Featured Post

I SAID NO TO QUANTUM METHOD

পূর্বে পোস্ট আকারে প্রকাশিত। কারও সাথে ঝগড়া করার জন্য এটা দেইনি। নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করলাম। কেউ মানতে না পারলে আমার কিছু করার নেই।  আ...

Friday, September 18, 2015

রশি ও তাবিজ

বিভিন্ন হাদীসে তাবিজ, কবজ, রশি, সূতা, তাগা, ঝাড়-ফুঁক ইত্যাদি ব্যবহার শিরক বলে উল্লেখ করা হয়েছে। পক্ষান্তরে অন্যান্য হাদীসে ঝাড়-ফুঁক ব্যবহারের অনুমতি দেয়া হয়েছে। এ সকল হাদীসের সমন্বয়ের জন্য অনেক আলিম বলেছেন, কুরআনের আয়াত, হাদীস বা ভাল অর্থের দু'আ দ্বারা যেমন ঝাড়ফূঁক বৈধ, তেমনি এরূপ আয়াত, হাদীস বা ভাল অর্থের দু'আ লিখে 'তাবিয' আকারে ব্যবহারও বৈধ। কোনো কোনো আলিম বলেছেন যে, কুরআনের আয়াত, হাদীস বা ভাল অর্থেবোধক দু'আ দিয়া ঝাড়-ফুঁক বৈধ, কারণ তা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। তবে তাবীজ ব্যবহার কোনোভাবেই বৈধ নয়, কারণ তা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত নয়। হাদীস শরীফে কুরআনের আয়াত বা ভাল দু'আ দ্বারা ঝাড়-ফুঁক দেওয়া বৈধ বলে সুস্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) নিজে অনেককে ফুঁক দিয়েছেন। তবে তিনি নিজে বা তাঁর সাহাবীগণ কখনো কাউকে তাবিজ লিখে ব্যবহার করতে দিয়েছেন বলে কোনো সহীহ বর্ণনা পাওয়া যায় না। উকবা ইবনু আমির আল-জুহানী (রাঃ) বলেন,
"একদল মানুষ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর নিকট আগমন করেন। তিনি তাদের ৯ জনের বাইয়াত গ্রহণ করেন এবং একজনের বাইয়াত গ্রহণ থেকে বিরত থাকেন। তারা বলেন, হে আল্লাহর রাসূল, আপনি ৯ জনের বাইয়াত গ্রহণ করলেন কিন্তু একে পরিত্যাগ করলেন? তিনি বলেন, এর দেহে একটি তাবিজ আছে। তখন তিনি তার হাত ঢুকিয়ে তাবিজটি ছিড়ে ফেলেন। অতঃপর তিনি তার বাইয়াত গ্রহণ করেন এবং বলেনঃ "যে তাবিজ ঝুলালো সে শিরক করল।"
আব্দূল্লাহ ইবনু মাসঊদের (রাঃ) স্ত্রী যাইনাব (রাঃ) বলেন,
"ইবনু মাসঊদ (রাঃ) যখন বাড়িতে আসতেন তখন সাড়া দিয়ে আসতেন। ... একদিন তিনি এসে সাড়া দিলেন। তখন আমার ঘরে একজন বৃদ্ধা আমাকে ঝাড়ফুঁক করছিল। আমি বৃদ্ধাকে চৌকির নিচে লুকিয়ে রাখি। ইবনু মাসঊদ (রাঃ) ঘরে ঢুকে আমার পাশে বসেন। এমতাবস্থায় তিনি আমার গলায় একটি সুতা দেখতে পান। তিনি বলেন, এ কিসের সুতা? আমি বললাম, এ ফুঁক দেওয়া সুতা। যাইনাব বলেন, তিনি সুতাটি ধরে ছিড়ে ফেলেন এবং বলেন, আব্দুল্লাহ্র পরিবারের শিরক করার কোন প্রয়োজন নেই। আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কে বলতে শুনেছিঃ "ঝাড়-ফূঁক, তাবীজ-কবজ এবং মিল-মহব্বতের তাবীজ শিরক।" যাইনাব বলেন, তখন আমি আমার স্বামী ইবনু মাসঊদকে বললাম, আপনি এ কথা কেন বলছেন? আল্লাহর কসম, আমার চক্ষু থেকে পানি পড়ত। আমি অমুক ইহুদির কাছে যেতাম। সে যখন ঝেড়ে দিত তখন চোখে আরাম বোধ করতাম। তখন ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বলেনঃ এ হলো শয়তানের কর্ম। শয়তান নিজ হাতে তোমার চক্ষু খোচাতে থাকে। এরপর যখন ফুঁক দেয়া হয় তখন সে খোচানো বন্ধ করে। তোমার জন্য তো যথেষ্ঠ ছিল যে, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) যা বলতেন তা বলবে। তিনি বলতেনঃ অসুবিধা দূর করুন, হে মানুষের প্রতিপালক, সুস্থতা দান করুন, আপনিই শিফা বা সুস্থতা দানকারী, আপনার শিফা (সুস্থতা) ছাড়া আর কোন শিফা নেই, এমন (পরিপূর্ণ) শিফা বা সুস্থতা দান করুন যার পরে আর কোন অসুস্থতা অবশিষ্ট থাকবে না।"
তাবিয়ী ইসা ইবনু আবি লাইলা বলেন,
"আমরা সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনু উকাইন বানূ মা'বাদ জুহানীকে (রাঃ) অসুস্থ অবস্থায় দেখতে পেলাম। আমরা বললাম, আপনি কোনো তাবিজ ব্যবহার করেন না কেন? তিনি বলেনঃ আমি তাবিজ নেব? অথচ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ যদি কেউ দেহে (তাবিজ জাতীয়) কোনো কিছু লটকায় তবে তাকে উক্ত তাবিজের উপরেই ছেড়ে দেওয়া হয়।"
তাবিয়ী উরওয়া ইবনুয যুবাইর বলেনঃ
"সাহাবী হুযাইফা (রাঃ) একজন অসুস্থ মানুষকে দেখতে যান। তিনি লোকটির বাজুতে একটি রশি দেখতে পান। তিনি রশিটি কেটে দেন বা টেনে ছিড়ে ফেলেন এবং বলেন, অধিকাংশ মানুষই আল্লাহর উপর ঈমান আনে এবং তারা শিরকে লিপ্ত থাকে।"
[সূত্রঃ কুরআন-সুন্নাহর আলোকে ইসলামী আকীদা। ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর। আস-সুন্নাহ পাবলিকেশন্স। পৃষ্ঠা নংঃ ৩৮৪, ৩৮৫, ৩৮৬, ৩৮৭]

No comments: