Featured Post

I SAID NO TO QUANTUM METHOD

পূর্বে পোস্ট আকারে প্রকাশিত। কারও সাথে ঝগড়া করার জন্য এটা দেইনি। নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করলাম। কেউ মানতে না পারলে আমার কিছু করার নেই।  আ...

Monday, January 25, 2016

তওবা


নাজনীন আক্তার হ্যাপি। এদেশের অনলাইন জগতে অতি আলোচিত সমালোচিত একটি নাম। কিভাবে তার উথান সে ব্যাপারে আশা করি মোটামুটি সবাই অবগত। পূর্বজীবনে তার কার্যকলাপকে কেন্দ্র করে আমরা অনেকেই তার সমন্ধে বাজে কথা বলেছি, বাজে ভাবে কথা বলেছি, হুলস্থুল ট্রল করেছি। হ্যাপির জীবন এখন পুরো উলটো। 

সত্য-মিথ্যা জানি না, যতদূর শুনেছি, তাবলীগের দাওয়াতের দ্বারা হ্যাপীর জীবন ঘুরে গিয়েছে। দাওয়াত প্রাপ্তির পর প্রথমে মহিলাদের বয়ান শুনেছেন, তারপর সময় লাগিয়েছেন। এরপর থেকে পরিপূর্ণ, আপাদমস্তক পর্দা করা শুরু করেছেন। এখন মাদ্রাসায়ও ভর্তি হয়েছেন। মাদ্রাসায় ২৮ দিন কাটানোর পর ছুটিতে এসে ফেসবুকে যে স্ট্যাটাস দিয়েছেন তাতে বোঝা যায়, তিনি সত্যিই মাদ্রাসায় পা রেখেছেন। তার অন্তরের অবস্থা আল্লাহই ভাল জানেন। ব্যক্তিগতভাবে আমি আশা করব যেন, আল্লাহ তায়ালা তাকে দ্বীনের খেদমতগার হিসেবে কবুল করেন। তার মর্যাদাকে বর্ধিত করেন! 

ছাহাবী মায়েজ (রাঃ) যেনা করিয়াছিলেন, তাহার কোন সাক্ষী ছিল না, কিন্তু এই পাপের ভয় তাঁহার অন্তরে এক অসহনীয় অগ্নিরূপ ধারণ করিয়াছিল। তিনি আবু বকর রাযিয়াল্লাহু তাআলা আনহুর নিকট আসিয়া বলিলেন, এই হতভাগা যেনা করিয়াছে। আবু বকর (রাঃ) বলিলেন, আমি ব্যতীত অন্য কাহারও নিকট তুমি ইহা প্রকাশ করিয়াছ কি? মায়েজ (রাঃ) বলিলেন, না। আবু বকর (রাঃ) বলেন, তবে তুমি আল্লাহ তাআলার নিকট তওবা কর এবং আল্লাহ তাআলা তাহা গোপন থাকার যে সুযোগ তোমাকে দান করিয়াছেন তুমি সেই সুযোগ গ্রহণ করিয়া গোপনই রাখ; নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা বান্দার তওবা কবুল করিয়া থাকেন।

এই কথায় মায়েজের অন্তরে শান্তি আসিল না। তিনি ওমর রাযিয়াল্লাহু তাআলা আনহুর নিকট আসিলেন। তিনিও তাঁহাকে ঐরূপই বলিলেন, যেরূপ আবু বকর (রাঃ) বলিয়াছিলেন। এই বারও মায়েজের অন্তরে শান্তি আসিল না। অবশেষে তিনি পাগলপারা হইয়া তাঁহার গৃহস্বামীর পরামর্শে স্বয়ং হযরত রসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লামের দরবারে উপস্থিত হইলেন এবং বলিলেন, এই হতভাগা যেনা করিয়াছে। হে আল্লাহর রসূল! আমাকে পাক পবিত্র করুন। ইয়া রসূলাল্লাহ আমি যেনা করিয়াছি; আমার উপর আল্লাহর কুরআনের হুকুম জারি করুন। ইয়া রসূলুল্লাহ! আমি আমার সর্বনাশ করিয়াছি--আমি যেনা করিয়াছি---আমার আকাংক্ষা আপনি আমাকে পাক-পবিত্র করিবেন। এমনকি রসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লামের হাতে হাত রাখিয়া বলিলেন, পাথর মারিয়া আমাকে প্রাণে বধ করিয়া ফেলুন। হযরত (সঃ) তাঁহাকে বলিলেন, "ধিক্‌ তোমার প্রতি--চলিয়া যাও এবং আল্লাহর নিকট তওবা-এস্তেগফার কর। এই বলিয়া হযরত (সঃ) তাঁহার দিক হইতে মুখ ফিরাইয়া নিলেন এবং তাঁহাকে তাড়াইয়া দিলেন। কিন্তু মায়েজ (রাঃ) তৃতীয়বার আবার হযরতের দরবারে আসিয়া ঐরূপ বলিলেন। এই বারও হযরত (সঃ) তাঁহাকে হাঁকাইয়া দিলেন। এমনকি কেহ তাঁহাকে এই বারও সতর্ক করিয়া দিল যে, তুমি চতুর্থবার স্বীকারোক্তি করিলে তোমাকে প্রস্তরাঘাতে প্রাণে বধ করিবেন। কিন্তু কোন ভয়-ভীতি মায়েজ (রাঃ)-কে নিবৃত্ত ও ক্ষান্ত করিতে পারিল না, তিনি চতুর্থ দিন আবার হযরতের দরবারে আসিয়া ঐরূপই বলিলেন। 

এইবার হযরত (সঃ) তাঁহার দিকে লক্ষ্য দিলেন এবং জিজ্ঞাসা করিলেন, কি ব্যাপারে তোমাকে পাক করিব? মায়েজ (রাঃ) স্পষ্ট ভাষায় বলিলেন, যেনার পাপ হইতে আমাকে পাক করিবেন। হযরত (সঃ) তাঁহাকে এই কথাও জিজ্ঞগাস করিলেন, তুমি কি উন্মাদ? তিনি বলিলেন, না। হযরত (সঃ) যাচাই করিলেন, তিনি কোন নেশা পান করিয়াছেন কিনা, এমনকি এক ব্যক্তি দাড়াইয়া তাহার মুখ শুঁখিয়া দেখিল, তাহাতে কোন নেশা বস্তুর দুর্গন্ধ পাওয়া গেল না। হযরত (সঃ) তাঁহার বাড়ীর লোকদের নিকট যাচাই করিলেন, তিনি উন্মাদ কিনা। সকলেই সাক্ষ্য দিলে সে সম্পূর্ণ সুস্থ। হযরত (সঃ) ইহাও জ্ঞাত হইলেন যে, তিনি বিবাহিত। অতঃপর হযরত (সঃ) তাঁহার প্রতি "রজম-প্রকাশ্যে প্রস্তরাঘাতে প্রাণে বধ করার আদেশ প্রদান করিলেন।"

সেমতে তাঁহাকে ঈদগাহের খোলা ময়দানে নিয়া যাওয়া হইল এবং তাঁহার উপর প্রস্তর নিক্ষেপ আরম্ভ করা হইল। সর্বপ্রথম আবু বকর (রাঃ) প্রস্তর নিক্ষেপ করিলেন। সংগে সঙ্গে চতুর্দিক হইতে প্রস্তর বর্ষিত হইতে লাগিল। প্রস্তর আঘাতে মায়েজ (রাঃ) স্বাভাবিকরূপে ছুটাছুটি করিতে লাগিলেন বটে, কিন্তু তিনি তাঁহার স্বীকৃতি প্রত্যাহার করার কোন উক্তি মুখে উচ্চারণ করেন নাই। অথচ তিনি তাঁহার স্বীকৃতি প্রত্যাহার করিলে শরীয়তের বিধানমতে তাঁহার প্রাণ-বধ কার্য স্থগিত হওয়া স্থিরকৃত ছিল এবং প্রস্তর বর্ষণে বিরত থাকিতে সকলেই বাধ্য হইত। মায়েজ (রাঃ) স্বীয় জানের প্রতি মোটেই ভ্রুক্ষেপ করেন নাই। তাঁহার একমাত্র লক্ষ্য ছিল যেনার পাপ হইতে পবিত্রতা লাভ করা। সেই লক্ষ্য অর্জনে তিনি প্রাণ বিসর্জনে কুণ্ঠা বোধ করিলেন না। ছুটাছুটির মধ্যেই একটি পাথর তাঁহার কর্ণমূলে আঘাত করিলে তিনি মাটিতে পড়িয়া গেলেন এবং নিকটবর্তী একটি বৃক্ষের গোড়ায় ডান কাতে স্বীয় বাহুর উপর শুইয়া পড়িলেন। চতুর্দিক হইতে প্রস্তর বর্ষিত হইতে ছিল। হঠাৎ একটি উটের মাথার বিরাটকায় হাড় তাঁহাকে ভীষণভাবে আঘাত করিল, তাহাতেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করিলেন "রাযিয়াল্লাহু তাআলা আনহু ও আরজাহু-- হে আল্লাহ! তুমি তাঁহার প্রতি সন্তুষ্ট হও এবং তাহার মনোবাসনা পূর্ণ করিয়া তাঁহাকে সন্তুষ্ট কর"।

মায়েজ রাযিয়াল্লাহু তাআলা আনহুর আত্মবিসর্জনের পর তাঁহার সম্পর্কে লোকদের মুখে উভয় রকম মন্তব্যই আলোচিত হইল। একদল বলিল, মহাপাপা পাপী হইয়া মারা গিয়াছেন। অপরদল বলিল, মায়াজের তওবা অপেক্ষা উত্তম তওবা আর হইতে পারে না। ঘটনার তিনদিন পর রসূলুল্লাহ (সঃ) সকলকে সম্বোধন করিয়া বলিলেন--

"তোমরা সকলে মায়েজের জন্য ক্ষমার দোয়া কর; সে এমন তওবা করিয়াছে যে, তাহার তওবা সমাজের সকল লোকের উপর বণ্টন করিয়া দিলে সকলের গোনাহ মাফের জন্য তাহা যথেষ্ঠ হইবে।" হযরতের আদেশ মতে ছাহাবীগন সমবেতভাবে তাঁহার জন্য মাগফেরাতের দোয়া করিলেন। 

হযরত (সঃ) তাঁহার সম্পর্কে আরও বলিলেন -- "তাহার সমস্ত গোনাহ মাফ করিয়া দেওয়া হইয়াছে এবং তাহাকে বেহেশতে প্রবেশ করাইয়া দেওয়া হইয়াছে।"

"আমি তাহাকে বেহেশতের নহরসমূহে আনন্দে আবগাহন করিতে দেখিয়াছি।" 

"তাহাকে মন্দ বলিও না; সে আল্লাহ তাআলার নিকট মেশক বা কস্তুরীর সুগন্ধি অপেক্ষা অধিক প্রিয়।"

"আমি তাহাকে বেহেশ্‌তের নহরে আনন্দে ডুবাইতে দেখিয়াছি।" 

[আলোচ্য ঘটনাটি সহীহ বুখারীর সপ্তম খন্ড, পৃষ্ঠা ৮৩, ৮৪, ৮৫ তে উল্লেখ আছে।]

মায়েরজ (রাঃ) ঘটনার পরেই গামেদ গোত্রীয় এক নারীর অনুরূপ ঘটনা সহীহ বুখারীতে এসেছে। তাকেও প্রস্তরাঘাতে হত্যা করার সময় ছাহাবী খালেদ (রাঃ) গায়ে রক্তের ছিটা পড়িল এবং তিনি তাকে মন্দ বলে উঠলেন। হযরত (সঃ) খালেদের মন্দ বলা শুনতে পেয়ে বললেন, "মুখ সংযত রাখ। যাঁর হাতে আমার জান তাঁর কসম -- মহিলাটি এমন তওবা করেছে যে, যেকোন মহাপাপী ঐরূপ তওবা করলে তার মাগফেরাত হয়ে যাবে। 

মহিলাটির লাশ নিয়ে আসা হইল এবং হযরত (সঃ) তাঁহার জানাযার নামায পড়াইলেন। ওমর (রাঃ) বলিলেন, হে আল্লাহর নবী! আপনি তাহার জানাযার নামায পড়িলেন, অথচ সে যেনা করিয়াছিল। তদুত্তরে হযরত (সঃ) বলিলেন,

"মহিলাটি যে তওবা করিয়াছে তাহা যদি মদীনাবাসীদের উপর বণ্টন করিয়া দেওয়া হয়, তাহাদের পাপীর সংখ্যা সত্তর হইলেও সকলের পাপ মোচনে তাহা যথেষ্ঠ হইবে। এর চেয়ে অধিক তওবা আর কি হইতে পারে যে, সে আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার মানসে নিজের প্রাণ বিসর্জন দিয়াছে।

আল্লাহু আকবার! 

হ্যাপীও নিশ্চয়ই তওবা করেছে। তার নিজস্ব মিডিয়ার জগত ছেড়ে দ্বীনের পথে পা বাড়িয়েছে। পরিবার পরিজন ছেড়ে মাদ্রাসায় পড়ছে। অথচ হ্যাপীর মত অসংখ্য মেয়ে হ্যাপীর পূর্বজীবনের পথেই আছে! 

হ্যাপী ফিরে এসেছে। আমরা কবে ফিরব? আমি কবে ফিরব? এতদিন হ্যাপীকে নিয়ে যে ট্রল করেছি, রসিয়ে রসিয়ে কথা বলেছি তার জন্য কি অনুতপ্ত হয়েছি? তওবা করেছি? 

বস্তুত তওবার সৌভাগ্য সবার হয় না। তার আগেই মৃত্যুর ডাক চলে আসে। 

unsure emoticon

অনলাইন ছবি আপ্লোড ও অন্যান্য


ব্যক্তিগতভাবে আমি ফেবুতে পারিবারিক ছবি আপ্লোডের পক্ষপাতি নই। শুধু আপ্লোডই নয়, অহেতুক ছবি তোলারও কোন মানে খুজে পাই না। বর্তমান ট্রেন্ডের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারি না। এতে আমার কোন আফসোস নেই। এখনকার যুগ তো এমন যে, কোথাও ঘুড়তে গেলাম, ফেবুতে ছবি আপ্লোড। কোন রেস্টুরেন্টে খেতে গেলাম, ছবি আপ্লোড দিলাম। আমি মানে খুজে পাই না। ছবি দিয়ে লাভটা কি? অর্থহীন ছবি তুলেই বা লাভ কি? 

এখনতো এমন হয়েছে যে, পারিবারিক ছবি ফেবুতে শেয়ার করা পরিবারের প্রতি ভালবাসা প্রকাশের একটি উপায় হয়ে গিয়েছে। যদি কেউ তার স্ত্রীর ছবি, সন্তানের ছবি বা অন্য কারো ছবি ফেবুতে শেয়ার না করে তবে তারা মনে করেন যে তাদের প্রতি বোধহয় ভালবাসা কম। কারন তাদের একটা সাধারন লজিক থাকে যে, ভালবাসলে তা প্রকাশ করতে হয়! 

ছবি না তোলা এবং ফেবুতে না আপ্লোড করার মাঝেই আমার ভালবাসার প্রকাশ। এর মধ্যে আমার কোন দূরভিসন্ধি নেই। নাদুস-নুদুস ছবি দিয়ে মেয়েদের দৃষ্টি আকর্ষন যেমন আমার উদ্দেশ্য থাকে না, তেমনি পরিবারের ছবি না দিয়ে কারো সাথে কোনরূপ প্রতারনা করতে ইচ্ছুক-এমনটা ভাবাও যৌক্তিক হবে না। 

এবার আসি অহেতুক ছবি বর্জনের মাধ্যমে কিভাবে আমি আমার পরিজনের প্রতি ভালবাসা প্রকাশ করেছি সে বিষয়ে। ধরাযাক, আমার মোবাইলে আমি যেকোন ছবি তুললাম। তোলার পর সেই ছবি আমার দায়িত্ব থাকবে। আমি চাইলে তা ডিলিট করে দিতে পারি। কিন্তু যখনই ছবিটা আমি ফেসবুকে শেয়ার করব তখন সেটা আর আমার নিয়ন্ত্রণে থাকবে না। যেকেউ যেকোন উদ্দেশ্যে সেই ছবি ব্যাবহার করতে পারবে। যতই সিকিউর করা হোক রিস্ক থেকেই যায়। নিছক ফান থেকে পরিস্থিতি জটিল আকার ধারন করা খুবই সাধারন একটা ব্যাপার। অসংখ্য মেয়ে আছে যাদের ছবি আপত্তিকরভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে! 

‘সিহাহ্‌ সিত্তাহ্‌’ বিশেষত মুসলিম শরীফে চিত্রকরদের ব্যাপারে কঠিন সতর্কবাণী এসেছে। “প্রাণীর ছবি তোলা হারাম। যেসব জিনিসের উপর এ ধরনের ছবি রয়েছে তা ব্যবহার করা হারাম। যে ঘরে ছবি এবং কুকুর থাকে তাতে ফেরেশতা প্রবেশ করে না” শীর্ষক অনুচ্ছেদ থেকে দু’একটি হাদীস তুলে দিচ্ছি।

ইবনে উমার (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)বলেনঃ যারা ছবি বানায় কিয়ামতের দিন তাদেরকে আযাব দেয়া হবে আর বলা হবে যেগুলো তোমরা বানিয়েছো, তাতে জীবন দাও। 

আবদুল্লাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেনঃ নিশ্চয়ই কিয়ামতের দিন ছবি নির্মাতাদের সবচেয়ে কঠিন শাস্তি হবে।

আবু মু’আবিয়া থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, কিয়ামতের দিন দোযখীদের মধ্যে চিত্রকরদের সবচেয়ে কঠিন শাস্তি হবে।

মুসলিম ইবনে সুবাইহ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি মাসরূকের সাথে একটি ঘরে ছিলাম। তাতে মরিয়মের (আ) প্রতিকৃতি ছিল। মাসরূক বললেন, এটা কিসরার প্রতিকৃতি। আমি বললাম, না, এটা মরিয়মের প্রতিকৃতি। মাসরূক বলেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনে মাস’উদকে (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বর্ণনা করতে শুনেছি রসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ কিয়ামতের দিন চিত্রকরদের সবচেয়ে কঠিন শাস্তি হবে। 

সাঈদ ইবনে আবুল হাসান বলেন, এক ব্যক্তি ইবনে আব্বাসের (রাদিয়াল্লাহু আনহু) কাছে এসে বলল, আমি চিত্রকর। এবং চিত্র অংকন করি। অতএব এ সম্পর্কে আমাকে শরীয়তের বিধান বলে দিন। ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, আমার কাছে আস। সে ব্যক্তি তাঁর কাছে গেল। তিনি পুনরায় বললেন, আমার কাছে আস। সে ব্যক্তি তার এত কাছে গেল যে, ইবনে আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) তাঁর হাত ঐ ব্যক্তির মাথার উপর রাখলেন এবং বললেন, আমি তোমাকে এ সম্পর্কে এমন একটা হাদীস শুনাচ্ছি, যা আমি রসুলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর কাছে শুনেছি। আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কে বলতে শুনেছিঃ “সকল চিত্রকরই দোযখে যাবে। আর প্রত্যেক চিত্রের পরিবর্তে জীবিত এক ব্যক্তিকে বানানো হবে, যা দোযখে তাকে শাস্তি দেবে”। ইবনে আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, যদি তোমাকে এরূপ করতেই হয়, তাহলে গাছ এবং অপ্রাণীবাচক বস্তুর চিত্র অংকন কর। 

উম্মুল মু’মিনীন আয়েশা (রাদিয়াল্লাহু আনহা) বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)আমার কাছে আসলেন। আমি জিনিসপত্র রাখার তাকে ছবিযুক্ত পর্দা লাগিয়ে ছিলাম। তিনি তা দেখতে পেয়ে ছিঁড়ে ফেললেন। তাঁর চেহারার রঙ পরিবর্তন হয়ে গেল এবং বললেন, আয়েশা! কিয়ামতের দিন সবচেয়ে কঠিন শাস্তি তাদের হবে যারা আল্লাহর সৃষ্টজীবের প্রতিকৃতি তৈরী করে। আয়েশা (রাদিয়াল্লাহু আনহা) বলেন, আমরা তা কেটে একটি কিংবা দুটি বালিশ বানালাম। 

আবু তালহা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বর্ণনা করেন, নবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যে ঘরে কুকুর কিংবা ছবি আছে সে ঘরে (রহমতের) ফেরেশতা প্রবেশ করে না। 
[উৎসঃ সহীহ মুসলিম শরীফ। সপ্তম খন্ড। ইসলামী ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ]

অহেতুক ছবি তোলা এবং ব্যবহারের মধ্যে কোন কল্যাণ নেই। বরং তা আখেরাতে কঠিন আজাবের কারন। কাজেই তা থেকে বিরত থাকাই উত্তম।

আমার একটা LG মোবাইল ছিল। মডেল নং KU990R। তৎকালীন সময়ে প্রাপ্ত ফিচারড ফোনগুলোর মধ্যে উন্নত একটা মোবাইল। পাচ মেগা রেয়ার ক্যামেরা, দুই মেগা ফ্রন্ট ক্যামেরা এবং বিল্ট ইন ভিডিও কলের ব্যবস্থা। অথচ তখন বাংলাদেশে থ্রীজি নেটওয়ার্কতো আসেইনি, টুজির অবস্থায় করুন ছিল। কথা বলতে হবে বিল্ডিংয়ের ছাদে উঠতে হত। 

সফরে যখন মক্কা-মদীনায় গেলাম তখন এই উন্নতমানের মোবাইল রেখে নোকিয়া ১২০৩ নিয়ে যাই। আমার আশংকা ছিল যে, শয়তান হয়ত আমাকে ধোঁকায় ফেলে দেবে এবং আমি আল্লাহ তায়ালার ঘর এবং রসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর পবিত্র রওজা মুবারকের সাথে কোনরূপ বেয়াদবি করে ফেলবো। কিন্তু সেখানে পৌছানোর পর যা দেখেছি তাতে অবাক হয়েছি খুব। বাংলাদেশী নয়, এমন লোকেরা তাদের মোবাইল, ক্যামেরা, হ্যান্ডিক্যাম দিয়ে নির্দ্বিধায় ছবি তুলছে। কোন বিকার নেই, ভাবান্তর নেই। বিশেষত ইরাক, ইরান, তুরষ্ক - এসব দেশের নাগরিকদের এইকাজ করতে দেখেছি। বাংলাদেশীরা তখন পর্যন্ত এমন কাজ করত না। 

বাংলাদেশীদের মধ্যে এই ট্রেন্ড আজকাল শুরু হয়ে গিয়েছে। আমার লিস্টের বেশ কয়েকজন তাদের মক্কা-মদিনার হেরেম শরীফের সেলফি দিয়েছেন। তাদের নিয়ত কি ছিল আল্লাহই ভাল জানেন। 

আমি চাই না, দুনিয়ার সামান্য ফান বা ভাল লাগার জন্য ফেসবুকে ছবি দিয়ে আখেরাতে ক্ষতিগ্রস্থ হোক। তাতে যদি কেউ মনে করে পরিবারের প্রতি আমার ভালবাসা নেই তবে কি আর করা! আল্লাহই সর্বজ্ঞ!

ধরা

ছোটকালে ধর্মীয় পাঠ্যপুস্তকে একখানা অমূল্য হাদিস অধ্যয়ণ করিয়াছিলাম। একদা সুযোগ পাইয়া আমার কনিষ্ঠ ভ্রাতা উহা আমার উপর প্রয়োগ করিল। কহিল, "অপচয়কারী শয়তানের ভাই!" আমি কিছুমাত্র মনক্ষুন্ন না হইয়া বত্রিশপাটি দন্ত বিকশিত করিয়া তাহারে সুধাইলাম, "তাহা হইলে তুই কি হলি?" ভ্রাতা আমার কথা বুঝিতে পারিয়া বজ্রাহত হইয়া চুপ করিয়া গেল। আমি বিজয়ের হাসি দিয়া তাহাকে আরো রাগান্বিত করিয়া দিলাম। : D

মূলার গল্প


মূলার সিজনে মূলা নিয়ে কোন কথা হবে না, তা কিভাবে হয়। মূলায় মূলায় মূলান্বিত একটা গল্প শেয়ার করি।

গল্পটি অবশ্য অফিসে কলিগের কাছে শোনা। নিজের ভাষায় লিখি।

এক লোক মেয়ে বিয়ে দেবার কিছুদিন পর মেয়েকে দেখতে বেয়াই বাড়ি গেল। বেয়াইতো তাকে দেখে খুব খুশি। কিছুক্ষনের মধ্যেই রান্না-বান্নার হুলস্থুল পড়ে গেল।

খেতে বসলে প্রথমেই আসল মূলার শাক। এরপর আসল মূলা কুচিতে রান্না করার চিংড়ির ভূনা। এটা খাওয়া শেষ হতে না হতেই আরেকবাটিতে আসল গরুর গোশতের গরমা গরম তরকারি। গরুর গোশতের মধ্যে আবার গোশতের চেয়ে মূলার টুকরা বেশি! এরপর আসল ডাল। ডালের মধ্যেও গোল গোল করে মূলা কাটা!

বিদায়বেলায় গৃহকর্তা আফসোস করে তার বেয়াইকে বলছেন,

"বেয়াই! আসলেন তো আসলেন, মূলার সিজনে আসলেন না। খুব ইচ্ছা ছিল মূলা দিয়ে আপনাকে দু'টো ভাত খাওয়াই!"

এপসের মাধ্যমে একাউন্ট হ্যাক


কয়েকদিন আগে হুট করে ইচ্ছা হল একজনের ফেসবুক আইডি হ্যাক করার। নিজে নিজে চেষ্টা করতে লাগলাম কিভাবে হ্যাক করতে পারি? বহু ঘাটাঘাটির পর যা বুঝতে পারলাম সেটা হল, কারো ফেসবুক সহজে হ্যাক করা সম্ভব নয়। অবশ্য কারো ইনবক্স হ্যাক করা ততটা শ্রমসাদ্ধ নয়। হিডেন করা ফ্রেন্ডলিস্টও দেখা সম্ভব। তো যা বলছিলাম, আমি মূলত ইনবক্সে হানা দেবার জন্যই হ্যাক করতে চাচ্ছিলাম। কাজেই একাউন্ট হ্যাক না করেই যেহেতু সেটা সম্ভব, তো সেটা নিয়েই ঘাটাঘাটি করলাম। যা বুঝতে পেরেছি তা হল, কারো ইনবক্সে ঢোকার সবচেয়ে সহজ বুদ্ধি হল সাধারন একটা ফেবু এপস ডেভোলপ করা। "who has a secret crash on you?", "who is your top friend?", "your top ten friends" এইধরনের আর কি! আপনারা যারা এই ধরনের এপস ব্যবহার করেছেন তারা নিশ্চয়ই লক্ষ করেছেন যে, এসব এপসের ফলাফল আসে ইনবক্সে যার সাথে আপনার সর্বাধিক কথা হয়, সে। বোঝাই যায় এপসটি আপনার ইনবক্স কাউন্ট করেছে। ইনবক্স কাউন্ট করা গেলে ইনবক্স রিডও করা যাবে এবং সেটা আপনার অনুমতি নিয়েই!


আপনি যখন এইধরনের এপসের লিংকে ক্লিক করেন তখন আপনার অনুমতি নেবার পর একটি কোড তৈরি হয় স্বয়ংক্রিয়ভাবে। ডেভোলপারদের ভাষায় যাকে "টোকেন" বলা হয়। এই টোকেন দিয়ে ঐ ডেভোলপার চাইলে আপনার মেসেজ পড়তে পারবে, আপনার হয়ে মেসেজ সেন্ডও করতে পারবে। আপনার ফ্রেন্ডলিস্ট দেখতে পারবে, পারবে ইমেইল এড্রেস দেখতে। মোটকথা যেগুলোর অনুমতি আপনি দিবেন সবগুলোই সে এক্সেস করতে পারবে।

কাজেই অযথা এপস ব্যবহারে বিরত থাকুন। কোন কারনে ব্যবহার করলেও কোন কোন বিষয়ের অনুমতি দিচ্ছেন দেখে নিন। অপ্রাসংগিক কোন ব্যাপারে অনুমতি চাইলে ঐ এপস ব্যবহার না করাই ভাল।

ধন্যবাদ! 
smile emoticon

ভাল খবর


আজকের খবর আসলে দু'টো। শেষের খবরটি আমার জন্য কিঞ্চিত আনন্দদায়ক। আর প্রথম খবরটি দিচ্ছি প্রচারের জন্য। কারো প্রয়োজন পূরণ হলে সেটা প্লাস পয়েন্ট।

ফ্যামিলি ফ্ল্যাট ভাড়া হবে। লোকেশন মিরপুর-১ এ। মিরপুর বাংলা কলেজের পাশে। ১১০০ স্কয়ার ফিটের ফ্ল্যাট। তিনটে বেড, দু'টো বাথ, দু'টো বারান্দা। কিচেন, টয়লেট, মেঝে টাইলস করা। জায়গায় জায়গায় দেয়ালও টাইলস করা। পাঁচতলায় ফ্ল্যাট, লিফট আছে, পার্কিংয়ের পর্যাপ্ত জায়গা আছে। 

ভাড়া ফ্ল্যাটের মালিকের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে। আগ্রহী কেউ থাকলে ইনবক্সে আসুন প্লীজ। 

দ্বিতীয় খুশির সংবাদটি আমার ছোট ভাই সংক্রান্ত। সে চাকুরী পেয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ মামা-খালু এবং টাকা ছাড়াই চাকুরীটা পেয়েছে সে। খুব বেশি বড় চাকুরী নয়। সহকারী শিক্ষকের চাকরী। সাভার ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজে। এখন শুধু স্কুল শাখার কার্যক্রম চলে। আশা করা যাচ্ছে সামনের বছর থেকে কলেজের কার্যক্রম শুরু হবে। প্রিন্সিপাল সাহেব তখন তাদেরকে লেকচারার পদ দেবার আশ্বাস দিয়েছেন। বেলা দু'টো পর্যন্ত ক্লাস করিয়ে পরে আবার কোচিংও করাতে হবে। মাইনে খুব বেশি নয়। তার নিজের খরচ চলে যাবে। 

চাকুরী কনফার্ম হবার পর খবরটা প্রথমে আমাকেই দিল ফোনে। তার চাকুরীর সংবাদে যতটা খুশি হলাম তার চেয়ে বেশি খুশি হলাম তার খুশি দেখে। আর চাকুরী না পাওয়াতে সে মানসিক অবসাদে ভুগছিল। এখন সেটা কেটে যাবে। এই কারনেও একটু স্বস্থির নিঃশ্বাস ফেলেছি। 

নিশ্চয়ই ধৈর্য্যশীলদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে রয়েছে উত্তম পুরস্কার!

খুনসুটি


> এমনে কাঁপতাছো কেন? কি হইছে? 

- শীত লাগে... 

> শীত বেশি নাকি তোমার? এক কাজ করবা প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে মধু মিশাইয়া এক গ্লাস পানি খাইবা। শইল গরম থাকব।

- পারব না... 

> পারবা না কেন? গোসল করছো? 

- না করি নাই। পানি অনেক ঠান্ডা! 

> এই জন্যইতো শীত বেশি লাগে। গোসল করে না কিছু না! ঠান্ডা পানি দিয়া গোসল করলে শীত কম লাগে। যাও গোসল করো গিয়া। গোসল কইরা শইল্যে গ্লিসারিন মাখবা। দেখবা শীত নাই হইয়া গেছে। 

- পারব না। তুমি গোসল করো পারলে... 

> একবার না করলাম? 
gasp emoticon
 

- একশবার করবা। সারাদিন গোসল করবা... 

> সরিষার তেল গরম কইরা আনি? মালিশ কইরা দিলে শীত কম লাগব। 

- লাগবে না... 

> তেল মালিশ লাগত না, গোসলও করতা না, সকালে মধু খাইতে কইলাম ঐটাও পারবা না... পারবা টা কি তুমি?

- তুমি লেপের নিচে আসো। তোমাকে হাগ দিতে পারব! 

> -_-
squint emoticon

অহেতুক মিথ্যে


সম্ভবত গত রমজানের ঘটনা। কোন এক জুমাবার কোন একভাইয়ের পোস্টে কোন এক প্রসঙ্গে কমেন্ট করেছিলাম অনেকটা এমন, আমাদের এখানেতো সাড়ে বারোটা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত জুমার জামাত হয়। ভাই আমার কথাটা আমলে নেন নি। অনলাইনে কেউ কারো কথা সহজে বিশ্বাস করতে চায় না। হেসে উড়িয়ে দেয় বা পালটা হাজারো প্রশ্ন করে। 

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, শুধু শুধু মিথ্যে কথা বলে কারো লাভটা কি? 

মানুষের অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যে একটি হল সে তার নিজস্ব গন্ডির বাইরে চিন্তা করতে পারে না। ছোটবেলা থেকে সেসব ঘটনা আমরা আমাদের জীবনে দেখে আসছি প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা না হলে সেগুলোর ব্যতিক্রম আমরা মেনে নিতে পারি না।

চাকুরীতে ঢোকার আগে চাকুরী সম্পর্কে আমার ধারনা যেটুকু ছিল সেটা বিটিভিতে নাটক দেখেই হয়েছিল। চাকুরী মানেই একটা টেবিল থাকবে, এক পাশে একটা পার্সোনাল কম্পিউটার, টেবিলের এক পাশে কিছু ফাইল, একটা রিভলভিং চেয়ার - এইগুলোই মনে হত। 

চাকুরী পাবার পর আমার ধারনা পরিবর্তন হল। শুধু ডেস্ক জব হয় এমনটা নয়, প্রচুর জব আছে ফিল্ড রিলেটেড। বাবুর্চির অফিস হল রান্নাঘর, দাড়োয়ানের অফিস সদর দরজার পাশে, ট্রাফিক পুলিশ অফিস করেন রাস্তায় রাস্তায়, গাড়িচালকের অফিস তার গাড়ি, মুদি দোকানদারের অফিস তার দোকান ......... 

একেকজনের অফিস যেমন একেক রকম তেমনি একেক জনের অফিসের সময় একেক। সাধারন একটা ধারনা অফিস হল ৯টা-৫টা। দেশের অনেক মানুষের জন্য এটা সত্য হলেও অসংখ্য মানুষের জন্য এটা সত্য নয়। ট্রাফিক পুলিশকে জিজ্ঞেস করুন তার অফিস টাইম ক'টা থেকে ক'টা। জিজ্ঞেস করতে পারেন ফার্মেসীর মালিক কে। জিজ্ঞেস করুন আনসার বাহিনীর কোন সদস্যকে, তাদের চাকুরীর টাইমিং টা কি। গার্মেন্টস, ফ্যাক্টরিতে কর্মরত কোন মেয়েকে জিজ্ঞেস করতে পারেন। 

আমার জানামতে অফিস টাইমিং দু'ধরনের। যেসব অফিস শুধু দিনের বেলায় খোলা থাকে তাদের টাইমিং একরকম। এখানে জেনারেল শিফট ডিউট চলে। সকাল ৮ টা থেকে বিকেল ৫ টা অথবা অফিসে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দিনের যেকোন আটঘন্টা। আবার যেসব ফ্যাক্টরি ২৪ ঘন্টা চলে তাদের টাইমিং অন্যরকম। এখানে চলে রোটেটিং শিফট। একগ্রুপ অফিস করে ফিরে আসে। আরেকগ্রুপ দায়িত্ব বুঝে নেয়। গ্রুপের সংখ্যা অফিস বেধে ২ থেকে ৪ হতে পারে। যেসব ফ্যাক্টরিতে দু'টো গ্রপ তারা ১২ ঘন্টা করে অফিস করে। ৮ ঘন্টা নরমাল অফিস আর ৪ ঘন্টা ওভার টাইম। 

যাই হোক, আমরা অফিস করি ৪ টা গ্রুপে। তিন গ্রুপ ৮ ঘন্টা করে ২৪ ঘন্টা পুরো করে আর এক গ্রুপ রেস্টে থাকে। পালাক্রমে সব গ্রুপই রেস্ট পায়। 

এবার আসি জুমা প্রসঙ্গে। যেহেতু এক গ্রুপ অফিসে গেলে আরেক গ্রুপ ফিরবে সেহেতু আমরা এক সাথে জুমা পড়তে পারি না। আমরা জুমা পড়ে অফিসে যাই, তারা ফিরে আসে। এখন তারা কি জুমা পড়বে না? কিন্তু একই মসজিদে একাধিক জুমা পড়ার উপায় নেই। 

এই সমস্যার সমধান হল মসজিদ থাকবে দু'টো। আমি বাংলাদেশ ক্যামিক্যাল ইন্ড্রাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের (BCIC) যতগুলো প্রতিষ্ঠানে গিয়েছি সব জায়গায় একাধিক মসজিদ দেখেছি। 

স্বাভাবিকভাবে আমাদের এখানে প্রধান মসজিদে (বড় মসজিদে) জুমার জামাত হয় বেলা ১ঃ১৫ মিনিটে। আমরা নামায পড়ে খাওয়া দাওয়া সেরে অফিসে যাবার পর আমাদের কলিগেরা ফিরে এসে অন্য মসজিদে (ছোট মসজিদে) জুমা পড়েন বেলা আড়াইটায়। এখানে প্রায় সোয়া এক ঘন্টার পার্থক্য। 

আবার বিগত কয়েকবছর ধরে রমজানের সময় সেহ্‌রির সুবিধার্থে অফিস টাইম একঘন্টা করে এগিয়ে দেয়া হচ্ছে। এতে করে যোহর এবং জুমার নামাযের সময়ও পরিবর্তিত হয়ে যাচ্ছে। আগে যারা দুপুর দু'টায় অফিস যেতো রমজানে তারা যাবে বেলা একটায়। তাই তখন ছোট মসজিদে অফিসগামীদের জন্য জুমা হয় সোয়া বারোটা বা এর কাছাকাছি সময়ে। এলাকার অনেক লোকজনও এই জামাতে শরীক হয়। আর আমরা অফিসে যাবার পর আমাদের সহকর্মীরা ফিরে এসে বড় মসজিদে জামাত ধরেন বেলা দেড়টায়। 

চট্টগ্রাম শহরের মেহেদিবাগ জামে মসজিদে কয়েকবার জুমা পড়েছি। রমজান ছাড়াই সেখানে জামাত পড়েছি সোয়া দু'টো-আড়াইটার দিকে। 

কাজেই জুমার জামাতের সময়সূচির ব্যাপারে যে কথাটি বলেছিলাম সেটা নিছক মজা করার জন্য ছিল না। বরং সেটাই সত্য ছিল। 

আপনাদের এলাকায় জুমা/জামাতের সময়সূচি সম্পর্কে ইচ্ছা করলে শেয়ার করতে পারেন। 
smile emoticon

Theory Of Complicacy

True Story!

I never mean to make you upset though couple of lines of my lust post made you upset and I'm not sorry for that cause I know trues make people upset! But I can do one thing for sure. I can speak out more trues. I was trying to write those trues for last few months after you left me here, alone! 

I said those lines made me upset once and now they are upsetting you. You didn't ask why those does not hurt me much now. Yet, I am telling you the cause. Because of you! Now you are in my life and what can be the happiest thing ever happened to me? 

It's been 8 years since I left home for job. I passed the worst time here during the month of Ramadan and If I had to stay here during EIDs. But not the last Ramadan. I had the best ever Ramadan this year cause you were with me. First time I tested some incredible home made foods that you made just only for me. I never had Dabli with puffed rice before, nobody made singara for me before, none made jorda, halim, thai soup for me before. I can tell you a lot of things like these. I don't care about the test. But what amazed me is your love behind these for me! 

You are the person who loved me most. And you are the person who I love most! 

Is not that enough for you?

You are enough for me, It's the damn truth!

ফেসবুক বন্ধের সুফল!


প্রতিবার আওয়ামীলীগ সরকার যখন ফেসবুক বন্ধ করে তখন আমি নতুন কিছু শিখতে পারি। যতদূর মনে আছে ২০১০ সালে এক ছেলে শেখ হাসিনার ছবি এডিট করে আপত্তিকর করে ফেসবুকে পোস্ট করার পর সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়। ঐ ছেলেকে গ্রেফতার করার পর ছবি ডিলিট করার পর ফেসবুক পুনরায় চালু করা হয়। পয়েন্ট টু বি নোটেড ইউর অনার, কাউকে খুন বা ঐ জাতীয় অপরাধের জন্য ফেসবুকে বন্ধ করা হয় নি। 

২০১০ সাল ছিল আমার জীবনের সবচাইতে সুখের বছর। অসংখ্য নতুন নতুন আনন্দমধুর অভিজ্ঞতার ভিতর দিয়ে প্রথমবারের মত পার হই। ফেসবুক বন্ধ হওয়াটাও আমার জন্য আনন্দেরই ছিল। কিভাবে, কেন- সে প্রসঙ্গে না হয় না-ই গেলাম। 

তখন ব্লগে যাতায়াত ছিল। ব্লগারদের পোস্টের মাধ্যমে শিখলাম "প্রক্সি সার্ভার" বলে একটা ব্যাপার আছে। তারপর গুগলের সাহায্য নিয়ে গুগল ক্রোমে Stealthy এড অন্স ইনস্টল করে নিলাম। তখনকার গ্রামীনের গরুর গাড়ী যারা চালিয়েছেন তারা প্রক্সি সার্ভার ব্যবহারের জন্য যে ধৈর্য্যের প্রয়োজন হয় সে সম্পর্কে ভালই ধারনা থাকার কথা। গুগলের পোকা ঘুড়ে চার-পাচ কেবিপিএস স্পিডে কতক্ষন ডাউনলোড হয়ে যখন ক্রোম ক্লান্ত হয়ে যায় তখন দেখিয়ে দেয় The page you requested can't be loaded right now অথবা Connection Problem. রিফ্রেশ বাটন চাপি। এভাবে চলতে থাকে যতক্ষন ফেসবুক না আসে। ফেসবুকে লগিন করার পর অন্যদের ফোনে প্রক্রিয়া শেখাই কিভাবে Stealthy দিয়ে ফেসবুকে চালাতে হয়। তারা সফল হবার পর ফেসবুকে আমাকে মেসেজ দেয়। তাদের আনন্দ দেখে আমার আনন্দ আরো বাড়ে! 

এবার যখন বন্ধ করা হল প্রথমে আমি বুঝতে পারি নি। ভেবেছি আমার ডাটা ক্যারিয়ারের সমস্যা। পরে রাতে শুনলাম। পুরনো প্রক্রিয়ায় ঢুকতে চেয়েছিলাম। স্টিলথি দিয়ে কাজ হয় না। পরে প্রক্সি সাইটে গিয়ে ফেবুতে ঢুকলাম। ফিলিংসটা ২০১০ সালের মতই ছিল। তখন মানুষজন তেমন একটা ফেসবুকে ব্যবহার করত না। বহু পোলাপান প্রক্সির ব্যাপারটা জানত না। তারা ফেবুতে নেই। চ্যাটে যেখানে ৬০-৭০ জন থাকে সেখানে তখন ৬-৭ জন। তাদের ৮০ ভাগই প্রবাসী/বিদেশী ফ্রেন্ড। 

এবার প্রথমদিকে লগিন কোড আসত মোবাইলে। সরকার মহোদয় তা বুঝতে পেরে সেটাও বন্ধ করে দিল। তখন বিপাকে পড়ে গেলাম। ব্রাউজারের সেটিং অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময় পর পর হিস্ট্রি/ক্যাচ অটো রিমুভ হয়ে যায়। আর এই ব্যাপারটা মাথায় না থাকায় মোবাইলের ব্রাউজারের হিস্ট্রিও মুছে ফেলি। এখনতো বিপদ। ঢুকতে গেলে কোড চায়। কোডও আসে না। ঢুকতেও পারি না। একারনেই শেষের দিকে ২-৩ দিন এই আইডিতে ছিলাম না। 

চোর পালালে বুদ্ধি যেমন বাড়ে তেমনি ফেসবুকে খুলে দেবার পর আমি শিখলাম আইডি ভেরিফিকেশন ছাড়া কিভাবে লগিন করার আরেকটা পদ্ধতি হাতে রাখতে হবে। এই পদ্ধতিতে ফেসবুকের Settings এ গিয়ে Security তে ক্লিক করলে Code Generator পাওয়া যাবে। সেখানে ক্লিক করলে আপনার পাসওয়ার্ড দিতে বলবে। দিলে আপনাকে ১০ টা কোড দেয়া হবে। সেগুলো প্রিন্ট করে নিরাপদ জায়গায় রাখতে হবে। অথবা স্ক্রিনশট নিয়ে রাখতে হবে। অথবা লিখে সংরক্ষন করতে হবে। 

এরপর যদি কখনো কোডের দরকার হয় কিন্তু ফেসবুক থেকে কোড আসছে না। আবার অন্য কোড ডিভাইস থেকেও এপ্রুভ করতে পারছেন না তখন এই ১০ টি কোডের যেকোন একটি কোড দিয়ে আপনি ফেসবুকে ঢুকতে পারবেন। যে কোডটি ব্যবহার হয়ে যাবে সে কোড আর ব্যবহার করা যাবে না। পরেরবার অন্য আরেকটি কোড দিতে হবে। ১০ টি কোড দিয়ে ১০ বার লগিন করা যাবে। ১০ বারের পর ফেসবুক থেকে আবার নতুন করে কোড সংরক্ষন করে নিতে হবে আগের মত করে। মোবাইলে কোড আসলে যেখানে দেন সেখানেই কোড লিখতে হবে। তাহলেই ফেসবুক আপনাকে ফেসবুকে ঢুকতে দেবে। কাজেই কোড নামিয়ে রাখতে পারে এখনি। 

আর যাদের একাউন্টে মোবাইল নাম্বার দেয়া নেই তারা ফটো ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে ঢুকতে পারবেন। বর্তমান যুগে অতীব বিপদজনক একটি প্রক্রিয়া। এই যুগে কার ছবিতে কে ট্যাগ খায় বলা মুশকিল। 

এবারে ইউর অনার, আমাদের প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেছেন, মানুষের জানের নিরাপত্তা দিতেই নাকি ফেসবুক বন্ধ করা হয়েছে এবং এতে নাকি জানমালের নিরাপত্তা সাধন করা গিয়েছে। উদাহরনস্বরুপ তিনি বলেন, চাদে মানুষ দেখতে পাওয়া এবং রামুর বৌদ্ধমন্দির নিয়ে ফেসবুকে গুজবের জের ধরে বহুমানুষ হতাহত হয়েছে। 

ইউর অনার, যদি তাই হয় তবে সেসময় যারা ফেসবুক বন্ধ করেনি তাদের বিরুদ্ধে কেন জানমালের নিরাপত্তা বিধানের ব্যর্থতার অভিযোগ আনা হবে না? কেন তাদেরকে কাঠগড়ায় দাড় করানো হবে না? আর যদি তাদের কোন দায় না থাকে তাহলে তাহলে কেন অহেতুক ফেসবুক বন্ধ করা হল? যারা মেগাবাইট কিনতো শুধু ফেসবুক চালানোর জন্য তাদের ক্ষতিপূরণ কে দেবে? যারা বিভিন্ন অপারেটরদের ফেসবুক প্যাকেজগুলো গচ্চা দিয়েছে তাদের টাকা হিসেব কে দেবে? আর ফেসবুক বন্ধ করার পরও কেন সরকারী লোকজন সরকারের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ফেসবুক চালিয়েছে? 

দ্যটস অল ...

এন্ড্রয়েড


এন্ড্রয়েড ফোন আসার বহুদিন পর নিজের জন্য একটা এন্ড্রয়েড কিনলাম। এর আগে যে তিনটা এন্ড্রয়েড কিনেছিলাম সেগুলো কয়েকদিন ব্যবহার করার পর যার জন্য কিনেছিলাম তাকে দিয়ে দিয়েছি। ব্যবহার করার কারন ছিল এন্ড্রয়েড সম্পর্কে ধারনা নেয়া কারন যাকে দিচ্ছি সে আগে এন্ড্রয়েড ব্যবহার করে নি। সে ব্যবহার করতে যেয়ে কোন সমস্যায় পড়লে আমাকেই তার সমাধান করতে হবে। দেশীয় কোম্পানি হিসেবে ওয়ালটন আমার নজরে ছিল। প্রথমবার মোবাইল কেনার সময় দ্বিধান্বিত ছিলাম ওয়ালটন কিনব কি না। টাকা নিয়ে রওনাও দিয়েছি ওয়ালটন কেনার জন্য। কিন্তু সানমার ওশান সিটিতে গিয়ে প্রথমেই চোখ পড়ল স্যামস্যাং এর শো রুমে। ডিসপ্লেতে রাখা Samsung Galaxy S-7952 সেটা আমার এত পছন্দ হল যে অন্য সেটের চিন্তা বাদ দিয়ে এটাই নিলাম। অবশ্য শোরুমে ব্ল্যাক টা ছিল না। বাইরে থেকে নিতে হয়েছে। আজো এন্ড্রয়েডের কথা মনে হলে ঐ সেটের কথাই মনে পড়ে। 

এর পর আরেকটা সেট নিলাম। তখন অবশ্য আমি যে কনফিগারেশন আর বাজেটের কথা ভাবছি তাতে স্যামস্যাং নিয়ে আমার পোষাবে না। আর যদি চাইনিজ এসেম্বলড সেট নেই তাহলে সিম্ফনি নিব কেন ওয়ালটন থাকতে? নিলাম একটা ওয়ালটন। সেটটা খুবই পাতলা ছিল। আমার সাথে আমার এক কলিগও ছিলেন। উনি একটা নকিয়া উইন্ডোজ ফোন নিলেন আর ওয়ালটনও একটা নিলেন আমার কেনা মডেল। 

মোবাইল কেনার পরের দিনই উনি সেটা আমার আরেক জুনিয়র কলিগের কাছে বিক্রি করে দিলেন। সম্ভবত ভাবি ওয়ালটন সেট ব্যবহার করতে রাজি হয়নি। আমারটা নিয়াও পড়লাম মুশকিলে। গেম খেলছিলাম Temple Run Oz। হঠাৎ দেখি ডিসপ্লে কেমন যেন হয় গেল। সেট কেনার দুই দিনের মধ্যে আগ্রাবাদের চিপার মধ্যে ওয়াল্টনের কাস্টমার কেয়ার খুজে বের করে সেট ঠিক করতে দিয়ে আসলাম। 

আসলে ওয়ালটন নিয়ে আমার মধ্যে দ্বিধা ছিল যথেষ্ঠ। কেউ ওয়ালটনের সুনাম করছিল আর কেউ কেউ খুবই বিরক্তি প্রকাশ করেছিল। সেট কেনার দুই দিনের মধ্যেই যদি কাস্টমার কেয়ার যেতে হয় তাহলে বিরক্তি-ক্ষোভ থাকাটাই স্বাভাবিক। যাই হোক ১০-১৫ দিন পরে গিয়ে নিয়ে আসলাম। তারপর যার জন্য কিনেছি তাকে দিয়ে দিলাম। এই সেটের সমস্যা ছিল ব্যাক ক্যামেরার চেয়ে ফ্রন্ট ক্যামেরায় ছবি ভাল আসত আর নেট ব্রাউজ করে গরম হয়ে যেত। 

পরে জানলাম পোলাপান দুষ্টুমি করে ওয়ালটনের নাম দিয়েছে ইস্ত্রি! আপনার ঘরে ওয়ালটন সেট থাকলে আপনার আর ইস্ত্রি দরকার হবে না! 

তৃতীয়বার কিনলাম ওয়ালটন এইচএম মিনি। সেট কেনার সময় আমি বড় ব্যাটারির সেট প্রেফার করি। বার বার চার্জ দেয়ার আমার কাছে খুবই বিরক্তিকর একটা ব্যাপার। তাই এইচ এম মিনিটাই কিনলাম। ৪০০০ মিলি এম্পিয়ার ব্যাটারীর এই সেট টি আমি নিজে ব্যবহার না করেই যার জন্য কিনেছি তাকে দিয়ে দিলাম। সবই ভাল। তবে আগেরটার মত এটাতেও একই সমস্যা। ব্যাক ক্যামেরার চেয়ে ফ্রন্ট ক্যামেরায় ছবি ভাল আসে! কি অদ্ভূত সেট ওয়ালটন বানায় তারাই ভাল বলতে পারবে। এই সেটের ফ্ল্যাশ নিয়েও ব্যবহারকারীনী আমার নিকট অভিযোগ করেছেন। আমি তাকে ক্যামেরার কিছু ফাংশন শিখিয়ে দিলাম যেন লো লাইটেও ছবি তোলা যায়। 

পোর্টেবল হার্ড ডিস্কে অনেকগুলো মুভি জমে আছে। সময়ের অভাবে দেখা হয় না। এছাড়াও সময় থাকলেও অনেকসময় মুভি দেখার মুড থাকে না। কিন্তু হার্ড ডিস্ক খালি করতে হবে। কি করা যায়? ভেবে চিনতে মোবাইল কেনার সিদ্ধান্ত নিলাম। মুভি লোড করে রাখব, অফিসে কাজের ফাঁকে দেখব, ভ্রমণের সময়ও দেখা যাবে। যেহেতু মুভি দেখবো সেহেতু এই মোবাইলটার ব্যাটারী ব্যাকআপ এক্সিলেন্ট হতে হবে। 

কিনলাম Walton Primo RM2 ! 

এর ব্যাটারী ৫০০০ মি এম্পিয়ার, ব্যাটারী সহ ওজন ১৭২ গ্রাম প্রায়। একটু ভারী। ভারী হলেই ভাল। পকেটে রাখার পর যদি মনে না হয় মোবাইল রেখেছে তবে কোনদিক দিয়ে চুরি হয়ে যাবে টেরও পাবো না। 

এর ডিসপ্লেটা অসাধারন! কালার পিসির চেয়ে একবিন্দু কম নয়। ১৩ মেগা পিক্সেল ব্যাক ক্যামেরা এবং ৫ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরা। এক পাশে পাওয়ার বাটন, অন্যপাশে ভলিউম বাটন। উপরে .৩ এম এম হেডফোন জ্যাক আর নিজের দিকে স্পিকার ও চার্জিং পয়েন্ট। সেট চার্জ হতে সময় নেয় প্রায় ৩ ঘন্টা। এন্ড্রয়েড ললিপপ ভার্সনে চলে। ৯০-১২০ মিনিটের ব্লু রে প্রিন্টের মুভি টানা দেখলে (হেডফোনে গুজে) চার্জ ক্ষয় হয় মাত্র ১০% ।

স্ক্রিনের সুরক্ষায় রয়েছে সেকেন্ড জেনারেশন গরিলা গ্লাস। টাচটা খুবই লাইট প্রথমদিককার সেটগুলোর মত খসখসে নয়। 

এর ১৬ গিগাবাইট ইন্টারনাল মেমোরী এবং ২ জিবি র‍্যামের তুলনায় প্রসেসরটা একটু পুরনো। সম্ভবত মালি ৪০০ সিরিজের। তবে আমার সমস্যা নয় না। অবশ্য আমি ভারী কোন গেম খেলি না। মিনিয়ন রাশ খেলি শুধু। ভারী গেম খেললে কি অবস্থা হবে বলতে পারব না। 

তবে এর ব্রাউজিং এক্সপেরিয়েন্স তেমন সুবিধার লাগল না। প্রচুর চার্জ ক্ষয় হয় নেট চালালে আর সেট গরমও হয়। আমি যেখানে থাকি সেখান মোবাইলের নেটওয়ার্ক এমনিতেই দুর্বল। এই কারনেও এমনটা হতে পারে। এর অন্যান্য ফিচার গুলার মধ্যে এন্টি থেফট এবং বিভিন্ন গেস্টার যোগ করার বিষয়টি উল্লেখ করা যেতে পারে। আর এই সেটের সাথে দেয়া চার্জার ছাড়া অন্যকোন চার্জার দিয়ে চার্জ করলে বেশি সময় লাগে। 

যারা মোবাইলের রিভিউ লিখে বেড়ান তাদের কাছে এই সেটটির বেশ গ্রহনযোগ্যতা রয়েছে। আর আমিও ব্যবহার করে এখন পর্যন্ত সন্তুষ্ট! 
smile emoticon
যারা নতুন মোবাইল কেনার কথা ভাবছেন তারা এই সেটটির কথা ভেবে দেখতে পারেন। মূল্য ১০,৯৯০ টাকা শোরুমে। বাইরে কিছু কম পেতে পারেন। তবে আমি শোরুম থেকেই কিনতে বলব। কারন তাতে এক্সেসরিজ গুলো অরিজিনাল পাবেন। 

ধন্যবাদ।

একটু খানি রস!


ঘুমাবার আগে ছোট্ট একটা গল্প বলি। কিছুক্ষন আগেই গল্পটা শুনলাম। এক লোকের গরু ঢুকে গিয়েছে মসজিদে। মসজিদের হুজুর ক্ষেপে গিয়ে নালিশ দিলো গ্রামের মাতব্বরের কাছে। বিচার বসল। মাতব্বর সাহেব প্রথমেই গরুর মালিকের খোজ নিতে বললেন। খোজ নিয়ে দেখা গেল ওটা মাতব্বরেরই গরু। এখন মাতব্বর হুজুরকে কাছে ডেকে বললেন,

"হুজুর, ঐটাতো গরু! বোঝে না। তাই মসজিদে ঢুকে পড়েছে। আপনি আমাকে কখনো দেখেছেন মসজিদে ঢুকতে?"

Tag Of War


First thought :

What do you think of me? I have plenty of money with a lot to lend? I helped you to get out of trouble several times. Does that mean I have to do that again? I already lend tk 9k this month. I pay tk 13k every month as house rent. I almost run two families now. What do you think? My company pay me billion tk per month and there remains a lot at the end of the month? You enjoy your time with everybody else and when you're in trouble you scream for my help. What am I? A bank? Or do I own a bank? And if I say you YES, how many times I have to do that? I help you and you people does not pay back on time. But I have to carry the tax as well as zakat! Can you tell me why should I carry the losses? 

I am tired! I am tired of helping people!

Second thought:

May be they are asking for help because I am in a better position in life by the grace of Almighty ALLAH!

আমি চোর


চোরের দেশে চুরি না করার উপায় কি? 

কথা আসলে বলতে চাচ্ছিলাম আয়কর নিয়ে। যারা এখনো আয়করের পাল্লায় পড়েন নি তারা পড়ে দেখতে পারেন। আর যারা আয়করের গ্যাড়াকলে পড়ে গিয়েছেন তারা আমার সাথে অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে পারেন। 

প্রায় আটবছর আগে চাকুরীতে যোগদানের বছরখানেকের মধ্যেই প্রাতিষ্ঠানিকভাবেই আয়করের খাতায় নাম উঠে যায়। যে তৃতীয় পক্ষ আমাদের কাগজপত্র নাড়াচাড়া করত তার নাম ছিল সম্ভবত মাওলা ব্রাদার্স। আয়করের কিছুই বুঝতাম না বিধায় ওরা যা বলত তাই করতাম, যেখানে সই করতে বলত করে দিতাম। আমাদের কোম্পানি আবার আমাদের কে বাধ্যতামূলক ঋণ দেয় যেন ঋনের টাকা বিনিয়োগ করে আয়কর রিবেট পাওয়া যায়। এই রিবেটের সুবিধা এখনও পুরোপুরি বুঝে উঠতে পারি নি। কোম্পানিতো আয়কর দিয়েই দিচ্ছে তাহলে ঋন দেয়ার সুবিধাটা কি? 

সে যাই হোক। একবছর সই করে দিতাম, পরের বছর আবার দিতাম। তথ্য লেখালেখির কাজ সব মাওলা ব্রাদার্সের লোকেরাই করত। কয়েকবছর এভাবে চলার পর একদিন দেখলাম আমার মোট সম্পত্তি ৩০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে! নগদ টাকা কাগজে কলমে প্রায় ২০ লাখ! অথচ শেয়ার বাজারে কিছু বিনিয়োগ ছাড়া আর কোন টাকাই নেই। তাও কোম্পানি যা ঋণ দেয় তাই শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করি। এভাবে কিছু টাকা জমেছে। আর বাকি যা বেতন বোনাস পাই তা দিয়ে সংসার চলে যায়। 

কাজেই গতবছর যখন মাওলা ব্রাদার্সের লোকজন আসল তখন তাদেরকে বললাম আমারতো এত সম্পদও নেই, হাতে নগদ টাকাও নেই। কিন্তু কাগজে কলমে আমি প্রায় অর্ধকোটি টাকার মালিক হয়ে গিয়েছি। এটা অবশ্যই কমাতে হবে। উনারা পরামর্শ দিলেন তাহলে মোট খরচ বাড়াতে হবে। ঠিক আছে আনুমানিক খরচসমূহ বাড়িয়ে দিলাম। 

চলতি অর্থবছরে মাওলা ব্রাদার্সের সাথে কোম্পানি চুক্তি বাতিল করে হুদা ভাসানী কোম্পানির সাথে নতুন চুক্তি করে। মাওলার অভিযোগ আমাদের কোম্পানিত ঠিকমত তাদের প্রাপ্য দিচ্ছে না। আর কোম্পানি বলছে চুক্তিতে যা আছে তাই দেয়া হবে। এই দ্বন্দে হুদা ভাসানীর সাথে চুক্তি হল নতুন করে। 

হুদা ভাসানী যখন আমাদের পুরাতন কাগজপত্রের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে গেল তখন নতুন কিছু তথ্য জানা গেল যে, মাওলা ব্রাদার্স গত ১৪-১৫ অর্থ বছরের কাগজগুলো জমা দেয় নি। আর ১৩-১৪ অর্থ বছরের যে কাগজ জমা দিয়েছে তাতে সংযুক্তি হিসেবে কোন কাগজই দেয়নি! শুধু রিটার্ন ফর্ম জমা দিয়েছে। 

১৪-১৫ কাগজ ঘাটতে গিয়ে দেখি আরেক ঘাপলা। এর আগের বছরের মোট সম্পত্তি যা ছিল সেটা তারা তুলে নি। আমি বলেছি নগদ টাকা কমাতে আর তারা পুরো সম্পত্তি গায়েব করে দিয়েছে। পুরো ৩৫ লাখ টাকার ঘাপলা! 

১৪-১৫ এবং ১৫-১৬র কাগজপত্র ঘাটতে যেয়ে আমার এই ঘাপলা চোখে পড়ে। হুদা ভাসানীর যে প্রতিনিধি সাথে আমার কথোপকথন হয়েছে তিনি এই ঘাপলা ধূর করার পর মোট সম্পত্তি আরো প্রায় ৮ লাখ টাকা বেড়ে গেল। গত বছরের তুলনায় এই বছর সম্পত্তি বেড়েছে প্রায় তিন লাখ! ক্যাশ ইন হ্যান্ডও বেড়েছে! অথচ আমি মানিব্যাগে ২ টা ৫০০ টাকা নিয়ে ঘুড়ে বেড়াই। কিছু খেতে মন চাইলেও কিনি না। কাপড়চোপড় কেনা দরকার সেটাও কিনছি না। মাসের মাত্র ১৬ তারিখ। বাকি মাসটা চলতে হবে তো... 

এত টাকার সম্পত্তি নিয়ে বড়লোক হয়েছি এখন ছোটলোক হতে হবে না? ছোটলোক হবার জন্য করনীয় কি? করণীয় একটাই গত অর্থবছরের খচর বাড়তি দেখাতে হবে। এর আগেই একটা আনুমানিক খরচ দিয়েছিলাম যে, কোন খাতে কত টাকা খরচ হয়েছে। এই খরচে কুলাচ্ছে না। বরং সম্পত্তি আরো বেড়ে গিয়েছে। আয়ের সমান ব্যয় হচ্ছে না। অথচ হাতে কোন টাকা নেই। তাহলে টাকা গেল কোথায়? আল্লাহই ভাল জানেন! 

কাজেই আগে যে খরচ দেখিয়েছিলাম সম্পত্তি কমানোর জন্য এখন খরচ প্রায় দ্বিগুন করে দিলাম। এখন আয়ের চেয়ে ব্যয় বাড়ল। মোট সম্পত্তি ও নগদ টাকার পরিমান কমে গেল। মনের ভিতরে খচখচ করছে। 
unsure emoticon
 

আয়কর রিবেটের ক্ষেত্রে এই নিয়ম আমার জানা ছিল না যে, যেখান টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে সেখানে বিনিয়োগের পরিমান যদি তুলে ফেলা টাকার পরিমানের চেয়ে কম হয় তবে আর বিনিয়োগকৃত টাকা রিবেটের জন্য প্রযোজ্য হয় না। অর্থাৎ কোম্পানি যদি আমাকে ১ লাখ টাকা ঋণ দিয়ে থাকে বিনিয়োগ করার জন্য এবং আমি শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করি তাহলে ঐ অর্থবছরে যদি আমি ২ লাখ টাকা শেয়ার বাজার থেকে তুলে ফেলি তাহলে বিনিয়োগ কৃত ১ লাখ টাকা বিনিয়োগ বলে গন্য হবে না। 

কাজেই ঐ এক লাখ টাকার জন্য যে ট্যাক্স কোম্পানি দিয়ে দেবার কথা ছিল সেটা আর তারা দিবে না। আমাকে দিতে হবে। এই ফাঁপড়ে পড়ে দেখি আমার আয়কর দিতে হবে প্রায় ১২ হাজার টাকা। পকেটে দুই হাজার টাকাই নেই আর আমি দিব ১২ হাজার টাকা! 

এর থেকে পরিত্রাণের উপায় কি? উপায় নেই। তবে জুয়া খেলার উপায় আছে। উনারাই বলে দিলেন আপনার বিনিয়োগ আমরা দেখিয়ে দিচ্ছি। কিন্তু কোন কারনে এটা যদি রাজস্ব বোর্ডের কেউ খতিয়ে দেখে তাহলে কিন্তু পরবর্তীতে আপনাকে ১২ হাজার টাকা দিয়ে দিতে হবে। আর যদি না পড়ে তাহলে তো হলই। 

এটাও চুরি। কিন্তু সম্মত না হয়ে উপায় কি? উনারা বুদ্ধি দিলেন পরে যদি এমন করেন তাহলে যে উৎস থেকে টাকা তুলে ফেলবেন সে উৎসে ঐ অর্থবছরে বিনিয়োগ করবেন না। তাহলে আর এই ঝামেলা হবে না। যেমন ধরেন, আপনি যদি সরকারী যাকাত ফান্ডে টাকা দিতেন তাহলে কিন্তু বিনিয়োগ হিসেবে গন্য হত! 

সরকারী যাকাত ফান্ড! ঐখানে দিব টাকা! ঐ ফান্ডের টাকা কোথায় কিভাবে খরচ হয় আল্লাহই ভাল জানেন। সরকারের সুনজরে পড়ে কোন বিশেষ উদ্দেশ্য হাসিল করার ইচ্ছাও নেই যে সরকারী যাকাত ফান্ডে টাকা দিব। 

সিস্টেমের ত্রুটিও একটা বড় ব্যাপার। ই-টিন রেজিস্টারের জন্য রাজস্ব বোর্ডের ওয়েব সাইটে প্রথমবার যখন ঢুকতে চেয়েছিলাম তখন ঢুকতে পারিনি। কারন কি? কারন রাজস্ব বোর্ডের সার্ভার সিকিউর প্রটোকল (HTTPS) সাপোর্ট করে না। এবং এর তত্তাবধানের ব্যবস্থা এতই দুর্বল যে আমাদের মধ্যে অনেকেই ই-টিন অনলাইনে করতে পারেন নি। কারনে তার পূর্বের টিন নাম্বার ইতোমধ্যেই কেউ রেজিস্ট্রেশন করে ফেলেছে। রাজস্ব বোর্ড থেকে যদি টিন নম্বর ফাঁস না হয়ে থাকে তাহলে কিভাবে কারো অজান্তে তার টিন নাম্বার দিয়ে ই-টিন রেজিস্ট্রেশন হল? আল্লাহই ভাল জানেন।

সিস্টেমের ত্রুটির কারনে কার মনোভাব কি বোঝার উপায় নেই। এতে করে ফাঁকিবাজদের খুব সুবিধা হয়েছে। তারা বড় বড় ফাঁকি মারতে পারছে। আর যারা আসলেই আয়কর দিতে চায় তাদের পড়তে হয় বিরাট গ্যাড়াকলে। 

গ্যাড়াকল থেকে মুক্ত থেকে চুরি না করার উপায় কি?

তেলাপোকার অভিশাপ


মাথার ভিতরে তেলাপোকার কুচকাওয়াজ শুরু হয়েছে। ব্যাকগ্রাউন্ডে রণ সঙ্গীত বাজছে। কাজী নজরুল ইসলামের রণসঙ্গীত নয়। তেলাপোকার রণসঙ্গীত। কথাগুলো এখনি বোঝা না গেলেও একটু পরেই ক্লিয়ার হতে শুরু করবে। 

"আমরা তেলা, করছি খেলা........."

করুক গে। আমি ভয় পাই নাকি? আমি তেলাপোকা ভয় পাই না। তেলাপোকাতো ভয় পেত রিমু। ভাবলেই হাসি আসে। তেলাপোকার মত সামান্য একটা জিনিসকে কেউ ভয় পায়? রিমু শুধু সামান্য জিনিসকেই ভয় পেত না, একটু বোকাটেও ছিল। ক্লাস নাইনে পড়া অন্য মেয়েরা যেখানে তাদের প্রেমকল্পনায় বিভোর সেখানে রিমুর এসব কিছুই ছিল না। এমনকি ক্লাশে সবচেয়ে দুষ্টু ছেলে সাজিদ যে তাকে পছন্দ করত এটাও সে বুঝত না। 

সাজিদ অবশ্য রিমুকে বোঝাতে চেষ্টা কম করেনি। সাজিদের ইচ্ছে ছিল আকার ইঙ্গিতে আগে বোঝাই, তারপর যদি ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায় তাহলে সামনা-সামনি বলা যাবে। সাজিদ কারো কাছে হেল্প না চেয়ে নিজেই নিজেই চেষ্টা করতে থাকে। 

ক্লাশ টেনে উঠার পর প্র্যাকটিক্যাল ক্লাসের জন্য ছাত্রছাত্রীদের মধ্য থেকে বিভিন্ন গ্রুপ করা হয়। কি আশ্চর্য্য দেখেন। যে একটা মেয়ে সাজিদের গ্রুপে পড়ল সেই মেয়েটাই রিমু! সাজিদ মনে মনে অসম্ভব খুশি হল। ক্লাসের ফাঁকে ফাঁকে ইতরামো, ফাঁজলামো সবই চলত। রিমু মাঝে মাঝে চোখ পাকানি দিলেও সাজিদ তেমন গাঁ করত না। কারন সাজিদের ধারনা ছিল এসব রিমু মনে মনে উপভোগই করে। 

সবচেয়ে বেশি মজা হয়েছিল সেদিন তেলাপোকার ব্যবচ্ছেদ হয়েছিল। হাঃ হাঃ হাঃ... 

মাথার যন্ত্রণাটা ধীরে ধীরে অসহ্য হয়ে উঠছে। সেই সাথে বাড়ছে তেলাদের রণসঙ্গীত! 

আমরা তেলা, করছি খেলা
মানি না গরীব-ধনী......... 

স্যার আগেই বলেদিয়েছিলেন আগামী সপ্তাহে তেলাপোকার ব্যবচ্ছেদ করা হবে। সবাই যেন একটা-দুটো তেলাপোকা ধরে নিয়ে আসে। সাজিদ অবশ্য একটা-দুটো ধরে ক্ষ্যান্ত হল না। ঘরময় ছুটোছুটি করে ৬ টা তেলাপোকা ধরে পলিথিন বন্দি করে স্কুলে নিয়ে গেল। 

সাজিদ এত তেলাপোকা দিয়ে কি করেছে সেই গোমর ফাঁস হল টিফিনের সময়। টিফিনের বাটি খুলেই রিমুর বিকট চিৎকার। চার-পাচটে তেলাপোকা তার বক্সের ভিতর! তাও জীবন্ত। বাক্সখোলা হতেই তেলাগুলো মনের আনন্দে রিমুর গায়ে ছোটাছুটি শুরু করল। এদিক ওদিক ছিটকে গেলেও দুই-একটা তার জামার ভিতর ঢুকে গেল। আর রিমুর সেকি চিৎকার! চিৎকার করতে করতে সারা ক্লাস ছুটে বেড়াচ্ছে ক্লাস টেনের একটা মেয়ে! কোথায় তার ওড়না ছিটকে গেল, কোথায় গেল স্কার্ফ?-কে জানে! 

ছোটাছুটির এক পর্যায়ে বেঞ্চের পায়ার সাথে বেধে হোচট খেল রিমু। টাল সামলাতে না পেরে পড়ে গেল। মাথাটা বেকায়দাভাবে দেয়ালের সাথে বাড়ি খেল। পরক্ষনেই রিমু জ্ঞান হারাল। 

এতক্ষন যারা রিমুর ছোটাছুটি দেখে হাসাহাসি করছিল এবার তারা সবাই চিৎকার করে রিমুকে ধরতে গেল। চারপাঁচজন মিলে রিমুকে পাজকোলা করে বাইরে নিয়ে এল। চিৎকার চেচামেচি শুনে এরই মধ্যে টিচাররা চলে এসেছেন। দ্রুত রিমুকে হাসপাতালে নেয়া হল। দুর্ঘটনার কারনে স্কুল ছুটি দিয়ে দিলেন প্রধান শিক্ষক। সবাই মিলে দলবেধে রিমুকে দেখতে হাসপাতালে চলে গেল। গেল না শুধু একজন। 

ক্লাস টেনের বিজ্ঞান শাখার কক্ষের এক কোণায় শুধু সাজিদ নামের একটা ছেলে বসে রইল।

রিমুর আর জ্ঞান ফেরেনি। ফিরবেও না কোনদিন। সে এখন অন্যজগতের বাসিন্দা। সাজিদকেও আর কখনো স্কুলে দেখা যায় নি। বন্ধুবান্ধবরা কেউ দেখতে আসলেও সে দেখা করেনি। কিছুদিন পর সাজিদরা অন্য এলাকায় চলে গেলে আর কেউ খোজ নিতে আসেনি। 

মাথার যন্ত্রনাটা অসহ্য পর্যায়ে চলে গেছে। খামচে ধরে সব চুল ছিড়ে ফেলতে ইচ্ছে করছে। মনে হচ্ছে অসংখ্য তেলাপোকা মগজটাকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে আর নতুন শক্তিতে তেলা সঙ্গীত গাইছে। মাথাটাকে ফাঁটিয়ে তেলাপোকাগুলোকে বের করে দিতে পারলে ভাল হত। 

দুম! দুম! দুম! 

আহ! এবার একটু শান্তি লাগছে। তেলাপোকার গুঞ্জন একটু যেন কমেছে। যদিও আমি জানি এখনি আবার শুরু হবে। হোক! আমি কি ভয় পাই? সবকটাকে পিষে মারব আমি। 

দুম! দুম! দুম! 

সামনের দেয়ালটা লালচে হয়ে গিয়েছে। দৃষ্টিও ঝাপসা হয়ে আসছে। 

কেউ একজন রুমে ঢুকেছে। দৌড়ে এসে কেউ একজন আমাকে ধরল। ফুঁপিয়ে কান্নার শব্দ যেন পেলাম।

"সাজিদ, বাপ আমার। এমন করিস না বাপ। শান্ত হ, শান্ত হ"

মা না বড় বিরক্ত করে। আমার কি এত কিছু শোনার সময় আছে? আমার মাথার ভিতরে তেলাপোকারা চিৎকার করছে,

"আমরা তেলা, করছি খেলা,
মানি না গরীব-ধনী,
তুই খুনী, তুই খুনী"

বাচ্চা ভয়ংকর, কাচ্চা ভয়ংকর!


আমার ধারনা বাচ্চাদের যন্ত্রনায় অতিষ্ঠ হয়ে মুজাই অনেকদিন আগেই একটা বই লিখেছিলেন। নাম হল "বাচ্চা ভয়ংকর, কাচ্চা ভয়ংকর" ! '৯৬ এর পরে যখন একুশে টেলিভিশন সম্প্রচারে এল তখন এই বইয়ের কাহিনীর উপর ভিত্তি করে একটা নাটকও দেখিয়েছিল। সেই নাটকে টাইটেল সং টা এখনো একটু খেয়াল আছে...

ভয়ে করে না বুলেট-বোমা, চোর আর হাইজ্যাকার!
রইসউদ্দিন মস্ত মানুষ, বেজায় সাহস তার!
শুধু বাচ্চা দেখলে হাটু কাঁপে, কাঁপে থর থর
বাচ্চা ভয়ংকর! আহা কাচ্চা ভয়ংকর! 

আমার অবস্থা কিছুটা রইসউদ্দিনের মত। হাটু কাঁপাকাঁপি অবস্থা। খুলেই বলি তাহলে। 

১. বিকেলবেলা এক বন্ধুর সাথে রাস্তায় হাটতে হাটতে আড্ডা দিচ্ছি। এই জায়গায় পৌছে দেখলাম দুই পিচ্চি রাস্তায় খেলছে। আমরা আরেকটু এগিয়ে গেলাম। ফেরার জন্য পিছন ঘুড়তেই দেখি এক পিচ্চি আরেক পিচ্চিকে দৌড়ানি দিয়েছে। সামনের পিচ্চিটা দৌড়ে এসে সোজা আমার উরুতে বাড়ি খেল। আমি অস্ফুস্টে "অক" করে উঠলাম। পিচ্চি আমারে ধাক্কা দিয়েই দৌড়। আমার বন্ধু যেন কিছুই বুঝতে না পারে সেজন্য দাত কেলিয়ে কথা শুনছিলাম। আশা করি, যারা এই স্ট্যাটাস পড়ছেন তারাও কিছু বুঝতে পারেন নি!

২. কোন একটা কাজে শহরে যাব। জানতে পেরে আমার এক কলিগ বললেন উনার মোবাইলে কি যেন সমস্যা হয়েছে। ঠিক করিয়ে আনতে পারব কিনা। আমি রাজি হলাম তবে বলে দিলাম যদি সময়ে কুলায় তাহলে নিয়ে আসব। নাহলে কিন্তু পারব না। উনিও আমার কথায় রাজি হলেন। তারপর ছেলে ফোন করে দিলেন সেটটা নিয়ে একটু রাস্তায় আসতে বাসা থেকে। অফিস থেকে ফিরে দু'জনে গাড়ি থেকে নামার পর দেখি উনার ছেলে দাঁড়িয়ে আছে। উনি তার কাছ থেকে সেটটা নিয়ে আমাকে দিয়ে বুঝিয়ে দিলেন কি সমস্যা। আমি সেট হাতে নিয়ে চলে আসছি তখন ঐ বিটলায় তার বাপকে জিজ্ঞেস করল,

"আব্বু, আংকেল কি মোবাইল ঠিক করেন?" 

squint emoticon
 

৩. ট্রেনে করি নরসিংদী যাচ্ছি। সিঙ্গেল কেবিন না পাওয়া ডাবল কেবিনে সিট কাটলাম। ট্রেনে উঠার পর একটা ফ্যামিলি উঠল। তাদের এক ছেলে, এক মেয়ে। নামবে কুমিল্লায়। কিছুক্ষন পর পাশের কামরা থেকে আরো এক পিচ্চি আসল তার বাবার সাথে। এই কামরায় নাকি তাদেরও একটা টিকেট আছে।

কিছুক্ষন ভালই চলল। কিন্তু বাচ্চাদেরতো আর আমাদের মত ইগো নেই। অল্পক্ষনের মধ্যেই তারা নিজেদের বন্ধ হয়ে গেল। এরপর যেন কামড়ায় নরক ভেঙ্গে পড়ল। এই একজন আরেকজনের গায়ে ঢলে পড়ে, এই মোবাইলে গান ছেড়ে দেয়। ফ্যানের সুইচ চাপে, বন্ধ করে। টেবিলের উপর বসে পড়ে। আর সোফার উপর লাফালাফিতো ফ্রী! 

লাফালাফির কারনেই হোক বা যেকোন কারনেই হোক নাকের ভিতর ধূলো ঢুকে চুলকাতে লাগল। 

"হ্যাএএচ্ছোওওওওও..." 

নিমিষে সব ঠান্ডা। আমি প্রথমে কিছুই বুঝতে পারি নাই। হঠাৎ করে সব স্তব্ধ হয়ে গেল কেন। মুখ তুলে দেখি বাচ্চাগুলা ভীত চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। পিচ্চি ছেলেটা সবার আগে সংবিৎ ফিরে পেল। তার সে নিজেই 

"হ্যাএএচ্ছোওওও..." 

আর বাকিগুলা ভয় পাবার ভান করে। তারপর আবার সে "হ্যাচ্ছোওওও" আর বাকিগুলা আঁতকে উঠে। 

মুখে ক্যাবলার মত হাসি নিয়ে বসে থাকলেও মনে মনে ফাজিলের ফাজিলগুলারে থাপ্রাইয়া দাত ফালাইয়া দিছি... 

৪. আমার দু'চোখে তিনটা অঞ্জলী হয়েছে একসাথে। ডানচোখের উপরের পাতায় আর বাঁ চোখের দুই পাতায়। ডাক্তারের কাছে গেলাম। এতগুলো একসাথে দেখে ডাক্তারতো অবাক। ওষূধ দেবার পাশাপাশি বলে দিলেন সানগ্লাস ব্যবহার করতে। অফিস ছাড়া বেশিরভাগ সময় ঘরে বসে থেকে আমি আগে থেকেই বাইরে গেলে রোদ সহ্য করতে পারতাম না। চোখ দিয়ে পানি পড়ত। কিন্তু সানগ্লাস পড়তাম না অফিসে ছাড়া। লজ্জা লাগত। কিন্তু এখনতো পড়তেই হবে। 

আমার একটাই স্পোর্টস সানগ্লাস! ওটাই পড়ে বের হলাম। উদ্দেশ্য অফিসে যাব। নিচে নেমে দেখি রাস্তায় পিচ্চিরা খেলাধূলা করছে। 

তোরা খেলাধূলা করবি কর। আমার দিকে তাকাস কেন? 

দুইটায় দেখি কতক্ষন হাঁ করে রইল। তারপর একজন বলে উঠল, "নায়ক"! তার দেখাদেখি অন্যজন আরেকজনকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠল,

"এই সর, সর। নায়ক আংকেল আইতাছে!" 

upset emoticon
 

এ বাবা, ও বাবা, বাচ্চালোগ মেরা পিছা না ছোড়ে!