Featured Post

I SAID NO TO QUANTUM METHOD

পূর্বে পোস্ট আকারে প্রকাশিত। কারও সাথে ঝগড়া করার জন্য এটা দেইনি। নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করলাম। কেউ মানতে না পারলে আমার কিছু করার নেই।  আ...

Sunday, April 10, 2016

ঘৃনার চাষাবাদ (খেলাধুলা ও অন্যান্য)


আবেগকে একপাশে রেখে লেখার চেষ্টা করছি। কিছুদিন আগে এক জ্ঞানী ব্যক্তির পোস্ট দেখলাম। তিনি পোস্ট দিয়েছেনঃ
আপনি কি?
ক) হানাফী 
খ) সালাফী
গ) আহলে হাদীস 
ঘ) মুসলিম

এই জ্ঞানগর্ভ প্রশ্নের জবাবে আমি ছোট্ট একটা পালটা প্রশ্ন করতে চাইঃ
আপনি কি?
ক) শ্বেতাঙ্গ
খ) কৃষ্ণাঙ্গ
গ) ইন্ডিয়ান
ঘ) মানুষ

আমার প্রশ্নের উত্তর পাওয়া গেলে জ্ঞানী ব্যক্তির প্রশ্নেরও উত্তর পাওয়া যাবে।
বস্তুত এইসব প্রশ্ন করার উদ্দেশ্য ভাল কিছু নয়। একমাত্র উদ্দেশ্য বিভেদ সৃষ্টি করা, ঘৃণার বাষ্প ছড়ানো। সেন্সটা এমন হয় যে, আমি যদি হানাফী ফিকহের অনুসারী হই তবে আমি মুসলিম নই, সালাফী হলেও নই, আহ্‌লে হাদীস হলেও নই। আবার মুসলিম হলে আমি হানাফী ফিকহ্‌ এর অনুসারী হতে পারব না, সালাফী হতে পারব না, আহলে হাদীস হতে পারব না।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, যার ঈমান ও আক্বীদা ঠিক আছে সে-ই মুসলিম। এখন প্রশ্ন করার বিষয় হল হানাফী, সালাফী ও আহলে হাদীসের মধ্যে ঈমান ও আক্বীদাগত এমন কোন বিষয় আছে কিনা (থাকলে কি কি) যার দ্বারা তাদেরকে মুসলিমদের কাতার থেকে বিচ্ছিন্ন করা যায়, অমুসলিম ঘোষনা করা যায়। জ্ঞানী ব্যক্তিদের নিকট এই অধমের সামান্য জিজ্ঞাসা।
মাশরাফি বিন মুর্তজাকে পরিচয় করিয়ে দেবার কিছু নেই। বাংলাদেশের দলের ক্যাপ্টেন-এই পরিচয়ের আগে তার পরিচয় তিনি একজন খেলোয়াড়। তিনি জানেন “খেলা” মানে কি। সমস্যা হল আমরা যারা বাংলাদেশ দলের (এবং অন্যান্য) সমর্থক আছি তারা জানি না। খেলা চলাকালীন বা খেলার আগে-পরে আমরা ভুলে যাই খেলা শুধুমাত্র “বিনোদনের” একটা মাধ্যম। এর বেশি কিছু নয়। মাশরাফিরা এই ব্যাপারটা ভাল করে জানেন বলেই তারা যেকোন পরিস্থিতিতেই সংযত থাকেন।
খেলা সেটা ভারতের সাথেই হোক বা পাকিস্তানের সাথে, খেলা খেলা-ই। এটা কোন যুদ্ধ নয়। খেলোয়ার হিসেবে তারা যদি এটা মনে রাখতে পারে তবে দর্শক হিসেবে আমাদেরও মনে রাখা উচিত।
একজন মুসলিম যখন নামায পড়তে যায় তখন তার পাশে কে দাড়িয়েছে, সে চোর না ভদ্রলোক, ঘুষখোর নাকি সুদখোর-এসব নিয়ে মাথা ঘামায় না। মসজিদের প্রবেশ করা মাত্রই সবাই মুসুল্লি। কোম্পানি সিইও এবং সুইপার পাশাপাশি দাঁড়িয়ে নামায পরে। ধরাযাক, কোন কারনে আমি মক্কায় গিয়েছি। সেখানে আমার পাশে নামায পড়ার জন্য আফ্রিদি আসল। অথবা ইরফান পাঠান আমার পাশে দাড়াল। তখন কি আমি তাদের ঘাড় ধরে বের করে দিব?
ইসলাম একের পাপের বোঝা আরেকজনের ঘাড়ে চাপায় না। আমার উর্ধ্বতন বা অধঃস্তন পুরুষ নিজ দায়িত্বে যতই পাপাচারে লিপ্ত হোক না কেন সেই পাপের হিসাব তাদেরকেই দিতে হবে। দুনিয়ার আইনেও দেখি কেউ যদি খুন করে তবে ফাঁসি তার বাপ-ভাইকে দেয়া হয় না। অপরাধ প্রমাণিত হলে তাকেই দেয়া হয়।
একাত্তর এবং পূর্ববর্তী সময়ে পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠী আমাদের প্রতি যে অন্যায় করেছে তার জন্য এখন কি আফ্রিদিকে দোষী সাব্যস্থ করব? একাত্তর পরবর্তী সময়গুলোতে ভারত যত অন্যায় আমাদের সাথে করেছে তার জন্য ভিরাটকে দোষী সাব্যস্থ করব? পাকিস্তান-ভারতের সাথে এতই শত্রুতার জন্য যাদেরকে দায়ী করছি তারা কি আদৌ ঐসব বিষয়ের জন্য দায়িত্ববান? তারা কি ঐ অপকর্মগুলো নিজেরা করেছে নাকি করতে নির্দেশ দিয়েছে? পাকিস্তানে যে সূর্য্য আলো দেয় একই সূর্য্য আমাদেরও আলো দেয়। তাহলেতো সূর্য্যালোক যেন এই দেশের মাটিতে না পড়ে সে ব্যবস্থা করতে হবে। ভারতকে আজই জানিয়ে দিতে হবে তাদের দেশের নদীর পানি যেন আমাদের দেশের ভিতরে ঢুকতে না পারে।
প্রাক ইসলামিক যুগে আরবের গোত্রসমূহের মধ্যে ভয়াবহ বিবাদ ছিল। সবাই যখন ইসলাম গ্রহন করল তখন যুগের পর যুগ চলে আসা বিবাদ ভুলে ভুলে সবাই আল্লাহর জন্য পরস্পরকে ভালবাসলেন। ভেবে দেখার বিষয় হল, অযৌক্তিকভাবে আমরা সেই প্রাক ইসলামিক যুগের দিকে পা বাড়াচ্ছি কিনা!

No comments: