলেও অসংখ্য মানুষের জন্য এটা সত্য নয়। ট্রাফিক পুলিশকে জিজ্ঞেস করুন তার অফিস টাইম ক'টা থেকে ক'টা। জিজ্ঞেস করতে পারেন ফার্মেসীর মালিক কে। জিজ্ঞেস করুন আনসার বাহিনীর কোন সদস্যকে, তাদের চাকুরীর টাইমিং টা কি। গার্মেন্টস, ফ্যাক্টরিতে কর্মরত কোন মেয়েকে জিজ্ঞেস করতে পারেন। 

আমার জানামতে অফিস টাইমিং দু'ধরনের। যেসব অফিস শুধু দিনের বেলায় খোলা থাকে তাদের টাইমিং একরকম। এখানে জেনারেল শিফট ডিউট চলে। সকাল ৮ টা থেকে বিকেল ৫ টা অথবা অফিসে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দিনের যেকোন আটঘন্টা। আবার যেসব ফ্যাক্টরি ২৪ ঘন্টা চলে তাদের টাইমিং অন্যরকম। এখানে চলে রোটেটিং শিফট। একগ্রুপ অফিস করে ফিরে আসে। আরেকগ্রুপ দায়িত্ব বুঝে নেয়। গ্রুপের সংখ্যা অফিস বেধে ২ থেকে ৪ হতে পারে। যেসব ফ্যাক্টরিতে দু'টো গ্রপ তারা ১২ ঘন্টা করে অফিস করে। ৮ ঘন্টা নরমাল অফিস আর ৪ ঘন্টা ওভার টাইম। 

যাই হোক, আমরা অফিস করি ৪ টা গ্রুপে। তিন গ্রুপ ৮ ঘন্টা করে ২৪ ঘন্টা পুরো করে আর এক গ্রুপ রেস্টে থাকে। পালাক্রমে সব গ্রুপই রেস্ট পায়। 

এবার আসি জুমা প্রসঙ্গে। যেহেতু এক গ্রুপ অফিসে গেলে আরেক গ্রুপ ফিরবে সেহেতু আমরা এক সাথে জুমা পড়তে পারি না। আমরা জুমা পড়ে অফিসে যাই, তারা ফিরে আসে। এখন তারা কি জুমা পড়বে না? কিন্তু একই মসজিদে একাধিক জুমা পড়ার উপায় নেই। 

এই সমস্যার সমধান হল মসজিদ থাকবে দু'টো। আমি বাংলাদেশ ক্যামিক্যাল ইন্ড্রাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের (BCIC) যতগুলো প্রতিষ্ঠানে গিয়েছি সব জায়গায় একাধিক মসজিদ দেখেছি। 

স্বাভাবিকভাবে আমাদের এখানে প্রধান মসজিদে (বড় মসজিদে) জুমার জামাত হয় বেলা ১ঃ১৫ মিনিটে। আমরা নামায পড়ে খাওয়া দাওয়া সেরে অফিসে যাবার পর আমাদের কলিগেরা ফিরে এসে অন্য মসজিদে (ছোট মসজিদে) জুমা পড়েন বেলা আড়াইটায়। এখানে প্রায় সোয়া এক ঘন্টার পার্থক্য। 

আবার বিগত কয়েকবছর ধরে রমজানের সময় সেহ্‌রির সুবিধার্থে অফিস টাইম একঘন্টা করে এগিয়ে দেয়া হচ্ছে। এতে করে যোহর এবং জুমার নামাযের সময়ও পরিবর্তিত হয়ে যাচ্ছে। আগে যারা দুপুর দু'টায় অফিস যেতো রমজানে তারা যাবে বেলা একটায়। তাই তখন ছোট মসজিদে অফিসগামীদের জন্য জুমা হয় সোয়া বারোটা বা এর কাছাকাছি সময়ে। এলাকার অনেক লোকজনও এই জামাতে শরীক হয়। আর আমরা অফিসে যাবার পর আমাদের সহকর্মীরা ফিরে এসে বড় মসজিদে জামাত ধরেন বেলা দেড়টায়। 

চট্টগ্রাম শহরের মেহেদিবাগ জামে মসজিদে কয়েকবার জুমা পড়েছি। রমজান ছাড়াই সেখানে জামাত পড়েছি সোয়া দু'টো-আড়াইটার দিকে। 

কাজেই জুমার জামাতের সময়সূচির ব্যাপারে যে কথাটি বলেছিলাম সেটা নিছক মজা করার জন্য ছিল না। বরং সেটাই সত্য ছিল। 

আপনাদের এলাকায় জুমা/জামাতের সময়সূচি সম্পর্কে ইচ্ছা করলে শেয়ার করতে পারেন। 
smile emoticon

No comments: