Featured Post

I SAID NO TO QUANTUM METHOD

পূর্বে পোস্ট আকারে প্রকাশিত। কারও সাথে ঝগড়া করার জন্য এটা দেইনি। নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করলাম। কেউ মানতে না পারলে আমার কিছু করার নেই।  আ...

Monday, February 22, 2016

অহেতুক কর্তৃত্ব

ভাই আমার একটা সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স পাস। একটা বহুজাতিক কোম্পানিতে চাকুরী করেন। বিয়ে করেছেন বেশিদিন হয় নি। ভাবিও চাকুরী করেন একটা সরকারী বড় কোম্পানিতে। দুইজনের চাকুরী সমমর্যাদার, বেতন-ভাতা ভিন্ন হতে পারে। ভাইয়ের একটা সন্তান হয়েছে বেশ কিছুদিন হল। সন্তান হবার দেড়-দু'মাস পড় ভাবিকে দিয়ে বাড়ি যাবেন। দাদা-দাদি, চাচারা নবজাতকে দেখার জন্য উন্মুখ হয়ে আছেন। 

মহানগর প্রভাতীতে করে তারা তাদের ভ্রমণ করবেন। এখান থেকে সকাল বেলা বাসে যাবেন স্টেশনে। আমিও অপেক্ষা করছি। আমার দু'জন অতিথিকে বাসে তুলে দিব। বাসচালক এসে যখন দরজার তালা খুলে দিলেন তখন হুড়োহুড়ি শুরু হয়ে গেল। আমাদের এই একটা স্বভাব আছে, গাড়ি পুরো খালি আর মানুষ যদি ৫ জন থাকে তাহলেও কে কার আগে গাড়িতে উঠবে তার জন্য ঠেলা ঠেলি শুরু হয়ে যায়। 

যথারীতি ঠেলাঠেলি শুরু হল। আমি চোখের ইশারা দিতেই আমার অতিথিদ্বয় গাড়িতে উঠে বসলেন। ভাই ব্যাগ টানছেন, ভাবীর কোলে বাচ্চা। পাশেই বাচ্চার নানী। ভাবী কি একটা ভুল করাতে ভাই হুট করে গরম হয়ে গেলেন। 

"তরে কইছিনা..." 

এমনভাবে তুই তোকারি করে ধমক দিলেন আমি নিজেই লজ্জা পেয়ে গেলাম। ভাবীর কালো মুখটার দিকে একবার তাকিয়ে উলটো হাটা দিলাম। অথচ এই ভাই বিয়ে করার পর নিজে থেকে ভাবিকে পার্লার থেকে সাজিয়ে হোস্টেলের রুমে রুমে যেয়ে সবাইকে বউ দেখিয়েছেন! 

যাই হোক, আসল কথা আসি। মেয়েদেরকে নিয়ন্ত্রন করার পুরুষালী প্রবণতা আদি ও অকৃত্রিম। এবং বিষয়টা আমি সমর্থনই করি। কিন্তু আমাদের সমস্যা হল, কোথায় কখন নিয়ন্ত্রন করতে হবে আর কখন দয়ালু হতে হবে, ধৈর্য্য ধরতে হবে, ছাড় দিতে হবে- সে বুঝ কয়জন পুরুষের আছে সেটা ভাবার বিষয় বৈকি। 

আমি আগেই বলেছি, শিক্ষাগত এবং পেশাগত যোগ্যতায় ভাই-ভাবী একই পর্যায়ের। তারপরও ভাবি ধমক খেয়েছেন। কাউকে নির্জনে অপমান করা আর বাইরের মানুষদের সামনে অপমান করার মধ্যে আকাশ-পাতাল তফাৎ বিদ্যমান। এ থেকে অনেক সম্পর্ক থেকে শ্রদ্ধাবোধ উঠে যায়। যেকোন সম্পর্ক থেকে পারস্পারিক শ্রদ্ধাবোধ উঠে গেলে সেখানে আর কি থাকে? 

এই কারনে অনেক বুদ্ধিমান বস তার অধিনস্থ কোন কর্মকর্তা/কর্মচারীকে অন্যের সামনে অপদস্থ করেন না। আর যারা করেন, তাদের ভবিষ্যত ভাল হয় না। একদিনের একটি ঘটনা হয়ত সম্পর্কে খুব বেশি প্রভাব ফেলবে না। তবে নিয়ন্ত্রনকারী যদি নিয়ন্ত্রিত ব্যাক্তির প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি ও আচরনের পরিবর্তন না করেন তাহলে প্রভাব ফেলতে বাধ্য। 

তখন হয়ত বেঁচে থাকা যায়, কিন্তু ভাল থাকা যায় না .........

একুশে ফেব্রুয়ারী

বিকেলে একটা কাজে বাজারে গিয়েছিলাম। সাথে এক বন্ধু। বন্ধু কোথায় যেন হাজার খানেক টাকা পাঠাল বিকাশে।

"কিরে? টাকা কোথায় পাঠালি?"

"এক ভাইয়ের কাছে।"

"এক ভাই মানে? কোন ভাই?" 

"তুই চিনবি না?"

"কিজন্য পাঠালি? কোন কাজে?"

"না, ঠিক কাজে না। সাদকা পাঠালাম আরকি। ভাই কিছু কিছু সামাজিক কাজের সাথে জড়িত। পোস্ট দেখলাম ফেসবুকে অভাবগ্রস্থ এক লোকের কিছু টাকার প্রয়োজন। ভাবলাম পাঠাই......"

"তোর কথার ভঙ্গি দেখে মনে হচ্ছে আরো কোন ঘটনা আছে। খুলে বল।"

"না মানে, নিয়ত করেছি, আগামীকালতো ২১ শে ফেব্রুয়ারী। আমার এই দানের টাকার যা নেকী হবে সব যেন ১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারীতে যেসব ঈমানদার মাতৃভাষা বাংলার দাবিতে প্রাণ দিয়েছেন তাদের, আর আমার বাবার আমল নামায় যেন যোগ হয়ে যায়। ফুল-টুল দিয়ে তো আর লাভ নাই, তাই ভাবলাম এমন কিছু করি যেটা কাছে লাগবে। হাজার হোক, মাতৃভাষায় বাংলায় কথা বলার জন্য আমরা তাদের কৃতজ্ঞ। কৃতজ্ঞতার বদলা দিতে এর চেয়ে ভাল কোন বুদ্ধি মাথায় আসল না।"

আমি চুপ। আসলেই তো! ফুল-মালা, আচার-অনুষ্ঠানের পিছনে টাকা খরচ না করে যদি সবাই ৫-১০ টাকা করে এভাবে সাদকাহ্‌ দিত তাহলে কতই না ভাল হত!
FEBRUARY 19

তাবলীগ সংক্রান্ত হালকা আলোচনা


নিজের জীবনের আরো কিছু কথা শেয়ার করি। এবারের কথাগুলো তাবলীগ সম্পর্কিত। প্রায়ই হোমফিডে জ্ঞানী ব্যক্তিদের তাবলীগ নিয়ে বিরূপ মন্তব্য, পোস্ট দেখতে পাই। যারা তাবলীগের সাথে শত্রুতা পোষন করেন তাদের উদ্দেশ্যে কিছু বলার নেই। তবে যাদের মনে সংশয় আছে তাদের ধারনা পরিষ্কার হবে ইন শা আল্লাহ! 

তখনো বালেগ হইনি। মাঝে মাঝে নামায পড়তে যেতাম মসজিদে। বিশেষ করে এশার নামাযে। মূলত রাতের পড়াশুনা থেকে ক্ষনিকের জন্য নিস্তারপেতেই যাওয়া। এশার আযান দিলেই মার কাছে অনুমতি নিয়ে জামাতের জন্য বের হয়ে যেতাম দুই ভাই মিলে। বাবা-মা দু'জনেই নামাযী থাকাতে নামাযের ক্ষেত্রে কখনো বাধার সম্মুখীন হইনি। হয়ত মসজিদে নামায পড়তে যেয়েই তাবলীগের বড়ভাইদের নজরে পড়ি। 

সরকারী ছুটির দিনগুলোকে টার্গেট করে বড়ভাইরা কঠিন মেহনত করতেন। আমাদেরমত পিচ্চিদের অভিভাবকের পিছনে। ২১ শে ফেব্রুয়ারী, ১৬ ডিসেম্বর ইত্যাদি তারিখে স্কুল বন্ধ থাকত। এলাকার মুরব্বী এবং বড় ভাইরা তখন আমাদের অভিভাবকদের রাজি করিয়ে আমাদের একদিনের জামাতে নিয়ে যেতেন। সকালে জামাত বের হবে, আবার এশার নামায নিজদের মহল্লার মসজিদে পড়বে। ১৫০ থেকে ২০০ জনের বিশাল জামায়াত হত। আশেপাশের কোন এক মসজিদে গন্তব্য ঠিক করা হত যেন হেটেই যাওয়া যায়। একজনের পর একজন লাইন ধরলে বিরাট লাইন হত। উচ্চস্বরে সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্ললাহ, আল্লাহু আকবার ধ্বনিতে আশপাশটা সরব হয়ে উঠত। জনপ্রতি খাওয়ার খরচ ছিল ২০ টাকা। মসজিদের পৌছে যার যার প্রয়োজন ছিল ওযু করে নিতাম। তারপর বসে যেতাম মসজিদের ভিতরে। এদিকে মসজিদের বারান্দায় ভাইদের একগ্রুপ কাজে লেগে যেতেন। সাথে আনা বড় বড় থালে মুড়ি, চানাচুর, বিস্কিট, কলা দেয়া হত নাস্তা হিসেবে। সবাই গোল হয়ে বসে নাস্তা খেতাম। 

তারপর বড় ভাইরা আমাদের নামায প্র্যাকটিস করাতেন। কিভাবে তাকবীরে তাহরীমা বলতে হবে। কিভাবে রুকু, সিজদায় দিতে হবে, কিভাবে সালাম ফিরাতে হবে। ছোট ছোট গ্রুপে ভাগ হয়ে সূরা ফাতিহা, সূরা লাহাব, সুরা এখলাস, সূরা ফালাক্ব, সুরা নাস মশক করতাম।কিভাবে ওযু শুদ্ধভাবে করতে হবে, কিভাবে টয়লেট সারতে হবে-এসব বিষয়ের খুটিনাটি তাবলীগ থেকেই শিখেছিলাম। 

এরই মধ্যে যোহরের নামাযের সময় হয়ে যেত। বড় ভাইরা বার বার সাবধান করে দিতেন যেন, এলাকার মানুষ আসলে তাদেরকে সম্মান দেখিয়ে নামাযের জায়গা করে দেই। তাদের সাথে যেন কোন রকম বেয়াদবি না করি কেউ। নামাযের পর দুপুরের খাওয়ার পালা। খাবার হয়ত তখনো এসে পৌছে নি। তখন কোন এক বড় ভাই সাহাবাদের হৃদয়বিদারক ঘটনাসমূহ আমাদের শোনাতেন। তারা ইসলামকে আমাদের পর্যন্ত পৌছাতে কত কষ্ট করেছেন তার বর্ণনা শুনতে শুনতে আমাদের চোখ ছলছল করত। 

বিরিয়ানি পৌছে যেত। একই থালে ৫-৬জন করে বসে যেতাম। ঘরে সবার জন্য আলাদা আলাদা প্লেট। একই প্লেটে ৫-৬ জন খাওয়ার মধ্যে যে "ঘেন্নার" বা অস্বস্তির কিছু নেই, আর থাকলেই সেটাতে পাত্তা না দেয়াটা তাবলীগ থেকেই শিখেছি। এরই মধ্যে কোন ভাই হয়ত তার মাংসের টুকরাটা আরেকজনকে খাইয়ে দিলেন। আবার কেউ হয়ত তাকে আলুর টুকরাটা তুলে দিলেন। এভাবে আমাদের মধ্যে আন্তরিকতা বৃদ্ধি পেত। খাওয়ার পর কিছুক্ষন বিশ্রাম। আছরের পর কয়েকজনের একটা দল মহল্লার ঘরে ঘরে গিয়ে দাওয়াত পৌছে দিত, মসজিদের আসার দাওয়াত দিত। মাগরিবের পর যে কথা গুলো হত তার সারবস্তু হল, আমি যেমন নামাযে আসতে পেরেছে আমার পাশের ভাইকে নামাযে নিয়ে আসা আমার দায়িত্ব। এই দায়িত্ব আমাকেই পালন করতে হবে। এমনিভাবে সমগ্র উম্মতের প্রতি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি সাল্লাম)এর যে দরদ, মায়া, ভালবাসা ছিল এই দরদ, মায়া, ভালবাসা নিজের মধ্যে সৃষ্টি করতে হবে। দাওয়াত পৌছাতে হবে। নিজে বাঁচতে হবে, পরিবারকেও বাঁচাতে হবে। 

এরপর আবার জিকির করতে করতে নিজেদের এলাকার মসজিদে ফিরে আসা। এশার নামাযের পর ভাইরা বলে দিতেন, নিয়মিত জামাতে শরিক হতে হবে। মাগরিগের নামাযের পর ছাত্রদের জন্য ৫ মিনিট তালিম হয়। তালিমে বসতে। 

বড়ভাইদের মেহনতের ফলে ধীরে ধীরে নামাযের অভ্যাস গড়ে উঠে। শিখতে থাকি কিভাবে নেতৃত্ব মানতে হয়, কিভাবে নিতৃত্ব দিতে হয়। তাবলীগ আমাকে শিখিয়েছে- 

> ঈমানী হালতে থাকা এবং ছতর ঢাকা রাখা পুরুষের জন্য সর্বাবস্থায় ফরজ।

> চুল সমানভাবে রাখা, গোফ ছাঁটা, মেসওয়াক করা, দাড়ি রাখা, অবাঞ্চিত লোম 
সময়মত পরিস্কার করা, হাত পায়ের নখ কাটা ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ন বিষয়। 

> রাস্তার ডাক দিয়ে চলা, নজরের হেফাজত করা, যৌবনের হেফাজত করা, নারীদের নারী হিসেবে দেখা (সম্মান করা) 

> কারো ভুল ধরা যাবে না, কাউকে কষ্ট দেয়া যাবে না, কারো সম্পর্কে খারাপ ধারনা করা যাবে না।

> খাবারের দোষ ত্রুটি বর্ণনা থেকে বিরত থাকতে হবে, যে রান্না করেছে সে অনেক কষ্ট করে খাবার বানিয়েছে, বদনাম করলে সে কষ্ট পেতে পারে।

> মুসুল্লিদের জুতা সোজা করে দেয়াও তার উপর এহসানের একটা রুপ

ইত্যাদি অসংখ্য বিষয়। 

কেউ যদি নিজের এলাকার মসজিদে কোন তাবলীগের বয়ান শুনে এবং কাকরাইল মসজিদের বয়ান শুনে তবে সে অবাক হয়ে লক্ষ্য করবে যে, দুই জায়গাতেই একই কথা বলা হচ্ছে। সেই পুরনো কথা, “এই কাজ আমার, এই কাজ আমাকেই করতে হবে”। 

তাবলীগের মধ্যে একই জামাতে বড়লোক, গরীব, রিকশাওয়ালা, আলেম, ছাত্র, কৃষকসহ বিভিন্ন ধরনের মানুষ পাওয়া যাবে। সবার উদ্দেশ্য একটাই নিজে বাঁচা, নিজের পরিবারবর্গকে বাঁচানো। এখানে কে বিএনপি, কে আওয়ামীলীগ, কে জামায়াত, কে চরমোনাই মুরিদ দেখা হয় না। কোন রাজনৈতিক দলকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সমর্থনও করা হয় না। তাবলীগের “রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি” না থাকায় অনেকেই এর সমালোচনা করে থাকেন। করতেই পারেন। তাবলীগ পরিপূর্ণ ইসলামী আন্দোলন, সম্পূর্ণ ত্রুটিহীন-এই দাবী কেউ করেনি। 

তাবলীগের কারনে ইসলামী জীবনের কাছাকাছি থাকা আমার জন্য সহজ হয়েছে। কেউ অশ্রাব্য কোন কথা বলার আগে হিসেব করে বলেছে। পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশীদের বিরূপ মন্তব্যের পরেও দাড়ি রাখতে পেরেছি। স্কুল-কলেজে মেয়েরা দূরে থেকেছে, আমিও দূরে থাকতে পেরেছি। হালাল-রুজীর ব্যবস্থা হয়েছে। বিয়ে মোটামুটি ইসলামীভাবে করতে পেরেছি। আল্লাহ তায়ালাই সহজ করেছেন। আলহামদুলিল্লাহ। 

এখন ঈমান নিয়ে মরতে পারলেই হয়!

কুদৃষ্টি বা নজর লাগা প্রসঙ্গ


মায়েরা তাদের ছোটবাচ্চাদের কপালে কাজল দিয়ে টিপ দিয়ে দেয়। নজর টিপ।তারপর পাউডার লাগিয়ে দেয়। ছোটবেলার এলবাম খুজলে টিপওয়ালা ছবি পাওয়া যাবে না এমন মানুষ আমাদের জেনারেশন পর্যন্ত খুব বেশি থাকার কথা নয়।বাচ্চাকে মানুষের বদনজর থেকে বাচাতে মায়ের চেষ্টার কমতি নেই। কারো যেন বদনজর তার বাচ্চার গায়ে না লাগে। বাচ্চার যেন কোন ক্ষতি না হয়। 

কারো লাউয়ের মাচায় বড় বড় লাউ ধরেছে। পাশ দিয়ে যাবার সময় কেউ একজন বলল, উহ! এত বড় লাউ জীবনেও দেখিনি! 

ব্যাস। কাজ হয়ে গেল। পরেরদিনই লাউ গাছে মরে শেষ। লোকে বলে নজর লেগেছে। 

কারো চেহাড়া খুব সুন্দর। উজ্জ্বল গাত্রবর্ণ, ঘনকালো চুল। পরিচ্ছদে রুচির ছাপ পাওয়া যায়। তাকে দেখে কেউ বলে ফেলল, কত্ত সুন্দর! 

রাত থেকেই মানুষটা জ্বরে পড়ে গেল। জ্বরে পুড়ে গায়ের রঙ কালো হয়ে গেল। চুল পড়ে গেল। শুকিয়ে চিমসা লেগে গেল। 

এমন ঘটনা আমাদের চারপাশে নতুন নয়। আগে প্রায়ই এই ধরনের ঘটনার কথা শুনেছি। এখন একটু কম শুনি। তাকদিরের ব্যাপারটা জানার পর আমার ধারনা ছিল, নজরলাগা এবং নজর এড়াতে আমরা যেসব কাজ করি তা নিতান্তই কুসংস্কার। কিন্তু কিছুদিন আগে তফসীরে মা'আরেফুল কোরআন ঘাটতে গিয়ে এই বিষয়টা আমার নজরে আসে। হবহু তুলে দিচ্ছি। 

সূরা ইউসুফের ৬৭-৬৯ আয়াতের তফসীরে ‘তফসীরে মা’আরেফুল কোরআন, পঞ্চম খন্ডের, ৯৭ পৃষ্ঠা’য় আছে, 

/*এতে বোঝা গেল যে, মানুষের চোখ (কুদৃষ্টি) লাগা এবং এর ফলে অন্য মানুষ অথবা জন্তু জানোয়ারের কষ্ট কিংবা ক্ষতি হওয়া সত্য। এটা মুর্খতাসুলভ কুসংস্কার নয়। এ কারনেই ইয়াকুব (আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক থেকে পুত্রদের আত্মরক্ষার চিন্তা করেছেন। 

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)ও একে সত্যায়িত করেছে। এক হাদীসে তিনি বলেনঃ কুদৃষ্টি মানুষকে কবরে এবং উটকে উনানে ঢুকিয়ে দেয়। এ কারনেই রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যেসব বিষয় থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন এবং উম্মতকে আশ্রয় প্রার্থনা করতে বলেছেন, তন্মধ্যে “আমি কুদৃষ্টি থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করি” রয়েছে। (কুরতুবী) 

সাহাবায়ে কিরামের মধ্যে আবু মহল ইবনে হুনায়ফের ঘটনা সুবিখ্যাত। একবার গোসল করার জন্য পরিধেয় বস্ত্র খুলতেই তাঁর গৌরবর্ণ ও সুঠাম দেহের উপর আমের ইবনে রবীয়ার দৃষ্টি পতিত হয়। সাথে সাথে তার মুখ থেকে বের হয়ে পড়েঃ আমি আজ পর্যন্ত এমন সুন্দর ও কান্তিময় দেহ কারও দেখিনি। আর যায় কোথায়, তৎক্ষণাৎ মহল ইবনে হুনায়ফের দেহে ভীষণ জ্বর চেপে গেল। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সংবাদ পেয়ে প্রতিকারার্থে আমের ইবনে রবীয়াকে আদেশ দিলেন যে, সে যেন ওযু করে ওযুর পানি থেকে কিছু অংশ পাত্রে রাখে। অতঃপর তা যেন মহল ইবনে হুনায়ফের দেহে ঢেলে দেওয়া হয়। আদেশ মত কাজ করা হলে মহল ইবনে হুনায়ফ রক্ষা পেলেন। তার জ্বর থেকে গেল এবং তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে রসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)র সাথে পূর্ব নির্ধারিত অভিযানে রওয়ানা হয়ে গেলেন। এ ঘটনায় রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমের ইবনে রবীয়াকে সতর্ক করে বলেছিলেনঃ “কেউ আপন ভাইকে কেন হত্যা করে? তোমার দৃষ্টিতে যখন তার দেহ সুন্দর প্রতিভাত হয়েছিল তখন তুমি তার জন্য বরকতের দোয়া করলে না কেন? মনে রেখো, চোখ লেগে যাওয়া সত্য”। 

এ হাদীস থেকে আরও জানা গেল যে, অপরের জান ও মালের মধ্যে যদি কেউ বিস্ময়কর কোন কিছু দেখে, তবে তার উচিত দোয়া করা যে, আল্লাহ্‌ তা’আলা এতে বরকত দান করুন। কোন কোন রেওয়ায়েতে আছে যে, “মাশা আল্লাহু লা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ” বলা উচিত। এত কুদৃষ্টির প্রভাব বিনষ্ট হয়ে যায়। আরও জানা গেল যে, কেউ চোখ লাগায় আক্রান্ত হলে যার চোখ লাগে, তার হাত, পা ও মুখমণ্ডল ধোয়া পানি রোগীর দেহে ঢেলে দিলে চোখ লাগার অনিষ্ট বিদূরিত হয়ে যায়। 

কুরতুবী বলেনঃ আহ্‌লে সুন্নত ওয়াল-জমাআতের সব শীর্ষস্থানীয় আলিম এ বিষয়ে একমত যে, চোখ লাগা এবং তদ্বারা ক্ষতি সাধিত হওয়া সত্য। */ 

তো বোঝা গেল যে, নজর লাগা কুসংস্কার নয় বরং কুসংস্কার হল আমরা নজর এড়াতে যা করি। ইসলামে যে নির্দেশনা এসেছে সেটা মানি না, জানিও না। কোথ্যেকে কোথ্যেকে বানিয়ে বানিয়ে কিসব কিসব করি! 

আল্লাহ তা'আলা আমাদের আমল করার তওফীক দান করুন। আমীণ

বিয়ে সমাচার


বিয়ের সিজন চলে যাচ্ছে। বিয়ে নিয়ে কিছু বলা হল না। নিজের বিয়ে নিয়েই কিছু কথা বলি আজ। মানুষেরটা পরে বলব। এই পোস্ট পড়ে কারো মনে হতে পারে নিজের ঢোল নিজে পেটানোর মত পোস্ট। যে যেভাবেই নিক আমার আপত্তি নেই। কেউ উদাহরণ হিসেবে নিলে তার জন্য এটা একটা উদাহরণ। 

আমার আগে থেকেই ইচ্ছা ছিল একটা সাধারণ মেয়ে বিয়ে করার। যে সংসারের বড় দায়িত্বটা [সংসার সামলানো] নিজে সামলাবে এবং আমার উপর ছোট দায়িত্বটা [অর্থনৈতিক] ছেড়ে দিবে। আর বাকি যোগ্যতাগুলো নরমাল হলেই চলবে। অসাধারণ রূপবতী হতে হবে, খুব উচ্চশিক্ষিত হতে হবে, বড়লোক বাবার একমাত্র মেয়ে হতে হবে এমনটা ভাবিনি। আমার প্রথম শর্তমতো পাওয়া গেলে অন্য যেকোন দিকে ছাড় দেয়ার জন্য প্রস্তুত ছিলাম।

চট্টগ্রামে নিঃসঙ্গ জীবন যাপনে প্রায় ছয় বছর ধৈর্য্য ধরে ছিলাম। খুব খারাপ লাগত। ফ্যামিলি সাথে থাকলে হয়ত এতটা খারাপ লাগত না। আমি ভালভাবেই অনুভূব করছিলাম একজন সঙ্গিনী প্রয়োজন। অবশেষে ২০১৪ তে এসে আমার ধৈর্য্যচূতি ঘটল। বাসায় যেয়ে একটা জরুরী মিটিং ডাকলাম। লজ্জা-শরম পিছনে ফেলে সবার সামনেই বললাম, একা একা আর থাকতে পারছি না। পাত্রী দেখেন। বিয়ে করব। 

আগেই শুনেছিলাম, আমার জন্য আমার এক দুঃসম্পর্কের কাজিনকে ফ্যামিলি ঠিক করে রেখেছে। পরিবারের মহিলারা এসব ব্যাপারে আবার খুবই উৎসাহী। মেয়ে নাকি আমাদের বাসায়ও বেড়াতে এসেছিল। অথচ আমি কিছুই জানি না। মিটিং এর প্রায় একমাস পর যখন আবার বাসায় গেলাম তখন মেয়ে দেখতে গেলাম। ইচ্ছা ছিল পুরুষ হিসেবে আমি একা যাব। কিন্তু আরেকজন ঘনিষ্ঠ পুরুষ আত্মীয় ছিলেন। ব্যাপারটা আমার পছন্দ না হলেও চুপ করে রইলাম। 

জীবনের প্রথমবারের মত মেয়ে দেখতে যাচ্ছি। লাইফে ভাইবা, ইন্টারভিউ কয়েকটা দিয়েছি। কিন্তু নেইনি কখনো। কিছুটা নার্ভাসতো অবশ্যই। আগেই একটা খামে কিছু টাকা ভরে মার কাছে দিয়ে দিলাম। দেখাদেখির পর্ব শেষ হলে যেন, মেয়েকে সম্মানি হিসেবে আমাদের তরফ থেকে দেয়া হয়। কি বলব, না বলব সব মনে মনে রিহার্সেল দিয়ে রেখেছিলাম। কি প্রশ্ন করব তাও ভেবে রেখেছিলাম। 

গিয়ে বসে আছি। মেয়ে আর আসে না। এরই মধ্যে একগাদা নাস্তা করা হয়ে গিয়েছে। আছরের আযানও হয়ে গিয়েছে। বললাম নামায পড়ে আসি তাহলে। আশেপাশের বাড়ির সব মহিলা জড়ো হয়ে গিয়েছে ততক্ষনে। তাদের উৎসুক দৃষ্টির সামনে থেকে কোনমতে পালিয়ে গেলাম। নামায থেকে ফেরার পর মেয়ে আমার সামনে আসলাম। আমি আর কি নার্ভাস ছিলাম! মেয়ে আমার চেয়ে শতগুন নার্ভাস! তারও প্রথমবার কিনা! সালাম বিনিময়ের পর আমি মুখ খুললাম। নিজের সম্পর্কে নাতিদীর্ঘ একটা বক্তব্য দিয়ে দিলাম। আমি চেয়েছিলাম মেয়ে যেন আমার সম্পর্কে একটা ধারনা পায়, যেন সে সিদ্ধান্ত নিতে পারে তার সাথে আমার মতের মিল হবে কিনা। ঝামেলা যা হবার আগে হয়ে যাওয়াই ভাল। মেয়ের কাছ থেকেও জিজ্ঞেস করে তার সম্পর্কে জেনে নিলাম। ছোট ছোট প্রশ্ন করে আমার যা জানার দরকার ছিল জেনে নিলাম। ৫-১০ মিনিটে হয়ে গেল। আমি মাকে ইশারা দিলাম, বললামও এবার মেয়েকে ভিতরে নিয়ে যাক। আমার দেখা হয়ে গিয়েছে। কিন্তু তাদের ভাবভঙ্গি ছিল আমি আরো কিছুক্ষন দেখি। আমি স্পষ্টত বিরক্ত হলাম। 

তারা টুকটাক কথা বলতে লাগলেন। আমি চুপ করে রইলাম। মেয়ের একটা ছোটবোন ছিল প্রাপ্তবয়স্ক। একসময় আমার সাথে পরিচয় করানোর জন্য তাকেও নিয়ে আসা হল। আমি আবারো বিরক্ত হলাম। খাম খোলার পর মা এসে আমার কাছে জিজ্ঞেস করলেন, এক টাকা আছে কিনা? কেন জিজ্ঞেস করতেই বললেন, বিজোড় টাকা নাকি দিতে হয়! আমি মেজাজ সামলে বললাম, এক টাকা নাই। ৫ টাকা আছে। চলবে? উনি নিয়ে চলে গেলেন। ফটোসেশন করার ইচ্ছে একদমই ছিল না। তবুও মেয়ের ছোটবোন এসে দুটো ছবি তুলে নিল। আর আমার ঘনিষ্ঠ পুরুষ আত্মীয় তার মোবাইলে মেয়ের ছবি তুলে নিলেন অন্যদের দেখানোর জন্য। 

মাথার ভিতর চিন্তার ঝড় নিয়ে ফিরে আসলাম। পরেরদিন ওদিক থেকে খবর নিচ্ছে। মা আমাকে জিজ্ঞেস করে। আমি কিছু বলি না। নানাবিধ মানসিক চাপে আমি বিপর্যস্ত প্রায়। জীবনের এত বড় একটা সিদ্ধান্ত! ভেবে-চিন্তে নিতে হবে। তারপরদিন সকালে সামনে এগোতে বলে দিলাম। মা সাথে সাথে ফোন করে জানিয়ে দিলেন। তার দু-একদিন পর চিটাগাং চলে আসলাম। 

মেয়ের বাসার নাম্বার নিয়ে এসেছিলাম। ফোন দেব কি দেব না? দোটানায় আরো দু-একদিন কাটল। অবশেষে ফোন দিলাম। আমাদের পারস্পারিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে অনেক কথা হল। আমি বুঝলাম ক্যারিয়ারের ব্যাপারটা তার কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সামনে তার মাস্টার্স পরীক্ষা। তারপর বিসিএস দিবে। হলেতো হল, না হলে অন্যকোন চাকরি করবে। এই ব্যাপারে সে তার আশেপাশের অসংখ্য উদাহরণ টানতে লাগল। আমি যুক্তি দিলাম, আমি থাকি চিটাগাং। আমি যাকে বিয়ে করব সে যদি চাকুরী করে তবে তার চাকুরী চট্টগ্রামে হবে এমন কোন গ্যারান্টি নেই। ধরাযাক, তার চাকুরী হল ঢাকায়। আমি চিটাগাং, আমার বউ ঢাকায়। তাহলে আমার বিয়ে করে লাভটা হল কি? আমি যে একা ছিলাম, সে একাই রয়ে গেলাম। সে আমার কথা মেনে নেয়। তার স্বপ্নের কথা শোনায়। তার কোন ভাই নেই। সে চাকুরী করে তার ফ্যামিলিকে সাপোর্ট দিবে। আমি বলেছি, তার ফ্যামিলিকে আমি দেখব। বিয়ের পর তার বাবা-মাতো আমার বাবা-মা-ই। নিজের বাবা-মাকে দেখতে পারলে তাদেরকেও দেখতে পারব। মেয়ে চুপ হয়ে যায়। সম্ভবত বিশ্বাস করতে পারে না। কারন বিয়ের আগে পাত্র, পাত্রপক্ষ অনেক কথাই বলে। কিন্তু বিয়ের পর উলটো কথা বলে এমনটা আমাদের চারপাশের স্বাভাবিক রীতিতে পরিনত হয়েছে। 

প্রতিদিন সে একই কথা বলে, আমিও একই জবাব দেই। একপর্যায়ে বুঝতে পারলাম সে ছাড় দিবে না আর একই কথা বার বার বলতে বলতে আমারো ধৈর্য্যচূতি ঘটল। আমি আমার এক বন্ধুকে ফোন করে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলাম। এখানে বিয়ে করব না বলে স্পষ্ট ভাষায় বলে দিলাম। তার ফোনে আবার অটো রেকর্ড চালু ছিল। সে আমার বোনের বাসায় গিয়ে সেই রেকর্ড বাজিয়ে শোনাল। 

অভিভাবক পর্যায়ে সেসব কথাবার্তা হয়েছে সেসব আর বলতে চাই না। এখানে সম্পর্ক না হওয়াতে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পেলেন মা। তার খুব ইচ্ছে ছিল ছেলেকে ওখানে বিয়ে করাবেন। ফ্যামিলির অন্যান্যরা আমার পক্ষে না থাকলে বিষয়টা ট্যাকল দেয়া আরো কঠিন হত। 

কিছুদিন পরে আবারো বিয়ের ব্যাপারে বললাম। এবার বললাম, আমি এক মেয়ের কথা জানি। চলেন দেখে আসি। অনেক কাঠখড় পোড়ানোর পর আমরা তিনজন গেলাম মেয়ে দেখতে। আমি, মা আর আমার বোনের শ্বাশুড়ি (মাঐ)। আল্লাহর কি মেহেরবানি! মেয়েকে দু’জনেরই খুব পছন্দ হয়ে গেল। আমার পছন্দ হয়েছিল কিনা সেটা নাহয় নাইবা বললাম। এখানেও আগেই মায়ের হাতে খাম দিয়ে দিয়েছিলাম। আর প্রশ্নও মনে মনে ঠিক করে রেখেছিলাম। মেয়ে দেখার পর মেয়ে যখন চলে যাচ্ছিল তখন মা তার মাথায় হাত বুলিয়ে যখন আদর করে দিলেন তখন আমি অসম্ভব আনন্দিত হয়েছিলাম। বুঝতে পেরেছিলাম, মেয়েকে মায়ের খুব পছন্দ হয়েছে। মেয়ে চলে যাবার পর মাঐ আমাকে বললেন, মেয়ে দেখি কত সুন্দর! তুমি আমাদের কি ছবি দেখিয়েছো? ছবির সাথে কোন মিল আছে? তোমার ঐ কাজিনের চেয়েও কত সুন্দর! 

আমি বুঝতে পারলাম মেয়ে উনারও পছন্দ হয়েছে। এখন অপেক্ষার পালা। মেয়েপক্ষ আমাকে পছন্দ করে কিনা। অবশ্য আমার মত সহজ-সরল, আলা-ভোলা, ভালা পুলারে অপছন্দ করবেই বা কেন? 
grin emoticon
 

কথা যখন সামনের দিকে এগোবে তখন আমি আমার ছোটভাই ও বন্ধুকে সামনে নিয়ে কিভাবে বিয়ে করতে চাই সে সম্পর্কে বিস্তারিত খুলে বললাম। আমার প্রথম কথা ছিল, বউয়ের কাছে মাফ চাওয়ার মধ্যে আমি নাই। মোহরানার সব টাকা বিয়ের সাথে সাথেই পরিশোধ করব। এক টাকাও বাকি রাখব না। তবে আমি এত টাকা দিতে পারব। এর বেশি হলে আমার জন্য সমস্যা হয়ে যাবে। বললাম যদি বিয়ে এখানেই হয় তবে বিয়ের অনুষ্ঠান বলতে যা বোঝায় এমন কিছু এখানে হবে না। কোন গায়ে হলুদ এখানে হবে না। বরযাত্রীর বিশাল বহর নিয়ে মেয়ের বাপের টাকাও নষ্ট হতে দেব না। শুধু চাচা-মামাদের সাথে নিয়ে যাব। ৩০ জনের বেশি লোক যাবে না। আর আমার প্ল্যান হল, কোন এক শুক্রবার জুমার নামায ঐ এলাকার কোন মসজিদের পড়ব এবং নামাযের পর সেখানেই বিয়ের কাজ শেষ করা হবে। আমার খোলাখুলি কথা বলার কারণে তারা পাত্রী পক্ষের সাথে কথা বলার সময় এই ব্যাপারগুলো খুলে বলতে পেরেছেন। তারাও এই ব্যাপারগুলোতে আপত্তি করেন নি। 

আমার ইচ্ছে ছিল পাত্রীপক্ষ আমাদের জন্য যে অনুষ্ঠান করবে তার খরচও আমি দেব। কিন্তু সেটা আর সম্ভবপর হয়নি। এই কথাটা বলাই হয় নি। বলতে সাহস পাই নি। তারপরও যেভাবে হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ। বিয়ের দিন ভোরে বাসায় পৌছাই। ওরা নাকি আমার জন্য হলুদ বেটে রেখেছিল। কিন্তু ভোরে পৌছাবার কারনে তাদের সেই স্বাধ আর পূরণ হয় নি। 

সবকিছু মোটামুটি যেভাবে চেয়েছি সেভাবেই হয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ! আমার গেটআপও অসাধারণ কিছু ছিল না। পৌছার পর আমি যে জামাই এটা কেউই বুঝতে পারে নি। ঐপক্ষের যারা আমাকে আগে দেখেনি তারা “জামাই কোনটা? জামাই কোনটা?” বলে ফিসফিসানি করছিল। নামাযের ওয়াক্ত ছিল বলে মাথায় পাগড়িও ছিল না। আর মুখে রুমাল দিলে ঘুড়ে বেড়ানোর মত মানুষ কখনই ছিলাম না। কনফিউশন হওয়াই স্বাভাবিক। ১০-১৫ মিনিটেই বিয়ে পড়ানো হয়ে গেল। বিয়ে পড়ানোর পর খাওয়া দাওয়া করলাম। ঐতিহ্যবাহী ‘সাগর আনা’ বিশাল প্লেটে করে সামনে হাজির করা হল। যারা সাগর আনা চিনেন না তাদের জন্য নিরবতা। আমিও চিনতাম না। বিয়ের পর অনেক কিছুর মত ছাগুরানাও চিনলাম! 

এখন মেয়েকে উঠিয়ে আনতে যেতে হবে। বরযাত্রীর মধ্যে একটা ব-ল-দ ছিল। সে আমার বউ না দেখে যাবে না। আমার ইচ্ছে ছিল শুধু বরের গাড়ী যাবে বাড়ীতে। ঐ বলদে আগেই গাড়ীতে উঠে বসে আছে। মনে মনে বলি, হ্লারবাই, আমার বউ আমি দেখমু। তুই দেখতি ক্রে? আমি কি তর বউ দেখতে উষ্ঠা খাইয়া পড়ি? বিয়াডা শেষ হোক, তারপর তরে বুঝাইতাছি। বেদ্দপের বেদ্দপ কুনহানকার! 

ফেরার পথে আমি আর উনি গাড়ীতে। ড্রাইভারও আছে অবশ্য। টুকটাক কথা বলছি। হাতটা কি ধরব? ধরি তাহলে... না থাক। কি মনে করবে কে জানে! আমার বউয়ের হাত আমি ধরব না? মনে করলে করবে! 

উনার হাতের উপর হাত রাখলাম। ধরলাম হাত। উনিও ধরলেন। পরে শুনলাম অন্যকেউ হলে নাকি আরো আগেই হাত ধরত। 
unsure emoticon
 আমি এত ব্যাকডেটেড কেন? যাক, ব্যাকডেটেড থেকে যদি ভাল কিছু হয় তাহলে ব্যাকডেটেডই ভাল। 

বাসায় ফেরার পর বাসায় ঢুকতে দেয় না। কিসের কুলা, দুর্বা নিয়া আসছে। মেজাজটা খারাপ হয়ে গেল। বিল্ডিংয়ের মহিলারা জড়ো হয়ে গেছে। তাদের সামনে সিঙ্ক্রিয়েট করলাম না। দাঁতে দাঁতে চেপে রইলাম। আজাইরা কাজ-কর্মের পর ঘরে ঢুকলাম। বোন নিয়ে আসল মোবাইল। ফটো তুলবে। কাটা কাটা স্বরে মানা করলাম। আমার কথায় তার মুখটা কালো হয়ে গেলেও ছবি তুলেনি আর। এরপর কিছুক্ষন আগের ফালতু কাজের জন্যও রাগ করে দুইটা কথা বললাম। এশার নামায হয় নি। নামাযের জন্য বেড়িয়ে এলাম। সবাই ভাবল রাগ করে বেড়িয়ে গিয়েছি! নামায পড়েই আবার ফিরে আসলাম।

আগের সারারাত জার্নি করেছি। তার আগের দু'দিন নাইট ডিউটি করেছি। সারাদিন বিয়ের ধকল। শরীর ভেঙে আসছে। ঢুলু ঢুলু চোখে রাতের খাবারের জন্য অপেক্ষা করছি। 

বিয়ের মাসখানেক পর ওলীমার আয়োজন করা হল। তখন বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন সবাইকে দাওয়াত দিয়ে একবেলা খাইয়ে দিলাম। তাও খুব বেশী মানুষ হয় নি। ১৫০ জনের মত ছিল। কাকাদের মধ্যে কেউ কেউ গ্রামের অন্যকাউকে দাওয়াত দেইনি বলে একটু গাইগুই করেছিলেন। আমি পাত্তা দেই নি। 

এতকিছু লেখার কারন হল, ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়। ছেলে যদি সাধারনভাবে বিয়ে করতে চায় তাহলে অনেক অনৈসলামিক কাজ থেকে বিরত থাকতে পারে। ছেলের দৃঢ়তাই আসল কথা। ছেলে যদি বলে যে, আমি যৌতুক এক পয়সাও নিব না, তাহলে পাত্রের বাপেরও সাধ্য নেই পাত্রীপক্ষের কাছ থেকে কোন টাকা আদায় করে। ছেলে যদি বলে যে, আমার বিয়েতে বরযাত্রী হবে ৩০ জন। তাহলে সেটাও সম্ভব। ইচ্ছাটাই আসল। 

সুন্দরী, উচ্চশিক্ষিত, উচ্চতা ৫’৪’’ ইত্যাদি ইত্যাদি বলে মেয়ে পাওয়া যায়। কিন্তু পাত্রী পাওয়া খুব কঠিন। আপনি এই ব্যাপারে ছাড় দিন। আর অন্যান্য ‘অনাচার’গুলোতে চেপে ধরুন। গায়ে হলুদের অরাজকতা বন্ধ করুন। বরযাত্রীর নামে মেয়ের বাপের উপর অত্যাচার বন্ধ করুন। যৌতুকের মত কঠিন অন্যায়ের পথ থেকে নিজে বাঁচুন। নিজের অভিভাবকেও বাঁচান।

পিতা-মাতার বাধ্যগত হওয়া সন্তানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই বলে কোন অনৈসলামিক বিষয়ে তাদের বাধ্য হওয়া যাবে না। বয়স ৩০ হয়ে গিয়েছে, যোগ্যতাসম্পন্ন, তবুও বাবা-মা বিয়ের নাম-গন্ধ তুলছেন না। আপনি নিজেই তুলুন। বড় ভাই-বোন থাকলেও তুলুন। আপনার আমলনামা আপনার বড় ভাই-বোন, বাবা-মাকে দেওয়া হবে না। তারপরও তারা বিয়েতে সম্মত না হলে নিজেই বিয়ে করে ফেলুন। সমাজের দিকে তাকিয়ে থাকবেন না। সবসময় মনে রাখবেন, টাকা থাকলে সমাজ আপনার দিকে থাকবে। যখন নিঃস্ব অবস্থায় থাকবেন সমাজ আপনার দিকে থুথুও ছিটাবে না। কাজেই সমাজের চিন্তা করে লাভ নেই। 

সমাজের কালচার ভেঙে ফেলুন, পরিবারের কালচাল ভেঙে ফেলুন, এলাকাভিত্তিক কালচার ভেঙে ফেলুন। ইসলামি কালচার ধারণ করুন। অবশ্যই আল্লাহ আমাদের সহায় হবেন। আর স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা যার সহায় হবেন তার কি অন্যকিছুর প্রয়োজন আছে? নেই...

জোকসের পিছনের ঘটনা


জোকস বলার আগে জোকসের কাহিনী বলে নেই একটু। বড় ভাই জোকসের একটা পেইজ চালানোর দায়িত্ব দিয়েছিলেন। উনার পেইজের লাইক সংখ্যা তখনকার দিনের কথা ভাবলে কম ছিল না। পঞ্চাশ-ষাট হাজার মানুষের লাইক ছিল পেইজটিতে। আমার কাছে মনে হয়েছে লাইকারদের মধ্যে প্রচুর ভারতীয় ছিলেন। 

জোকস পেইজের এডমিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে যেয়ে সবচেয়ে বড় সমস্যা যেটা ফেস করেছি তা হল, নির্মল বিনোদন মূলক কিছু খুজে বের করা। মানুষকে হাসানো অনেক কঠিন একটা কাজ। অনলাইনে বাংলা-ইংরেজী মিলিয়ে প্রচুর জোকস আছে। আছে কার্টুন। পড়ি, দেখি। কিন্তু হাসি আসে না। আমার নিজেরই যে জোকস পড়ে হাসি আসে না ঐ জোকস দিয়ে কিভাবে অন্যকে হাসাবো? এই চিন্তা করে প্রচলিত অনেক জোকস পোস্ট করতে পারি না। তাছাড়া আমার পলিসি ছিল চুলকানীমূলক কোন জোকস দিব না। আমার বিবেচনায় যদি এক্সেপশনাল না হয়েছে তাহলে এডাল্ট কোন জোকস পোস্ট করিনি। 

অফিসের কলিগদের কাছে শোনা গল্পগুলো নিজের মত করে সাজিয়ে পোস্ট দিতাম। ইনবক্সে অনেকে পোস্ট দিত। দেয়ার মত হলে তাদেরগুলো কার্টেসী সহ দিতাম। নিজের ঘিলু ব্যবহার করে জোকস বা কার্টুন বানানোর মত ট্যালেন্ট আমি কখনই ছিলাম না। কাজেই জোকসের কিছু বই পত্রও কিনে নিলাম। কিন্তু সমস্যা একটাই। জোকস পড়ি, হাসি আসে না। পুরো বই হয়ত পড়ে শেষ করে ফেলেছি কিন্তু ঠোটের কোণা বাঁকা হয় না। দু'একটা ব্যতিক্রমতো আছেই। 

তাছাড়া জোকস পোস্টের বড় সমস্যা হল, পাঠক জোকস বুঝতে পারে না। মাসুদ রানার কোন এক বইয়ে কাজী আনোয়ার হোসেনের একটা চুটকি ছিল এরকমঃ

এক ইংলিশ ভদ্রলোক এক স্প্যানিশ রেস্তোঁরায় খেতে গেলে। রেস্তোঁরার ম্যানেজার তাকে দেখে এগিয়ে এসে বিনয়ের সাথে বললেন, 

"বন আপতিত!" [স্বাগতম বা এই জাতীয় কিছু হবে অর্থটা]

ইংরেজ ভদ্রলোক স্প্যানিশ কিছুই বোঝেন না। তিনি ভাবলেন, প্রথম কারো সাথে দেখা হলে নিজের পরিচয় দেয়া একটা ভদ্রতা। তাই তিনি হাত বাড়িয়ে জবাব দিলেন, 

"রয় ডিকসন।" 

ম্যানেজার আর কিছু না বলে তাকে টেবিল দেখিয়ে দিলেন। পরেরদিন আবারো যখন রেস্তোঁরায় যাবার পর ম্যানেজার তাকে দেখে বলে উঠলেন,

"বন আপতিত!" 

ইংরেজ ভদ্রলোক এবার একটু অবাক হলেন। তাহলে কি প্রতিদিন নিজের পরিচয় দিতে হবে নাকি? তিনি একটু মাথা ঝাকিয়ে বললেন,

"রয় ডিকসন।" 

এই ঘটনা ৩-৪ বার ঘটার পর ইংরেজ ভদ্রলোকের মনে একটু খটকা লাগল, ব্যাপারটা কি? প্রতিদিন পরিচয় দিতে হয় কেন?

ভদ্রলোক এক সন্ধ্যায় তার এক স্প্যানিশ বন্ধুকে ফোন করে ঘটনাটা বললেন। স্প্যানিশ বন্ধুতো হেসেই খুন। "বন আপতিত" মানে জানার পর ভদ্রলোক একটা লজ্জাই পেলেন। 

পরেরদিন তিনি ঐ রেস্তোঁরায় গেলেন ডিনারে। এবার তিনি নিজেই ম্যানেজারের দিকে এগিয়ে গিয়ে বললেন,

"বন আপতিত।" 

মুচকি হেসে ম্যানেজার জবাব দিলেন, 

"রয় ডিকসন।" 

এই জোকসটা একদিন পেইজে দিয়েছিলাম। গালি-ঝাড়ি দেয়ার পর অনেকেরই প্রশ্ন ছিল এখানে টুইস্টা কোথায়? আমি উত্তর দেই নি। কারন জোকস পড়ে কেউ বুজতে না পারলে তাকে বোঝানো কঠিন।

এছাড়ারাও খেয়াল রাখতে হয় এই জোকসটা পড়ে আবার কেউ ধর্ম খুজে পাবে নাতো? মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আঘাত হানার মত কেউ মনে করবে নাতো? মেয়েদের ছোট করা হচ্ছে কি? মোট কথা ফিল্টারের শেষ নেই। এত ফিল্টার করতে গেলে শেষে জোকসই খুজে পাওয়া যায় না। 

বাস্তব জীবনের একটা ঘটনা শেয়ার করেছিলাম অনেক আগে। ঈদের নামায পড়তে গিয়েছি ঈদগাহে। আমার এক বন্ধু তার ছোটভাই (পিচ্চি) ও তার বাবাকে নিয়ে আসছে নামায পড়তে। আমরা একসাথেই বসলাম। যথারীতি নামায শুরু হল, প্রথম রাকাতে যখন সেজদায় গেলাম তখন ঐ পিচ্চি হঠাৎ করে বলে উঠল,

"কান টানলে মাথা আসে, মাথা টানলে কান!" 

এই কথা শুনে নামাযে স্থির থাকা মুশকিল। হাসির দমকে দমকে শরীর কেঁপে উঠেছিল। 

এই পোস্ট টাইমলাইনে দেয়ার পর আমার কিছু দরদী ভাই বললেন, "এখানে নাকি নামাযের অবমাননা হয়েছে! জাহেলী যুগে কাফেররা এভাবেই নামায নিয়ে হাসি-তামাশায় মত্ত থাকত।"

প্রয়াত হুমায়ূন আহমেদ (সম্ভবত) মানুষের এই দিকটা কথা চিন্তা করে মূল্যবান একটা কথা বলেছিলেন সম্ভবত এলেবেলে তে। "কেউ যখন সিরিয়াস কিছু শোনে তখন তা হেসে উড়িয়ে দেয়। আর যখন কোন রসিকতা শোনে তখন গম্ভীরমুখে ভাবতে থাকে, এটা কি রসিকতা করার কিছু? এখানে রসিকতার কি আছে?" 

[পুরোপুরি ডায়লগ মুখস্থ নেই। এমনি কিছু একটা হবে।]

আজকে বসে রিলাক্সেশন করছিলাম। চোখের পাতা বন্ধ। কিছুক্ষন পর আলোর তারতম্যতে বুঝতে পারলাম, আমার কোন এক কলিগ আমার মুখের সামনে হাত নাড়ছেন। কেউ ঘুমিয়ে আছে কিনা পরীক্ষা করতে আমরা যেভাবে হাত নাড়ি। মুহুর্তে মাথায় আগুন ধরে গেল। ভাবলাম আরেকবার দেখি ওমন করে কিনা। সাথে সাথেই আবার আলোর তারতম্য। আস্তে করে চোখটা খুললাম। তারপর ধারালো যে বানগুলো আমার মুখ থেকে ছুটল তাতে তার হাসি নিভে গেল। বললেন, 'রসিকতা' করলেন। মুখ থেকে বের হতে দেরি, আমার জবাব দিতে দেরি নেই। 

সমবয়সী হলে আরো কঠিন কথা বলতাম। কিছুদিন পর মেয়ের বিয়ে দেবেন, এমন কলিগকে সবকিছু বলা যায় না। শহীদ আল বোখারী রিলাক্সেশনের এক পর্যায়ে বলেন, "কেউ আপনাকে ডেকে ফেললে বিরক্ত হবেন না বা মনে মনে রাগ করবেন না।" আজকে উনার কথা শুনি নি। ঝেড়ে দিয়েছি। অনিচ্ছাকৃত অপরাধ আর ইচ্ছাকৃত ফাজলামীর মধ্যে বিস্তর তফাৎ।

কোন রসিকতা কখন, কোথায়, কার সাথে করতে হবে এই গুরুত্বপূর্ণ জ্ঞান অনেকেরই মাঝে অনুপস্থিত। কজ কমন সেন্স ইজ ভেরি আনকমন!

বাজাজ মোটর সাইকেল


Bajaj এর মোটরসাইকেলে কে কে চড়েন? ১৯৭১ সালের ইন্দো-পাক যুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আমাদের সকলের Bajaj V মোটরসাইকেল কেনা উচিত। পেটে ভাত থাক বা না থাক Bajaj V চাই। 

বিয়ে করতে গেলে পাত্রী পক্ষের কাছে যৌতুক চাই Bajaj V. 

প্রমোশন হয়েছে? গাড়ির বদলে কোম্পানির কাছে চাই Bajaj V. 

বড় ভাই বিদেশ থেকে মোটরসাইকেল কিনতে টাকা দিয়েছে? তরুণদের সেরা পছন্দ Bajaj V. 

প্রতিদিন যানজটে বাসে বসে অতিষ্ঠ? আপনার আজই প্রয়োজন Bajaj V. 

আপনি কি মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ? আজকেই বসকে বলুন Bajaj V না হলে Sell বাড়বে না। 

আপনি কি চান বয়ফ্রেন্ডের পিঠে হেলান দিয়ে ঘুরে বেড়াতে? এক্ষুনি তাকে Bajaj V কিনতে চাপ দিন। 

নতুন দিনের স্লোগান হোক, "Bajaj V থাকলে পরে, শান্তি আসবে ঘরে ঘরে!"

এরপরও দাদাদের ঋণ শোধ হবে না। বড়ই দূঃখের বিষয়!