Featured Post

I SAID NO TO QUANTUM METHOD

পূর্বে পোস্ট আকারে প্রকাশিত। কারও সাথে ঝগড়া করার জন্য এটা দেইনি। নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করলাম। কেউ মানতে না পারলে আমার কিছু করার নেই।  আ...

Friday, September 18, 2015

NO VAT ON EDUCATION

ঘুমাবার আগে ছোট্ট করে দু'টো গল্প বলে যাই। নাহলে হয়ত ঘুমটা ভাল হবে না। যাদের জানা আছে তারা স্কিপ করে নিচে চলে যান। বর্ণনায় কিছু এদিক সেদিক হলেও কিছু করার নেই।
ইদুরের উপদ্রবে অতিষ্ঠ হয়ে এক কৃষক ইদুর ধরার জন্য ফাঁদ পাতল। ফাঁদ দেখে ইদুর দৌড়ে গেল মুরগীর কাছে সাহায্য চাইতে। মুরগী ভেবে দেখল ফাঁদ পাতা হয়েছে ইদুরের জন্য। কিছু হলে ইদুরের হবে, তার তো কিছু হবে না। সে ইঁদুরের কথায় কান দিল না।
ইদুর গেল খাসীর কাছে। একই যুক্তিতে খাসীও তাকে ফিরিয়ে দিল। এরপর গেল গরুর কাছে। গরুর কাছেও পাত্তা না পেয়ে ইঁদুর নিরাশ হয়ে গেল। একসময় ফাঁদে ইদুর ধরা পড়ল। ইঁদুর খেতে তখন সাপও আসল। ফাঁদে আটকা পড়া ইঁদুরের কিচ কিচে সজাগ হয়ে কৃষক যখন ফাঁদ বের করতে গেল তখন সাপ তাকে দংশন করল।
কৃষককে তখন হাসপাতালে নেয়া হল। সাপের বিষ বের করা হলেও কৃষক ছিল দুর্বল। ডাক্তার তাকে ভালমন্দ খেতে পরামর্শ দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দিল। ভালমন্দ খাবারের প্রথম ফাঁড়াটা গেল মুরগীর উপর দিয়ে। কৃষকের অসুস্থতার খবর পেয়ে তার আত্মীয়-স্বজনরা তাকে দেখতে এল। তাদের খাওয়ার ব্যবস্থা করতে হয়। এবার খাসীর পালা। আত্মীয়দের আপ্যায়নে খাসীর জীবন গেল। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশন কৃষক মারাই গেল। তখন তার কুলখানীতে গরু জবাই দেয়া হল।
ইঁদুরের সমস্যা মুরগী, খাসী পার হয়ে গরুতে গিয়ে শেষ হল।
একবার তিন বিদেশী জঙ্গলে ঘুড়তে যেয়ে জংলীদের হাতে বন্দী হল। জংলীরা তাদের ধরে নিয়ে তাদের সর্দারের কাছে নিয়ে গেল। বহু অনুনয় বিনয়ের পর জংলী সর্দার তাদের এক শর্তে ছেড়ে দিতে রাজি হল। কি শর্ত? শর্ত হল তাদেরকে প্রত্যেককেই পৃথক পৃখকভাবে বন থেকে তাদের পছন্দমত সুন্দর কোন ফল এনে দিতে হবে। তারা রাজি হল। তারা যেন পালিয়ে যেতে না পারে সেজন্য তাদের সাথে দু'জন করে গার্ড দেয়া হল।
সর্বপ্রথম যে ফিরে এল সে একটা আমড়া সর্দারের সামনে রাখল। তখন সর্দার তার সঙ্গীদের নির্দেশ দিল আমড়াটা যেন ঐলোকের পিছন দিকে দিয়ে ভরে দেয়া হয়। তাই করা হল। সর্দারের কান্ড দেখে জংলীরা খুব মজা পেল। পরেরজন কি নিয়ে আসে সে অপেক্ষাতেই রইল।
পরের জন নিয়ে আসল আম। তাকেও একই ভাবে পিছন দিক দিয়ে............... । ভরে দেয়ার পর সবাইকে অবাক করে দিয়ে লোকটা হো হো করে হেসে উঠল। সবাইতো ভারি অবাক। কি হল? কি হল?
তখন সে বলল, "আমি আসার সময় দেখলাম, আরেকজন কাঠাল নিয়ে আসছে। আমার আম নাহয় গেল, ওর কাঠাল কিভাবে যাবে?" এই বলে সে আরেক চোট হেসে নিল!
বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফীর উপর ৭.৫% ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে। যেহেতু বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে সব বড়লোকের পোলাপান পড়ে, সেখানে পড়তে মেধা লাগে না, সেখানে কোন পড়াশোনা হয় না এবং সার্টিফিকেট কিনতে পাওয়া যায় সেহেতু অনেকেই এই ব্যাপারটাতে একমত হয়েছে। আরে, লক্ষ লক্ষ টাকা ফী দিতে পারলে মাত্র ৭.৫% ভ্যাট দিতে সমস্যা কি? এইজন্য আবার আন্দোলন করা লাগে নাকি?
১০০ টাকায় ৭.৫০ টাকা। ১০০০ টাকায় হয় ৭৫ টাকা। ১০,০০০ টাকায় ৭৫০ টাকা আর ১,০০,০০০ টাকায় হয় মাত্র ৭৫০০ টাকা!
ভ্যাটম্যানের আসলে বয়স হয়েছে। নাহলে সে সবার জন্যই ৭.৫% ভ্যাট নির্ধারণ করত। ভ্যাটম্যানের বোঝা দরকার ছিল, বড়লোকের ছেলে-মেয়ে যদি লাখে ৭৫০০ টাকা দিতে পারে তাহলে গরীবের ছেলে-মেয়েরা হাজারে ৭৫ টাকা দিতেও পারবে। আমি ভ্যাটম্যানের কৃপাদৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই এইব্যাপারে। আশাকরি অতিদ্রুত এই ব্যাপারে পদক্ষেপ নিবেন।
সরকারী কর্মচারী/কর্মকর্তারা বেতন কম পান বলে তাদের বেতন প্রায় ৯১-১০১% বৃদ্ধি করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে এতে তাদের দুর্নীতির মাত্রা কমবে এবং সেবার পরিমান বাড়বে। এই যুক্তিতে মন্ত্রীদের বেতন ৫০০% বাড়ানো দরকার। তাদের বেতনও নিশ্চয়ই কম। নাহলে তাদের চেয়ে দুর্নীতিবাজ এদেশে আছে নাকি?
সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফীর উপর যদি ৭.৫% কর আরোপ করা হলে এই বাড়তি টাকা ম্যানেজ করা তেমন একটা সমস্যা হবে না। তখন মন্ত্রীদের মধ্যে ভ্যাটম্যানের জনপ্রিয়তাও বাড়বে, মন্ত্রীদের দুর্নীতি কমবে আর সেবাও বাড়বে।
তাই মি. ভ্যাটম্যান। একটু ভেবে দেখবেন। আপনার ভালর জন্যই বললাম।
তখন আমরা হো হো করে হাসব। আর ভাবব, " আম নাহয় গেল, কাঠাল কিভাবে যাবে?"

No comments: