Featured Post

I SAID NO TO QUANTUM METHOD

পূর্বে পোস্ট আকারে প্রকাশিত। কারও সাথে ঝগড়া করার জন্য এটা দেইনি। নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করলাম। কেউ মানতে না পারলে আমার কিছু করার নেই।  আ...

Wednesday, March 8, 2017

সিরিয়াস ফান!

ফানকে যে আমি সিরিয়াসলি নিব তা বোধহয় রবি বুঝতে পারেনি। পারুক বা না-ই পারুক রবিকে আমি ধন্যবাদ জানাই আজীবন ইন্টারনেট দেয়ার কারনে। মেসেজটা পেয়েছিলাম নভেম্বর কি ডিসেম্বরে। ৯৯ টাকা+করসমুহে ৩৫০ এম বি। মেয়াদ সারাজীবন। পাবার পরেই ভাবলাম এটাইতো আমার দরকার। মুঠোফোনে ব্যবহারের জন্য একেবারে পারফেক্ট হবে। শুধুমাত্র ফেসবুক ব্যবহার করব, তাও ফ্রী ভার্সন। দেখি এমবি কিভাবে শেষ হয়!
নিলাম। নেয়ার পর আজীবনের রহস্য ভেদ হল। আজীবন মানে যে ২০২৭ সাল পর্যন্ত তা রবির বদৌলতে জানতে পারলাম। যাক, তাই বা কম কিসে? ১০ বছরে ৩৫০ এমবি হলে বছরে ৩৫ এমবি। মাসে ৩ প্রায় তিন এমবির মধ্যে সারতে হবে। অপেরাতে ফ্রী ফেসবুকতো চালাই-ই, উপরন্তু সেটিংস থেকে Extreme savings চালু করে দিলাম। এখন ফেসবুকে কোন ছবিই দেখা যায় না, ব্রাউজারের বিজ্ঞাপণ লোড হয় না। কাজের কাজ যা হয়েছে শুধু টেক্সট ভার্সন হওয়ায় স্পীড বেড়েছে।
হোমফিডের ছবিগুলো না দেখেই লাইক মারি। গুরুত্বপূর্ণ (অপজিট জেন্ডার)কেউ দিলে অবশ্য সেটিং পরিবর্তন করে দেখি। অন্যব্রাউজার গুলোতে এই ফিচারের ব্যবহার না জানায় এবং মাঝে মাঝে অন্যান্য সাইট(cse,dse etc) ব্রাউজ করার কারনে এমবি প্রায় শেষের দিকে। তাও প্রায় ৩ মাস পার করে দিলাম। যেখানে হয়ত আমার দ্বিগুণ টাকা খরচ হত।
আপনারাও ট্রাই করে দেখতে পারেন। Dial *123*99# for activation and *8444*88# for balance.
ধন্যবাদ।

৪৯ কোটি গুনের যথার্থতা!

কয়েকদিন আগে একটি ছবি দিয়ে জানতে চেয়েছিলাম যে, এই ছবিতে সমস্যা কি? ছবিতে যে প্রশ্নটি ছিল সেটি হল, "মক্কা শরীফ ও মদীনা শরীফ থেকে লোকজন কেন বিশ্ব এজতেমায় শরীক হয়?" এই প্রশ্নের উত্তরে যা বলা হয়েছে সেটা নিয়েই সমস্যার উৎপত্তি। কারো আগ্রহ থাকলে ছবিটা দেখে নিতে পারেন।
প্রশ্ন ও উত্তর যেই বইয়ে দেয়া হয়েছে এই বইটার সাথে আমি পরিচিত নই। তাবলীগে যেসব বই সাধারনত পড়া হয় যেমন, ফাজায়েলে আমাল, মুন্তাখাব হাদীস, ফাজায়েলে হাজ্ব, হেকায়েতে সাহাবা ইত্যাদি বইয়ে এভাবে প্রশ্নোত্তর নেই। কাজেই কে এই বই, কার অনুমতিতে ছাপিয়েছে সে সম্পর্কে ধারনা নেই। আজ থেকে ১০ বছর আগেই কাকরাইলে দেখেছি তাবলীগ নিয়ে চটি বইয়ের অভাব নেই। যেগুলো মুরুব্বীরা ক্রয় করতে নিরুৎসাহিত করে থাকেন। এই বইটাও তেমন কিছু হতে পারে।
এবার আসি উত্তর প্রসঙ্গে। তাবলীগে যারা সময় দিয়েছে তারা এই কথাগুলোর সাথে পরিচিত এবং এতে কোন দোষ খুজে বেড়ায় না। কারন এই কথাগুলো অনলাইনে যেভাবে আলোচনা হচ্ছে সে সেন্সে বলা হয় না। আহলে হক্ব মিডিয়ার এপসের সাহায্য নেই,
"হাদীসঃ হযরত খুরাইম বিন ফাতেক রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় কোন কিছু খরচ করে তা তার আমলনামায় ৭শত গুন হিসেবে লেখা হয়।
সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং-১৬২৫
সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪৬৪৭
সুনানে নাসায়ী কুবরা, হাদীস নং-৪৩৯৫
মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৯০৩৬
মুসনাদে তায়ালিসী, হাদীস নং-২২৭
মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-১৯৭৭০
শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৩২৯৪
এখানে লক্ষ্য করুন। একটাকা খরচ করলে এখানে সাত শত গুণ সওয়াব লেখার কথা এসেছে। এবার দ্বিতীয় হাদীসটি দেখুন-
হাদীসঃ হযরত সাহল বিন মুয়াজ রাঃ তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-আল্লাহর রাস্তায় আল্লাহকে স্মরণ করার সওয়াব আল্লাহর রাস্তায় খরচের সওয়াবের তুলনায় ৭ লক্ষ গুণ বৃদ্ধি করে দেয়া হয়।
অন্য বর্ণনায় এসেছে সাত লক্ষ গুণ বৃদ্ধি করে দেয়া হয়।
মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৫৬১৩
আল মু'জামুল কাবীর, হাদীস নং-৪০৫
মুসনাদুস সাহাবা ফি কুতুবিত তিসআ, হাদীস নং-১৫১৬
কানযুল উম্মাল ফি সুনানিল আকওয়াল ওয়াল আফআল, হাদীস নং-১০৮৭৯
জামেউল আহাদীস, হাদীস নং-৬৮৫৮
এবার উভয় হাদীসকে একত্র করুন। প্রথম হাদীস দ্বারা জানতে পারলাম। এক টাকা খরচে সওয়াব পাওয়া যায় ৭ শত গুন। আর দ্বিতীয় হাদীসে জানতে পারলাম খরচের তুলনায় অন্য আমলে পাওয়া যায় ৭ লক্ষ্য সওয়াব বেশি। এর মানে হল, একটি আমল করলে প্রতি আমলে খরচ করলে যত পাওয়া যেত তারও সাত লক্ষ্য গুণ বেশি সওয়াব।
তাই এবার ৭ শতকে ৭ লক্ষ্য দিয়ে গুণ দিন।
৭০০*৭,০০,০০০=৪৯,০০,০০,০০০।
তাহলে কি বোঝা গেল? আল্লাহর রাস্তায় একটি আমল করলে করা উনপঞ্চাশ কোটি আমল করার সওয়াবের সমতূল্য।
উল্লেখিত হাদীস দুটি সনদ হিসেবে দুর্বল। কিন্তু জাল নয়। আর সকল গ্রহণযোগ্য মুহাদ্দিসগণ একমত দুর্বল হাদীস ফযীলতের ক্ষেত্রে গ্রহনযোগ্য। তাই এ ফযীলত বলতে কোন সমস্যা নেই। জাযাকাল্লাহ।"
প্রথমত, উল্লেখিত বইয়ে উত্তরের ক্ষেত্রে বায়তুল্লাহ, মদীনা এবং বায়তুল মুকাদ্দাসের মর্যাদার সাথে ইজতেমা মাঠের মর্যাদার তুলনা করা হয় নি। বরং আমলের তুলনা করা হয়েছে। সালাতের সাথে সালাতের। বস্তুত, আল্লাহর রাস্তায় যেকোন আমলের ক্ষেত্রে উল্লেখিত ফযীলত প্রযোজ্য হবে।
দ্বিতীয়ত, আগেই বলা হয়েছে দুর্বল হাদীস ফযীলত বর্ণনার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। প্রসংগত, মাসয়ালা-মাসায়েলের জন্য সহীহ হাদীস জরুরী। নামায পড়লে কি লাভ আর নামায কিভাবে পড়ব-দুটো ভিন্ন বিষয়।
তৃতীয়ত, শুধু মাত্র সালাতের ক্ষেত্রেই নয়। আল্লাহর রাস্তায় যেকোন (জিকির, কুরয়ান তেলাওয়াত, হাজুত পুরা করা, মেহমানদারী, ইকরাম ইত্যাদি) নেক আমল করলে তার সওয়াব ৪৯ কোটিগুন বাড়িয়ে দেয়া হয়-তাবলীগওয়ালা কথাটা এভাবে বলে থাকেন। কাজেই কথাটিকে সালাতের সাথে খাস করা ঠিক হবে না।
চতুর্থত, কোথাও এই দাবি করা হয় নি যে। ইজতেমার ময়দায় মক্কা,মদীনা, বায়তুল মুকাদ্দাসের তুলনায় অধিক মর্যাদাবান। মক্কা,মদীনায় না যেয়ে ইজতেমা ময়দানে যাওয়া উচিত। যেটা দাবি করা হয়নি সেটা দাবি করার হয়েছে বুঝা বা বুঝাতে চাওয়া অন্যায়।
পঞ্চমত, ইজতেমা ময়দানে কোন গানবাজনা বা আমলা-আক্বিদাহ বিধ্বংসী কিছু হয় না। আল্লাহ আর আল্লাহর রাসূলের কথাই আলোচনা হয়। কাজেই এর দ্বারা আল্লাহমূখী হবার প্রেরণা জাগ্রত হবে সেটাইতো স্বাভাবিক। নয় কি?
নোটঃ আহলে মিডিয়ার এপসের যে রেফারেন্স আমি দিয়েছি সেগুলো ক্রস চেক করিনি। সব কিতাব আমার কাছে নেই। কেউ করতে চাইলে নিজ দায়িত্বে করবেন।
আর সুবিধার জন্য কমেন্টে আগের পোস্টের লিংক দেয়া হল।

মেমোরী কার্ড কিনতে চান? আগেই জেনে নিন!

বর্তমানে প্রায় সব ফোনেই বাড়তি স্টোরেজের জন্য আমরা মেমোরী কার্ড ব্যবহার করে থাকি। ফোন ছাড়াও ক্যামেরা, ট্যাবে মেমোরী কার্ড ব্যবহার করতে হয়। কার্ড কেনার সময় যে সমস্যার সম্মুখিন হই তাহল কোনটা কিনব? কিভাবে বুঝব যে, এই মেমোরী কার্ডটা ভাল হবে?
গুগলে একটু ঘোরাফেরা করতেই উত্তর পেয়ে গেলাম। আপনাদেরও হয়ত কাজে লাগবে ভেবে লিখছি।
প্রশ্নঃ মেমোরী কার্ড কি লাগেই?
উত্তরঃ হ্যা, লাগেই। অনেক ফোনে মেমোরী কার্ড ঢুকানোর মত ব্যবস্থা থাকে না। আমার মতে এই ব্যবস্থাটা ঠিক ফ্রেন্ডলি নয়। কাজেই ফোন কেনার আগে মেমোরী কার্ডস্লট আছে কি নেই সেটাও বিবেচনা করা দরকার। আর কেউ জেনেশুনে মেমোরী কার্ডস্লট বিহীন ফোন কিনলেতো আর এই প্রশ্ন আসে না।
প্রশ্নঃ সব কার্ড কি একই?
উত্তরঃ জ্বী না। সব কার্ড একই নয়। তবে বর্তমানে বেশিরভাগ ডিভাইসেই micro SD (secure digital) কার্ড ব্যবহার করা হয়। এই কার্ডও দু'ধরনের। কার্ডের গায়ে অথবা কার্ডের কভারের গায়ে খেয়াল করলে দেখা যায় লেখা আছে SDHC অথবা SDXC.
SDHC = Secure Digital High Capacity
SDXC = Secure Digital Extended Capacity

SDHC কার্ডগুলোর সর্বোচ্চ ৩২ জিগাবাইট পর্যন্ত তথ্য ধারন করতে পারে। পক্ষান্তরে SDXC কার্ডগুলো ৬৪ জিগাবাইট থেকে উচ্চতর ধারণক্ষমতাসম্পন্ন। একারনেই অনেক সময় দেখা যায়, কমদামী (Lower End Devices) ফোন/ট্যাব/ক্যামেরায় SDXC কার্ড সাপোর্ট করে না। আপনার ডিভাইসের উপর নির্ভর করে আপনার কি ধরনের মেমোরী কার্ড প্রয়োজন।
প্রশ্নঃ কার্ডের স্পীড কত কিভাবে বুঝব?
উত্তরঃ স্পীড বলতে নিশ্চয়ই ডাটা ট্রান্সফার রেট বোঝাতে চাইছেন। এটাও বোঝার উপায় আছে। মেমোরী কার্ডের গায়ে বা কভারে দেখবেন লেখা আছে Class 2 অথবা Class 6 অথবা অন্য কোন সংখ্যা। ক্লাসের পরে যে সংখ্যা থাকবে সেটাই হল ঐ মেমোরী কার্ডের সর্বনিম্ন ডাটা ট্রান্সফার রেট। যেমন, Class 6 মেমোরী কার্ডের ডাটা ট্রান্সফার রেট হল 6MP/s.
অনেক সময় কার্ডের গায়ে Class নাম্বারের পরিবর্তে UHS-1 অথবা UHS-3 লেখা থাকতে পারে। স্মার্টফোনে UHS-1 টাইপ কার্ডের জন্য সর্বনিম্ন 10MB/s এবং UHS-3 কার্ডের জন্য সর্বনিম্ন 30 MB/s ডাটা ট্রান্সফার রেট পাওয়া যেতে পারে। যদিও UHS টাইপের কার্ডের ক্যাপাসিটি অনেক বেশি (প্রায় 312MB/s) তবুও স্মার্টফোনের সীমাবদ্ধতার কারনে স্পীড কম পাওয়া যায়।
প্রশ্নঃ মেমোরী কার্ডের উপর কি ফোনের স্পীড নির্ভর করে?
উত্তরঃ জ্বী। কারন আপনার ফোনে যদি Class নাম্বার বেশি এমন কার্ড থাকে তবে যেকোন ছবি, ভিডিও, ডকুমেন্ট দ্রুত সেভ হবে। কার্ড লোড এবং আনলোডে সময় কম লাগবে। ফোন দ্রুত ডাটা Read এবং Write করতে পারবে।
তাহলে বোঝা গেল, মেমোরী কার্ড কেনার আগে কিছু কিছু বিষয় মাথায় রাখা উচিত। আর হ্যা, দামের ব্যাপারে ব্রান্ডের মেমোরী কার্ডগুলোর সাথে তুলনা করা উচিত। যদি দেখা যায় যে, কোন অখ্যাত কোম্পানি একই স্টোরেজের মেমোরী কার্ড SanDisk, Samsung, Kingstone ইত্যাদি স্বনামধন্য কোম্পানি থেকে অনেক কমে দিচ্ছে তাহলে গুণগতমান সম্পর্কে সন্দেহ করা উচিত। বুঝে শুনে কেনা উচিত।
ধন্যবাদ। আজকে এই পর্যন্তই।
androidpit ওয়েবসাইট অবলম্বনে।

গোপন কথা!

দুই বন্ধু একদিন কি কারনে ঝগড়া লেগে গেল। ঝগড়ার সিরিয়াস পর্যায়ে একবন্ধু আরেক বন্ধুকে খুনই করে ফেলল। তখন বৃষ্টি হচ্ছিল। মারা যাবার সময় বন্ধুটি বলল, "তুই আমাকে খুন করলি? তুই বাঁচতে পারবি না।"
দ্বিতীয় বন্ধু বলল, "আমি যে তোকে মেরেছি, কে সাক্ষী দিবে?"
প্রথম বন্ধু বলল, "দেখিস, বৃষ্টি সাক্ষী দিবে।"
বহুকাল পরে বন্ধুটি জানালার পাশে বসে বৃষ্টি দেখছিল। হঠাৎ করে তার পুরনো বন্ধুর কথা মনে হতেই মুচকি হেসে উঠল। দূর থেকে তার বউ ব্যাপারটা লক্ষ করল।
"এই তুমি হাসলা কেন?"
"না, কিছু না। এমনি..."
"এমনি এমনি কেউ হাসে? বল কেন হাসছো?"
বউয়ের পীড়াপীড়ির কাছে হার মেনে একসময় আসল কথা খুলে বলল বন্ধুটি। শুনে বউ আর কিছু বলল না।
এর কিছুদিন পর জামাই-বউ ঝগড়া লেগে গেল। জামাই রেগে বউকে মারধর করল। বউ কাদতে কাদতে ঐ বন্ধুর বাড়িতে গিয়ে তার বউকে গিয়ে সব কথা ফাঁস করে দিল। এরপর আর কি, তাকে ফাসি কাষ্ঠে ঝুলতে হল।
গোপন কথা গোপন রাখাই ভাল। বউয়ের কাছেতো ভুলেও বলা যাবে না।
মেয়ে মাকে বলছে, "আম্মা, আপনাদের জামাইতো বলছে যে, আমার নামে তার বাড়িটা লিখে দিবে।"
"কখন বলছে? ঐ সময় না?"
"হুম। ঐ সময় বলছে..."
"বাদ দে। তর বাপেও আমাকে কত কিছু দিয়ে ফেলছে ঐ সময়।"
পুরুষ মানুষ কত কথাই বলে থাকে!

বাড়াবাড়ি

কিশোর পাশার কথা মনে আছে কারো? হ্যা, তিন গোয়েন্দার কিশোর পাশা। নিজের মেধা আর বুদ্ধি দিয়ে বহু অপরাধীকে ঘোল খাওয়ানো রকিব হাসানের কিশোর পাশা!
এও নিশ্চয়ই মনে আছে যে, কিশোর পাশা একবার রোলস রয়েস গাড়ি জিতেছিল। কিভাবে জিতেছিল সেটাও একটু বলি।
রোলস রয়েস কোম্পানি থেকে একটি ঘোষনা করা করা হয় যে, একটি জারের ভিতর কতগুলো শিমের বিচি আছে বলতে পারলে তাকে রোলস রয়েস গাড়ি দেয়া হবে। বুদ্ধিমান কিশোর পাশা জারের আয়তন ও শিমের বিচির আয়তন মেপে সবচাইতে কাছাকাছি সঠিক উত্তর দিয়ে গাড়িটি জিতে নেয়।
মজার ব্যাপার হল, রোলস রয়েস কোম্পানি গাড়িটির মালিকানা হস্তান্তর করে নি। শুধুমাত্র ৩০ দিনের জন্য দিন-রাত যেকোন সময়ের জন্য ব্যবহার করতে দিয়েছিল। এটাই ছিল প্রতিযোগীতার পুরস্কার। যদি পুরস্কার হিসেবে আস্ত গাড়িটাই দিত তাহলে সেটা আর পুরস্কার থাকত না, হত বাড়াবাড়ি।
কাল্পনিক হোক বা অবাস্তব, কোনটা পুরস্কার আর কোনটা বাড়াবাড়ি সেটা বোঝার মত বুদ্ধি রোলস রয়েস কোম্পানির থাকলেও আমাদের নেই। আর পুরস্কার বা উপহার হিসেবে যে, নিজের মালিকানাধীন বিষয়ই দেয়া যায় এই ব্যাপারটাও অনেক সময় আমাদের খেয়াল থাকে না। মোবাইল আপনার, আর আমি যদি আপনার মোবাইলটা আমার কোন বন্ধুকে পুরস্কার/উপহার হিসেবে দেই তাহলে সেটা কেমন হয় সহজেই অনুমেয়।
মেহেদী হাসান মিরাজের বাড়ি খুলনায়। বাবা রেন্ট-এ-কারের মাইক্রোবাস চালক। বোন কলেজ স্টুডেন্ট। মিরাজ নিজেও এই বছর এইচ এস সি পাস করেছে। বাড়িতে দুটি ঘর, যার মধ্যে একটি মিরাজের বিভিন্ন মেডেল দিয়ে ভর্তি। বাড়িতে প্রবেশের রাস্তা এতটাই সরু যে ঐ রাস্তায় রিক্সা চলাচল করতে পারে না।
পরিস্কার বোঝা দরকার যে, মিরাজের ফ্যামিলি ছিন্নমূল নয়। তার পরিবারে টানাপোড়ন থাকতে পারে কিন্তু এমন নয় যে, দু'বেলা অন্নসংস্থান হয় না।
কিছুদিন আগেই অনুর্ধ ১৯ বিশ্বকাপ দেখেছি আমরা। মিরাজ ছিলেন সেই দলের অধিনায়ক। শান্ত, জাকির হোসনদের মত মিরাজের পারফর্মমেন্স ছিল চোখ ধাধানো। সম্ভবত অনুর্ধ ১৯ বিশ্বকাপে ভাল খেলার কারনেই মিরাজ শক্তিশালী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলার সুযোগ পায়।
বাংলাদেশের হয়ে খেলতে নেমে প্রথম ম্যাচেই রেকর্ড করা নতুন কিছু নয়। আশরাফুল সর্বকনিষ্ঠ সেঞ্চুরিয়ানদের একজন, আবুল হাসান রাজু ১১ তম ব্যাটসম্যান হিসেবে শতরান করেন। আর আজকে তারা কোথায়? মিরাজ যে, হারিয়ে যাবে না তার কোন নিশ্চয়তা নেই। মমিনুল হকের রেকর্ডও আমরা দেখতে পারি। টেস্টে ব্যাটিং এভারেজ অনেক বেশি অথচ স্ট্রাইক রেটও ভাল। কিন্তু আজকে তার পরিচয় হয়েছে টেস্ট প্লেয়ার হিসেবে।
প্রধানমন্ত্রী টেস্ট সিরিজে মিরাজের পারফর্মেন্সে খুশি হয়ে খুলনার জেলা প্রশাসককে বাড়ি তৈরি করে দিতে বলেছেন। নির্দ্বিধায় করতালি পাওয়া যেত যদি প্রধানমন্ত্রী নিজের পকেটের পয়সা খরচ করে বাড়িটা তৈরি করে দিতেন। নিজের টাকায় জমি কিনে তাতে ইট,বালি, সিমেন্ট ঢালতেন।
জেলা প্রশাসক মৌখিক নির্দেশ পেয়ে জমি দেখছে। লিখিত নির্দেশ পেলেই কাজ শুরু হয়ে যাবে। জেলা প্রশাসক কি নিজের জমি দিবে? নিজের টাকা দিয়ে জমি কিনে দেবে? নিজের বেতনের টাকায় ইট,রড, সিমেন্ট কিনে বাড়ি করবে? উত্তর যদি হ্যা হয়, তাহলেতো কোন কথাই নেই। আর যদি না হয় তাহলে প্রশ্ন উঠে, এটা কি বাড়াবাড়ি হয়ে গেল না? কার টাকা, কার জমি?
মুস্তাফিজুরের বাড়িতে বিদ্যুৎ ছিল না। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে দেয়া হয়েছে। কেউ রা করেনি, কারন ঘরে বিদ্যুৎ থাকবে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু পাকিস্তানকে বাংলাওয়াশ করার পর প্রায় আট কোটি টাকা খেলয়ারদের দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে খেলোয়াড়দের গাড়িও দেয়া হয়েছিল। জাতীয় দলের প্রত্যেক খেলোয়াড়কে অন্তত দুটি করে ফ্ল্যাট দেবার পরিকল্পনাও প্রধানমন্ত্রীর আছে বলে জানা যায়।
পৃথিবীতে আর কোন "পেশা"র "চাকুরীজীবি"দের এমন পুরস্কার দেয়া হয় কিনা আমার জানা নেই। কারো জানা থাকলে শেয়ার করুন।
মিরাজের বাড়ি প্রাপ্তিকে 'ইনকাম' বলার সুযোগ নেই। মিরাজ কি মাসে মাসে বাড়ি পাবে? জাতীয় দলের খেলোয়ারা কি বেতনের সাথে মাসে মাসে গাড়ি, দু'টো করে ফ্ল্যাট পায়?
জবাব চাইবার মত যখন কেউ না থাকে তখনই মানুষ বাড়াবাড়ি করতে পারে। আজকে রাজনৈতিক দলের কোন নগণ্য নেতা/কর্মী যদি আমার/আপনার লুঙ্গি খুলে নিয়ে যায় তখন "লুঙ্গি নিছে তো কি হইছে যন্ত্রতো নিতে পারে নাই" বলা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। তবে হ্যা, ভবিষ্যতে যে যন্ত্রও নিয়ে যাবে না, বা যন্ত্র ব্যবহারের উপর ট্যাক্স বসিয়ে কাউকে "পুরস্কার/উপহার" দেয়া হবে না সেই গ্যারান্টি কিন্তু দেয়া যায় না।
কাজেই ট্যাক্স বসানোর আগেই যন্ত্রের ব্যবহার নিশ্চিত করুন। যন্ত্র খোয়া যাবার আগে বেশি বেশি ব্যবহার করে পুষিয়ে নিন। আফসোস কম হবে। ধন্যবাদ।