Featured Post

I SAID NO TO QUANTUM METHOD

পূর্বে পোস্ট আকারে প্রকাশিত। কারও সাথে ঝগড়া করার জন্য এটা দেইনি। নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করলাম। কেউ মানতে না পারলে আমার কিছু করার নেই।  আ...

Friday, July 7, 2017

পরীক্ষার ফলাফল জীবনে কেমন কাজে লাগে?


আমি পাইছিলাম ৪.৮৮। দাত দেখাতে দেখাতে স্কুল থেকে বাসায় আসছিলাম। বইনে পাইছে ৪.৯১। তার মন খারাপ।


১৩ বছর আগের শিক্ষাব্যবস্থা আর বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থার মধ্যে ব্যপক পার্থক্য তৈরি হয়েছে। ১৩ বছর আগের ৪.৮৮ যে বর্তমানের ৪.৯১ থেকে ভাল সেটা পিচ্চি হলেও বইনে আমার ভালই বুঝে হয়ত। আমার মনে পড়ে না স্কুল পরীক্ষায় আমার পিছনে ছিল আর বোর্ড পরীক্ষায় আমার থেকে ভাল করেছে এমন কেউ আছে। ব্যতিক্রম থাকতেই পারে। তবে ব্যতিক্রম যখন সীমা অতিক্রম করে তখন প্রশ্ন চলে আসে। 

১. স্কুল টিচাররা কিভাবে খাতা দেখেন যে বোর্ড পরীক্ষায় ফলাফল পরিবর্তন হয়ে যায়? 

২. বোর্ড পরীক্ষকগন কিভাবে খাতা দেখেন যে, স্কুলের রেজাল্টের সাথে মিলে না? 

৩. সারাজীবন ছিল পিছনে, পরীক্ষার আগে কি এমন চেরাগ হাতে আসে যে বোর্ড পরীক্ষায় আগে চলে আসে? 

বড় বোনের এইচ এস সি পরীক্ষার সময় আমি মোটামুটি বড় হইছি। তখন কেন্দ্র পরিবর্তন হত না। যার যার কলেজেই পরীক্ষা হত। কলেজের পিছনে যেয়ে দেখি সানশেডের উপর দাঁড়িয়ে বড় ভাইরা জানালা দিয়ে ধুমছে নকল সাপ্লাই দিচ্ছে। যথারীতি রেজাল্টের পর বড় বইনের মন খারাপ।কেন? কি হইছে? ফেল্টুস ছাত্রীরা নকলের জোড়ে ৫-৬ টা লেটার সহ ফার্স্ট ডিভিশন! মন খারাপ হওয়াটাই স্বাভাবিক। তো? এতবছর পর যদি আমি তাকে জিজ্ঞেস করি সে কেমন আছে তাহলে কি উত্তর পাওয়া যেতে পারে? খবর নিলে হয়ত দেখা যাবে, তার চেয়ে ভাল রেজাল্ট করা মানুষেরা তার চেয়ে খারাপ অবস্থায় আছে।
 

মোদ্দাকথা হল কেউ কারো ভাগ্য ছিনিয়ে নিতে পারবে না। যে অন্যায় করবে সে তার ফল অবশ্যই অবশ্যই অবশ্যই ভোগ করবে। 

স্কুল-কলেজে পড়ার সময় কিভাবে পড়াশুনা করা উচিত, কিভাবে ছাত্রের মূল্যায়ন করা উচিত- এই বিষয়গুলো বুঝতাম না। ময়না পাখির মত বুলি মুখস্থ করেছি। ভার্সিটি লেভেলে এসে বুঝতে পেরেছি একসময়। স্কুল-কলেজের পড়ালেখার সিস্টেম যে কোন সিস্টেমই না এটা আমার উপলদ্ধি হয়েছে। 

লেখাপড়ার উদ্দেশ্য রেজাল্ট নয়। রেজাল্ট হল সাইড প্রোডাক্ট। এটা এমনিতেই আসবে। নিজের মনুষ্যত্বের বিকাশ, চিন্তা-চেতনার প্রশস্ততা অর্জন আর যা শিখেছি তা বাস্তব জীবনে যদি প্রয়োগ করতে পারি তবে কেউ আমাকে দমিয়ে রাখতে পারবে না। ছোট ছোট কিছু উদাহরণ দেই। 

বেকার মানুষ। চাকরী অতিজরুরী, কোথাও চাকুরী হচ্ছে না। এমন অবস্থায় একট চাকরীর অফার এল যেখানে ৫ লাখ টাকা ঘুষ লাগবে। যদি আমি রাজি হই তবে বোঝা গেল আমার ভাল ফলাফল যত ভাল হোক না কেন আমার মনুষত্বের বিকাশ ঘটে নি। 

আমি অনেক ভাল চাকুরী করি/ব্যবসা করি। টাকা পয়সার অভাব নেই। কিন্তু সমাজের রিক্সাচালক, সিএনজিওয়ালা, মুদি দোকানি, কুলি,দিনমজুরদের ভাল চোখে দেখি না। বুঝতে হবে আমার মনুষত্বের সঠিক বিকাশ ভাল হয় নি। রেজাল্ট কিন্তু ভাল ছিল আমার। 

বিজ্ঞান বইয়ে পড়েছি বোতলের ছিপি আটকে গেলে মুখটা একটু গরম করলেই খোলা যায়। বাস্তবে সিরাপের বোতলের মুখ খুলতে পারছি না। গিপিএ ৫ পেয়েও আমি কিছুই শিখি নাই। 

তুমি কেন মনখারাপ করতেছো? আমরাতো তোমাকে কোন চাপ দেই নাই। ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হতেই হবে এমন কথাও বলি নাই। যে জীবনে যাই করুক, সুখী হতে পারাটাই জীবনের আসল স্বার্থকতা। আল্লাহর হুকুম মানো, কারো কোন ক্ষতি করো না, তোমার রেজাল্ট তোমার সুখী হওয়া আটকাতে পারবে না ইন শা আল্লাহ! 

No comments: